Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

বামেদের দখলে জেলার দুই পুরসভা

গতবারের দুটি পুরসভা জঙ্গিপুর ও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ এ বারও সিপিএম তথা বামফ্রন্টের দখলে রইল। ‘হাতছাড়া’ কেবল ধুলিয়ান। ওই পুরসভায় ফল ভাল না হওয়ার কারণে মুর্শিদাবাদের ৬টি পুরসভা ভোটে সিপিএমের আসন সংখ্যা কিছুটা হলেও কমেছে। গত পুরভোটে সিপিএমের আসন ছিল ২৭। এ বারে কমে হয়েছে ২১। একই ভাবে ফ্রন্টগত ভাবে আসনও ৩৭ থেকে ২৭-এ নেমেছে।

উচ্ছ্বাস সিপিএম সমর্থকদের। জঙ্গিপুরে অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

উচ্ছ্বাস সিপিএম সমর্থকদের। জঙ্গিপুরে অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

শুভাশিস সৈয়দ
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫৫
Share: Save:

গতবারের দুটি পুরসভা জঙ্গিপুর ও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ এ বারও সিপিএম তথা বামফ্রন্টের দখলে রইল। ‘হাতছাড়া’ কেবল ধুলিয়ান।

ওই পুরসভায় ফল ভাল না হওয়ার কারণে মুর্শিদাবাদের ৬টি পুরসভা ভোটে সিপিএমের আসন সংখ্যা কিছুটা হলেও কমেছে। গত পুরভোটে সিপিএমের আসন ছিল ২৭। এ বারে কমে হয়েছে ২১। একই ভাবে ফ্রন্টগত ভাবে আসনও ৩৭ থেকে ২৭-এ নেমেছে। পুরভোটে সিপিএমের ফল খারাপ হয়েছে স্বীকার করে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত পুরভোটে সিপিএম এর চেয়েও ভাল ফল করেছিল। খারাপের কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।’’

২০১০ সালের পুর-নির্বাচনে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট তিনটি পুরসভা জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান ও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ দখল করে। ধুলিয়ানে অবশ্য ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। ওই পুরসভার ১৯টি আসনের মধ্যে বাম ১১টি এবং কংগ্রেস ৮টি আসনে জয়ী হয়। পরে ফ্রন্টের তিন জন প্রার্থী কংগ্রেসে যোগ দেয় এবং কংগ্রেসের ১১ জনকে ‘প্রলোভন’ দেখিয়ে তৃণমূল ওই পুরসভার দখল নেয়। এ বারের পুরভোটে অবশ্য ধুলিয়ান পুরসভার ফল ত্রিশঙ্কু হয়েছে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ধুলিয়ান পুরসভার ৬২টি বুথে সিপিএম ভোট পায় ৫৬৩৫টি। অন্য দিকে বিজেপি ৪১৬২টি এবং তৃণমূল ৩৬১৮টি ভোট পায়। ওই লোকসভার ভোট ধরে রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় ধুলিয়ানে ভাল ফল করতে পারেনি সিপিএম। ওই পুরসভায় সিপিএম মাত্র দুটি আসনে জয়ী হয়েছে। তবে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলায় বামফ্রন্টের ভরাডুবির ফলে হাতছাড়া হয় মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ। প্রায় প্রতি দিনই কোনও না কোনও জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ কর্মী-সমর্থক দলে দলে শাসক দলে যোগ দিচ্ছে—এই অবস্থায় পুরভোটের ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় সিপিএম তথা বামফ্রন্ট তাদের গড় মোটামুটি ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে।

বাম ঐক্য অটুট থাকায় জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভায় বাম সমর্থিত ছ’জন নির্দল প্রার্থী, ধুলিয়ানে একজন এবং মুর্শিদাবাদে দু’জন প্রার্থী জয়ের মুখ দেখেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। এ বারে মুর্শিদাবাদ ও বেলডাঙা পুরসভায় বামফ্রন্ট ভাল ফল করেছে। গত পুরভোটে মুর্শিদাবাদ পুরসভায় ফ্রন্টের এক মাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ফরওয়ার্ড ব্লকের জয়ী প্রার্থী ছিলেন। এ বার সেখানে বামফ্রন্ট তিনটে আসনে জয়লাভ করেছে। ফরওয়ার্ড ব্লক একটি আসনে এবং বাকি দুটি আসনে বাম-সমর্থিত দুজন নির্দল প্রার্থী জিতেছেন। বেলডাঙা পুরসভাতেও নিজেদের জয়ী আসন ধরে রাখার পাশাপাশি বাড়তি একটি আসনে জিতেছে বাম। গত বার ওই পুরসভায় সিপিএম ২টি এবং আরএসপি ১টি আসনে হয়। এ বারও সিপিএম ২টি এবং আরএসপি তাদের জয়ী ১টি আসন ধরে রেখে বাড়তি ১টি আসন সংযোজন করেছে। বাড়তি ওই আসনে জয় পায় আরএসপি।

সব মিলিয়ে, আরএসপিও গত বারের জয়ী তিনটে আসন এ বারেও ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। তবে ফরওয়ার্ড ব্লক খুইয়েছে ২টি আসন এবং সিপিআই ১টি আসন। গত পুরভোটে ৫টি আসনে জয়ী হয় ফরওয়ার্ড ব্লক। জয়ী আসনগুলির মধ্যে রয়েছে ধুলিয়ানে ২টি আসন এবং কান্দিতে ১টি আসন। তবে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভায় এ বারও ২ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতীক চিহ্নে জয়ী হয় ফরওয়ার্ড ব্লক। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক বিভাস চক্রবর্তীর অবশ্য অভিযোগ, ‘‘ধুলিয়ানে তৃণমূল ও কংগ্রেস অর্থের বিনিময়ে ভোট কিনেছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE