Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

নিঝুম মাঠে নেমে এল লুঝনিকি

রবিবারের রাতে সেই নিঝুম মাঠে বুঝি নেমে আসবে লুঝনিকির ফ্লুরোসেন্ট আলো। শেয়ালেরা ভুলে যাবে রাতের সোল্লাশ, দূরের রাজশাহীর শহরের আলোর সঙ্গে হয়ত মিশে যাবে রানিনগরের জোনাকি জ্বলা মাঠ। জল্পনার কথা বলতে বলতে চোখ ঝলমল করছে রানিনগরের ইদ্রিশ মহম্মদের।

বহরমপুর স্টেডিয়ামে বসছে জায়ান্ট স্ত্রিন। নিজস্ব চিত্র

বহরমপুর স্টেডিয়ামে বসছে জায়ান্ট স্ত্রিন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

মাঠে ইঁদুরের গর্তগুলো এখনও রয়ে গিয়েছে। আষাঢ়ের জলও কিছু এ দিক ও দিক ইতস্তত। বালি এসেছে দু’বস্তা। সেই সব কাদা, জল, খানা-খন্দ বুজিয়ে একটা ছড়ানো উঠোনের মতো এখন সেজে উঠেছে রানিনগরের মাঠ।

খান কয়েক বাঁশ, খাড়া হয়ে ওঠার অপেক্ষায়। সস্তার শামিয়ানা, আর কাচ্চাবাচ্ছার ভিড় কালো ঘন ঢাউস জায়ান্ট স্ক্রিন ঘিরে। জনা দশেক ছেলেপুলে তাকে ঘাড়ে করে মস্কোর পথে খাড়া করতে মরিয়া!

রবিবারের রাতে সেই নিঝুম মাঠে বুঝি নেমে আসবে লুঝনিকির ফ্লুরোসেন্ট আলো। শেয়ালেরা ভুলে যাবে রাতের সোল্লাশ, দূরের রাজশাহীর শহরের আলোর সঙ্গে হয়ত মিশে যাবে রানিনগরের জোনাকি জ্বলা মাঠ। জল্পনার কথা বলতে বলতে চোখ ঝলমল করছে রানিনগরের ইদ্রিশ মহম্মদের।

মদ্রিচ আর পোগবার খাতিরে রবিবারের জন্মদিনের চেহারাও বদলে যাচ্ছে অনেকের। সীমান্তের জায়ান্ট স্ক্রিনের মতোই বহরমপুর শহরও বড় ব্যস্ত হোটেলে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগাতে। স্কুল দফতরের এক আমলার প্রিয় নাতনির রবিবাসরীয় জন্মদিনেও তাই কেক কাটার সময় এগিয়ে এনে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে সার সার পেতে দেওয়া হচ্ছে চেয়ার। অতিথিরা খেলা দেখবেন যে! ভদ্রলোক বলছেন, ‘‘নেমন্তন্ন করতে গিয়ে বুঝলাম কেউই রবিবার আসতে চান না। দিনটা তো পিছিয়ে দিতে পারি না। সব্বাইকে কথা দিয়েছি, আসুন, খেলা দেখাব।!’’

জেলা ক্রীড়া সংস্থা সবার জন্য খুলে দিয়েছে বহরমপুরের আগাছা ভরা স্টেডিয়াম। সেখানেও ঢাউস স্ক্রিনের সামনে পড়েছে ত্রিপল। খোলা গেটের সামনে তির চিহ্ন এঁকে স্পষ্ট করে লেখা— ‘আসুন খেলা দেখুন, জায়ান্ট স্ক্রিন এই দিকে।’

বহরমপুর জেলের ভিতরেও আমদানি হয়েছে খান দশেক নতুন টিভি সেট। কয়েদি বলে কি মানুষ নন! তাঁদেরও মস্কো নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করতে দিন কয়েক আগেই দেওয়া হয়েছে কেবল লাইন। মহিলা ওয়ার্ডের দু’টি টিভিতেও বসেছে কেবল লাইন। জেলের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ফুটবলটা অন্তত হইহই করে দেখুক, ক্ষতি কি!’’

বহরমপুরের ফৌজদারি কোর্টের পরিচিত ডেকরেটার্স প্রণয়েশ মণ্ডল। বলছেন, ‘‘রথের সকালে চেয়ার, ত্রিপল সব চলে গিয়েছে, ও দিকে রবিবার রাতের জন্যও তো বায়না করে বসে আছে ক্লাবগুলো। চেয়ার ফেরত না এলে কি যে করব!’’

বহরমপুরের দু’টি পরিচিত ক্লাব এমজিওয়াইএস আর এফইউসি। কর্তারা বলছেন, ‘‘খেলার সঙ্গে খাওয়ার একটা মেল বন্ধন আছে জানেন!’’ তাই এক সঙ্গে মস্কো-মুখী চোখে তাঁরা ফাইনাল দেখার ফাঁকে চেখে নিতে চাইছেন ইলিশ-ভাত আর পাঁঠার মাংস-দেহরাদুন রাইস!

অন্য বিষয়গুলি:

World Cup 2018 Preparation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE