Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
সবুজের প্রতি পড়ুয়াদের টানতে উদ্যোগী স্কুল

বোতল কেটে টব, স্কুল সাজছে গাছে

মুরুটিয়ার কেচুয়াডাঙা বিধানচন্দ্র বিদ্যানিকেতনের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা নিজেদের উদ্যোগে এই পরিকল্পনা নেন। বাতিল হয়ে যাওয়া প্লাস্টিকের বোতলে বিভিন্ন রকম পাতাবাহারের গাছ লাগানো হয়েছে।

গাছের পরিচর্যা। কেচুয়াডাঙা বিধানচন্দ্র বিদ্যানিকেতনে। নিজস্ব চিত্র

গাছের পরিচর্যা। কেচুয়াডাঙা বিধানচন্দ্র বিদ্যানিকেতনে। নিজস্ব চিত্র

কল্লোল প্রামাণিক
করিমপুর শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ১৩:৪৮
Share: Save:

‘একটি গাছ, একটি প্রাণ’— শ্লোগান দিয়ে শুধু রাস্তায় হাঁটা নয়। বছরের এক দিন বা এক সপ্তাহ ব্যাপী অনুষ্ঠানে জাঁকজমক দেখিয়ে রাস্তার পাশে গাছ লাগানোও নয়। গাছের সঙ্গে নিত্যদিন বেঁচে থাকার অভ্যাস তৈরি করছে মুরুটিয়ার একটি স্কুল।

শুধু তাই নয়, গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কী ভাবে তা দিয়ে সৌন্দর্যায়ন করা যায়, তা-ও হাতেকলমে করে দেখিয়েছে স্কুলটি।

মুরুটিয়ার কেচুয়াডাঙা বিধানচন্দ্র বিদ্যানিকেতনের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা নিজেদের উদ্যোগে এই পরিকল্পনা নেন। বাতিল হয়ে যাওয়া প্লাস্টিকের বোতলে বিভিন্ন রকম পাতাবাহারের গাছ লাগানো হয়েছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক উদয় সিহি জানান, জমির মাটি ছাড়াও বাহারি টবে মাটি ভরে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো যায়। কিন্তু ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতলে মাটি ভরে, তাকে টবের বিকল্প হিসাবে ব্যবহারের অভিনব ভাবনাটি ইন্টারনেট-এ ছবি দেখেই প্রথম মাথায় আসে তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে গাছ লাগানোর ছবি ইন্টারনেটে প্রথম দেখি। মনে হয়েছিল, এ ভাবে গাছ লাগালে স্কুলের সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদেরও সবুজের প্রতি আকৃষ্ট করা সহজ হবে।’’

উদয় জানান, সবুজের গুরুত্ব বোঝাতে এই অভিনব প্রস্তাব স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের জানাতেই সকলে রাজি হয়ে যান। সেই মতো বছর দুয়েক আগে স্কুলে প্রায় দেড়শোটি বোতলে গাছ লাগানো হয়। সব গাছই ছিল ছোট ও লতা-জাতীয়। এখন দোতলা স্কুলভবনের তিন দিকের বারান্দায় গাছের বোতলগুলোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নিয়মিত গাছে সার, মাটি, জল দেওয়া থেকে যত্ন-পরিচর্যা সবই শিক্ষক ও পড়ুয়ারা মিলে করেন।

স্কুলের এক শিক্ষক শুভঙ্কর রায়ের কথায়, ‘‘প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করার দায়িত্ব ছিল স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের উপর। স্কুলের কয়েক জন শিক্ষক গাছের চারা জুগিয়েছেন। গাছ লাগানোর পরে গাছের পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করেছেন স্কুলের প্রকৃতি ও উদ্যান মন্ত্রী পুষ্কর পাল ও সুমন্ত ঘোষ।’’ তিনি আরও জানান, অন্যেরাও গাছের যত্ন নেয়।

স্কুলের এমন ব্যতিক্রমী কাজে খুশি এলাকার অভিভাবকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, স্কুলের ভিতরেও বিভিন্ন রকমের ফুলগাছ, দেবদারু গাছ লাগানো হয়েছে। স্কুলের তরফে এর আগেও বহু বার বাইরে বিভিন্ন গাছের চারা লাগানো হয়। যদিও তা গবাদি পশুর অত্যাচারে শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ বার যে ভাবে বোতলে গাছ লাগানো হয়েছে, তাতে স্কুলটিকে দেখতেও ভাল লাগছে।

করিমপুর ১ বিডিও সুরজিত ঘোষ জানান, স্কুলের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। স্কুলে পঠনপাঠনের সঙ্গে এমন পরিবেশও প্রয়োজন। তিনি আশাবাদী, এই উদ্যোগ অন্য স্কুলগুলিকেও গাছ লাগাতে উৎসাহিত করবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE