প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছে। সবুজ চেক লুঙ্গি ও সবুজ গেঞ্জি পরে হুড়মুড় করে ছাদে উঠে চিলেকোঠার উপর থেকে সোজা ঝাঁপ মেরে পৌঁছে যায় জাম গাছে! রাতের অন্ধকারে দিব্যি লুকিয়ে পড়েছিল ঘন পাতার আড়ালে। কিন্তু পুলিশের জোরালো টর্চের আলো ঠিক পড়বি তো পড় একেবারে মুখের উপর।
কনস্টেবল চেঁচিয়ে উঠেছিলেন, “ওই তো রসিদুল।” বাজখাঁই গলায় বড়বাবু হঙ্কার ছেড়েছিলেন, “নেমে আয় বলছি। নেমে আয় তাড়াতাড়ি।” কিন্তু একাধিক খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত রসিদুল বিশ্বাসও একবগ্গা। এত সহজে সে পুলিশের হাতে ধরা দেবে না। একটা ফন্দি করে সে। এমন ভাব দেখাবে যেন সে নীচে নামছে। তার পর শেষ মুহূর্তে খানিক উঁচু থেকে লাফিয়ে পড়বে নীচে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীর ঘাড়ে। তিনি ভূমিশয্যা নিলে সেই ফাঁকে সে পালাবে।
হালকা চাঁদের আলোয় এক ডাল থেকে অন্য ডালে পা দিয়ে সন্তর্পণে নামতে থাকে রসিদুল। জাম গাছের নীচে তখন উপরের দিকে মুখ তুলে দাঁড়িয়েছিলেন নাকাশিপাড়া থানার এক কনস্টেবল। তখন প্রায় দশ-বারো ফুট বাকি। আচমকা কনস্টেবলকে লক্ষ করে উপর থেকে লাফ দেয় রসিদুল। কিন্তু চৌখশ কনস্টেবল বিপদ আঁচ করে দ্রুত সরে যান। লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে তখন ‘পপাত চ’ রসিদুল। পালানো দূরে থাক, উঠে বসতেই পারছে না সে। কোমরের হাড় ভেঙেছে।
এ দিকে, পুলিশ তখন অভিযুক্তের পরিচর্যা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিছু একটা হয়ে গেলে তাতে আবার আইনি সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা। তাই রসিদুলকে নিজেদের গাড়িতে তুলে পুলিশ কর্মীরা প্রথমে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। পরে রসিদুলকে সেখান থেকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি নাকাশিপাড়ার নাগাদি বাজারে খুন হন হেতাই শেখ নামে এক তৃণমূল নেতা। তদন্তে নেমে পুলিশে সেই খুনের ঘটনায় রসিদুলের যুক্ত থাকার কথা জানতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy