Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
ভোট ফ্যাক্টর: পার্শ্বশিক্ষক
general-election-2019-west-bengal

সমান কাজে সমবেতন অধরা

গত পাঁচ বছরে নানা ঘটনায় প্রগাঢ় ছাপ পড়েছে জনজীবনে। কখনও খুশি, কখনও ক্ষোভ, কখনও আশঙ্কা দুলিয়ে দিয়েছে দেশকে। ভোটের মুখে কতটা ফিকে সেই সব ছবি, কতটাই বা রয়ে গিয়েছে পুরনো ক্ষতের মতো? খোঁজ নিচ্ছে আনন্দবাজার। 

পার্শ্বশিক্ষকরাও সমান দায়িত্ব পালন করেন শ্রেণিকক্ষে। ছবি: শাটারস্টক।

পার্শ্বশিক্ষকরাও সমান দায়িত্ব পালন করেন শ্রেণিকক্ষে। ছবি: শাটারস্টক।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:১৬
Share: Save:

সবই করতে হয় তাঁদের। ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষার খাতা দেখা, গার্ড দেওয়া— কোনও কাজেই ছাড় নেই। অথচ, বেতনের বেলায় স্থায়ী শিক্ষকদের থেকে তাঁরা অনেক পিছিয়ে। বঞ্চিত অন্য অনেক সুযোগ সুবিধা থেকেও। স্থায়ীকরণ থেকে থেকে শুরু করে ‘সম কাজে সম বেতন’-এর দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরেই। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হওয়ার মত কোনও লক্ষণই এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পার্শ্বশিক্ষকদের। ফলে তাঁদের বেশির ভাগই ক্ষুব্ধ এবং হতাশ।

নদিয়া জেলায় প্রায় চার হাজার পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন। ২০০৪ সালে সর্বশিক্ষা মিশন থেকে প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। প্রথম অবস্থায় প্রাথমিকে এক হাজার টাকা ও মাধ্যমিক স্কুলে দু’ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া শুরু হয়। পরে তা বেড়ে প্রাথমিকের জন্য পাঁচ হাজার চারশো টাকা ও মাধ্যমিক স্কুলের জন্য প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা হয়। কিন্তু ক্লাসের সংখ্যা থেকে শুরু করে অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের যে দায়িত্ব পালন করতে হয় সেই নিরিখে বেতন খুবই সামান্য বলে তাঁদের অভিযোগ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পার্শ্বশিক্ষকরা এ নিয়ে আন্দোলনও করেছেন। গত বছর মার্চ মাস থেকে বেতন প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রে দশ হাজার ও মাধ্যমিক স্কুলের ক্ষেত্রে তেরো হাজার টাকা হয়। যদিও এতে সন্তুষ্ট নন পার্শ্ব শিক্ষকেরা। তাঁদের দাবি, স্থায়ী শিক্ষকদের সমান বেতন কাঠামো তৈরি করতে হবে তাঁদের জন্য। কারণ, তাঁরা কোনও অংশে কাজ কম করেন না। সেই সঙ্গে তাঁরা স্থায়ীকরণের দাবিও তুলছেন। বামপন্থী সংগঠন ‘নিখিল বঙ্গ পার্শ্বশিক্ষক সমিতি’র নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক চৈতন্য ঘোষ বলছেন, “আমাদের বেতনের ৬০ শতাংশ দেয় কেন্দ্র সরকার। বাকিটা রাজ্য সরকারের। কেন্দ্র সরকার বলছেন, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষরদের ন্যূনতম ১৮ হাজার টাকা ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে। বেতন বৃদ্ধির এই প্রস্তাব দিতে হয় রাজ্য থেকে। আমাদের রাজ্য সরকার সেটা চায় না বলেই প্রস্তাব দিচ্ছে না।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পার্শ্ব শিক্ষকের কথায়, “প্রতি মুহুর্তে আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে, আমরা স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। অথচ, আমরা কেউই শিক্ষাগত যোগ্যতায় স্থায়ী শিক্ষকদের থেকে কম নই। একই কাজ আমাদের করতে হয়। যদিও পার্শ্বশিক্ষকদের একটা অংশ অভিযোগ মানতে নারাজ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস পার্শ্বশিক্ষক সমিতির জেলা কমিটির এক কর্তার কথায়, “বামফ্রন্টই তো গোড়ায় গলদ করে রেখেছে। নিয়োগের সময় দ্বিগুণ নিয়োগ করে বেতন অর্ধেক করে দিয়েছে। পরে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে থেকেও বেতন অনেকটাই বাড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছে এই সরকার।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE