অসম থেকে ফোনে স্বামী শোনে স্ত্রীর প্রেমালাপ। প্রতীকী চিত্র।
স্ত্রীর অজান্তেই তাঁর সঙ্গে প্রেমিকের প্রেমালাপ ফোনে শুনে ফেলেছিলেন স্বামী। সেই থেকে মনে ঢুকেছিল সন্দেহের বীজ। তখন কর্মসূত্রে ছিলেন ভিন্রাজ্যে। বাড়ি ফিরে দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও ছেদ পড়েনি বিবাহবর্হিভূত সম্পর্কে। এর পরই স্ত্রীর প্রেমিককে খুনের ছক কষেন স্বামী। মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরের জিনারাপাড়া এলাকায় যুবকের গলার নলি কেটে খুনের ঘটনায় উঠে আসছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি, ফিরদৌস শেখকে কেন খুন করেছেন, জেরায় স্বীকার করেছেন ধৃত আখতারুল
শক্তিপুরের জিনারাপাড়ার বাসিন্দা আখতারুলের কিছু পৈতৃক জমিজমা আছে। সাংসারিক অবস্থা সচ্ছল। এর পাশাপাশি দীর্ঘ দিন ধরেই অসমে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। ন’মাস-ছ’মাস পর তিনি শক্তিপুরের বাড়িতে ফিরতেন। কর্মস্থলে দিনে শত ব্যস্ততার মাঝেও কয়েক বার ফোন করে খোঁজ খবর নিতেন স্ত্রী রুকসানার। পুলিশের দাবি, জেরায় আখতারুল জানিয়েছে, চলতি বছর ৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ স্ত্রী রুকসানাকে ফোন করেছিলেন তিনি। আখতারুলের দাবি, স্বাভাবিক কথাবার্তার পর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ভুলে গিয়েছিলেন রুকসানা। আখতারুলের দাবি, সেই সময় রুকসানার সঙ্গে তাঁর প্রেমিক ফিরদৌস ছিলেন এক ঘরেই। পুলিশ জানতে পেরেছে, সেই সময় প্রেমিক ফিরদৌসের সঙ্গে স্ত্রীর প্রেমালাপ শুনে ফেলেন আখতারুল। তখন থেকে তার মনে ঢোকে সন্দেহের বীজ। তবে এর বিন্দুবিসর্গ টের পাননি আখতারুলের স্ত্রী। ফিরদৌস সম্পর্কে আখতারুলের খুড়তুতো ভাই। মাস তিনেক পরে বাড়ি ফিরে আখতারুল রুকসানা এবং ফিরদৌসকে সামনাসামনি বসিয়ে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে ছেদ টানার অনুরোধ করেন। পুলিশের দাবি, আখতারুল জানিয়েছেন, সেই সময় তার স্ত্রী রুকসানা বা ফিরদৌস কেউই সেই অনুরোধে কান দেননি। এর পর আখতারুল অসমে নিজের কাজে ফিরে যান।
পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছু দিন আগে বাড়ি ফিরেছেন আখতারুল। কিন্তু এ বার বদলে গিয়েছিল তাঁর আচরণ। তার বাড়িতে ফিরদৌসের অবাধ আসাযাওয়া নিয়ে আর কোনও অশান্তি করেননি তিনি। পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, এর মাঝেই গত কয়েক দিন ধরে রুকসানার উপরে চাপ সৃষ্টি করেন আখতারুল, যাতে তিনি ফিরদৌসকে বাড়িতে ডেকে আনেন। বুধবার সেই পরিকল্পনামাফিক ফিরদৌস আখতারুলের বাড়িতে যেতেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। এর পর ফিরদৌসের গলার নলি কেটে দেয় আখতারুল। পাশাপাশি, তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতও করা হয়। এর পর ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যেই শক্তিপুর থানায় আত্মসমর্পণ করেন অভিযুক্ত আখতারুল।
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের টানাপড়েনে শান্ত আখতারুল যে এত ভয়ানক হয়ে উঠবেন তা আঁচ করতে পারেননি তাঁর প্রতিবেশীরাও। ফিরদৌসের স্ত্রী সোনিয়া বিবির বক্তব্য, ‘‘আমার স্বামীকে কেন খুন করা হয়েছে কিছু জানি না। ও ভালমানুষ। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।’’ আখতারুলের সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিল বলেও দাবি করেছেন ফিরদৌসের মা সামসুন্নেহা বিবি। এ প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। প্রধান অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy