Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

জাতীয় সড়কে গাড়ি দাঁড়ালে ধরবে পুলিশ

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ার পরেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কড়া নজরদারি চলছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে অন্তত এক ডজন মামলা রুজু করেছে বহরমপুর ট্র্যাফিক পুলিশ। ডেপুটি পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) বিকাশ ভাণ্ডারী জানান, মোটর ভেহিক্যালস্ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৫
Share: Save:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ার পরেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কড়া নজরদারি চলছে।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে অন্তত এক ডজন মামলা রুজু করেছে বহরমপুর ট্র্যাফিক পুলিশ। ডেপুটি পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) বিকাশ ভাণ্ডারী জানান, মোটর ভেহিক্যালস্ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। তা ছাড়া, সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু গাড়ির চালককে। এর মধ্যে অনেকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেনি অনেকে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁদের সে সব দেখাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইন মোতাবেক ব্যবস্থা হবে।

নজরদারি চলছে নদিয়াতেও। পাকা রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা এমনিতেই দণ্ডনীয় অপরাধ। মাস পাঁচেক আগেই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মোড়ের মাথায় এবং বিভিন্ন ধাবার সামনে ব্যানার লাগিয়ে প্রচার করেছিল জেলা পুলিশ। কিন্তু ওই পর্যন্তই। জাগুলি থেকে পলাশি পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় সড়কে লরি দাঁড়িয়ে থাকা এখনও নিত্যদিনের ঘটনা।

নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া অবশ্য বলেন, “রাস্তায় ধারে গাড়ি রাখলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।” বহনক্ষমতার তুলনায় বাড়তি মাল বোঝাই করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। লরি মালিকেরাও জানান, পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের তল্লাশির ভয়ে বাড়তি মাল তোলা লরিগুলি বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে যায়। জেলা ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জগদীশ ঘোষ বলেন, “পুলিশের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে আগেই। ওভারলোডিং বন্ধ করলেই এটা কমে যাবে।” তাঁর দাবি, গাড়ি রাখার নির্দিষ্ট জায়গাতেই তা রাখার জন্য সংগঠনের তরফে লরিগুলিকে জানানো হয়েছে।

মুর্শিদাবাদে বিশেষত পঞ্চাননতলা রেলগেটের পূর্বপাড়ে সারি দিয়ে লরি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। দুর্ঘটনাও ঘটে। কিন্তু ১০ থেকে ১২ চাকার লরি দাঁড় করানো বন্ধ হচ্ছে না। এখানে অবশ্য শাসকদলের লরি শ্রমিক সংগঠনের বিরুদ্ধে গা-জোয়ারি করার অভিযোগ রয়েছে। এফসিআই গুদাম থেকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের চাল-গম নিয়ে যাওয়ার সময়েও স্টেশন রোডে সার দিয়ে লরি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। জেলা তৃণমূল ট্রাক ড্রাইভার অ্যান্ড হেল্পার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক তাপস বিশ্বাস অবশ্য দাবি করেন, ‘‘শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব আছে। তাই তাঁরা জাতীয় সড়কে লরি দাঁড় করিয়ে রেখে চলে যান। তবে লরির সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যাওয়ায় জায়গার অভাবও রয়েছে।’’

নদিয়ায় গড়ে রোজ দু’টি দূর্ঘটনা ঘটে, এক জনের মৃত্যু হয়। যে কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে, তার মধ্যে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করানো অন্যতম। হরিণঘাটার বিরহী, রানাঘাটে ঘাটিগাছা, হবিবপুর, শান্তিপুরে ফুলিয়া, গোবিন্দপুর, বাবলা, কন্দখোলা, কৃষ্ণনগর, বাহাদুরপুর, ধুবুলিয়া, বেথুয়াডহরি, দেবগ্রাম ও পলাশিতে জাতীয় সড়কে লরি দাঁড়িয়ে থাকে। কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর, কৃষ্ণগঞ্জ, হাঁসখালি, বগুলা যাওয়াক একাধিক রাজ্য সড়কেও এক দৃশ্য। নাকাশিপাড়ার বামুনডাঙার ধাবা মালিক শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশের নির্দেশে আমরা চালকদের বলছি, রাস্তায় গাড়ি না রাখতে। তা মানা না হলে খাবার দেব না।”

মুর্শিদাবাদের ডেপুটি পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে যাতে লরি দাঁড় করিয়ে রাখা না হয়, সে ব্যাপারে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। বহরমপুর স্টেশনের রাস্তা নিয়ে আলোচনাতেও ফল হয়নি। আমরা ঠিক করেছি, ট্র্যাফিক আইন ভাঙলেই কোনও বাছবিচার না করে মামলা রুজু করা হবে।’’

সবুরে যদি মেওয়া ফলে!

অন্য বিষয়গুলি:

vehicle stoppage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE