ভোট প্রার্থনা: রূপালী বিশ্বাসের সমর্থনে প্রচারে দেব। বৃহস্পতিবার শান্তিপুরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
তিনি এলেন এবং তিনি এলেন না!
দীর্ঘ অপেক্ষার পর দেব দর্শনের সুযোগ কেউ-কেউ পেলেন আবার অনেকের বৈশাখী খর রোদে অপেক্ষাই সার হল।
তিনি দীপক অধিকারী, ওরফে বাংলা চলচ্চিত্রের সুপার স্টার দেব। মেদিনীপুরের ঘাটাল কেন্দ্রে তিনি তৃণমূলের প্রার্থী। কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটে কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে বৃহস্পতিবার শান্তিপুর, চাকদহ ও বেতাইয়ে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত দেরি করে হলেও শান্তিপুর ও বেতাইয়ে তিনি বুড়ি ছোঁয়ার মতো করে অন্তত যেতে পেরেছেন। কিন্তু হতাশ হতে হয়েছে চাকদহকে। সেখানে আর পৌঁছতে পারেননি নেতা-অভিনেতা। হেলিপ্যাডে তাঁর হেলিকপ্টার নামার অনুমতি না-পাওয়াতেই সমস্যা তৈরি হয় বলে তৃণমূল ও প্রশাসন সূত্রের খবর।
শান্তিপুরের বাগআঁচড়ার তড়িৎ সংঘের মাঠে সাজানো মঞ্চে এ দিন দুপুরে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী রূপালী বিশ্বাস-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সদ্য তৈরি স্টেডিয়ামের মাঠ তো বটেই গ্যালারতেও তখন মানুষের ঢল। দুপুর বারোটায় সভা শুরু হওয়ার কথা। দশটা থেকেই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে মানুষ ভিড় করতে শুরু করেছিলেন মাঠে। কেউ দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্লাব ঘরের পাশে তৈরি অস্থায়ী হেলিপ্যাড ঘিরে তৈরি বাঁশের ব্যারিকেডের পাশে, আবার কেউ মাঠে। কিন্তু বেলা গড়িয়ে গেলেও দেখা নেই দেবের। অতঃপর জানা গেল, বাগআঁচড়ার তড়িৎ সংঘের মাঠে তৈরি হেলিপ্যাডে দেবের হেলিকপ্টার অবতরণের অনুমতি পায়নি।
শেষ পর্যন্ত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য তাহেরপুর থানার পাশের মাঠে যে হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছিল সেখানেই নামে দেবের হেলিকপ্টার। সেখান থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে বাগআঁচড়ায় তিনি পৌঁছান সড়কপথে। তখন বেলা প্রায় সাড়ে তিনটে। দীর্ঘ অপেক্ষা সত্ত্বেও দেবকে মঞ্চে দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে জনতা। প্রথমেই দেরির জন্য ক্ষমা চান তিনি। তার পরে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি দেন। তত ক্ষণে অনেকে রোদে-গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠে শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য দাবি করেন, “দেবের সভা নিয়ে চক্রান্ত হয়েছিল। বিজেপি আরএসএস এর লোক জন চক্রান্ত করে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।”
কিন্তু কেন হেলিপ্যাডের অনুমতি পাওয়া গেল না? প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিপুরের ক্ষেত্রে পুলিশ, দমকল এবং জমির মালিকের ছাড়পত্র মিললেও মেলেনি পূর্ত দফতর (সিভিল) এর ছাড়পত্র। হেলিপ্যাডের মাঠ ছোট হওয়ায় এই ছাড়পত্র মেলেনি বলে প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে। রানাঘাটের মহকুমা শাসক মনীশ বর্মা বলেন, “জায়গা কম থাকার কারনে বাগআঁচড়ার মাঠে হেলিকপ্টার নামানো যায়নি। পরে তাহেরপুরে হেলিকপ্টার নামানো হয়।” শান্তিপুরে যেতে দেরি হওয়ায় চাকদহেও শিমুরালি সংস্কৃতি সংঘের ময়দানে দেবের সভা বাতিল হয়। মানুষ হতাশ হয়ে ফিরে যান।
এ দিন দুপুরে বেতাই কলেজ মাঠে দেবের হেলিকপ্টার নামার কথা ছিল। কিন্তু ভুল করে তেহট্টের বিনোদনগর হাই স্কুল মাঠে তা নামে। সেখানে কিছু সময় অপেক্ষা করে হেলিকপ্টার ফিরে যায়। অবশেষে তিন ঘণ্টা দেরিতে বিকেল পাঁচটা নাগাদ বেতাই আম্বেদকর কলেজ মাঠে আসে দেবের হেলিকপ্টার। সেখান থেকে হুডখোলা গাড়িতে রোড শো শুরু হয়। তা শেষ হয় দেবনাথপুর হয়ে ছাতিনায় । রোড শেয়ো কৃষ্ণনগরের দলীয় প্রার্থী মহুয়া মৈত্র উপস্থিত না-থাকলেও ছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত ও অন্যরা। এ দিন কৃষ্ণগঞ্জে রোড শো-র কথা ছিল বাংলা ছবির আর এক তারকা সোহমের। কিন্তু তাঁর হেলিকপ্টারও দেরিতে পৌঁছোয় কৃষ্ণনগরে। তাই কৃষ্ণগঞ্জের বদলে তিনি আসাননগর, ভীমপুর, পোড়াগাছায় রোড শো করে ফিরে যান।
তথ্য সহায়তা: সৌমিত্র সিকদার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy