শনিবার রানাঘাট আদালতে পরিদর্শনে এলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি আশা অরোরা। নিজস্ব চিত্র
জায়গার অভাবে অনেক এজলাসে আইনজীবীরা বসতে পারেন না। বিচারপ্রার্থীদের পরিবারের লোকেদের কোর্টের বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কোথায় ঘরের মধ্যে জল পড়ে। কোনও রকমে সেখানে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। কোথাও মূল্যবান কাগজপত্র জায়গার অভাবে ঠিকমতো সংরক্ষণ করা যায় না।
এই ধরনের সমস্যায় দিন কাটছে রানাঘাট আদালতে আসা মানুষজনের। সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন লড়াই করে আসছে রানাঘাট বার অ্যাসোসিয়েশন। এ বার সেখানে নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু হলে সমস্যার খানিক নিরসন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
শনিবার এই আদালত পরিদর্শন করতে এসেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি আশা অরোরা সহ বাকিরা। তিনি এই জেলার জোনাল জাজ-ও। তিনি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, প্রশাসন, পূর্ত দফতরের আধিকারিক সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও করেছেন।
রানাঘাট বার অ্যাসোসিয়েশন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট আদালতে ন’টি কোর্ট রয়েছে। একটি এ সি জে এম কোর্ট, দু’টি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, দু’টি সিভিল জাজ জুনিয়ার ডিভিশনের কোর্ট, একটি সিনিয়র ডিভিশন সিভিল জাজের কোর্ট, একটি অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের কোর্ট, একটি অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ফাস্ট ট্রাক কোর্ট এবং রেল কোর্ট। জায়গার অভাবে রেল কোর্ট বসতে পারে না। সেটি রানাঘাট রেল স্টেশনে বসে। এখানকার অধিকাংশ কোর্টে কোনও না কোনও সমস্যা রয়েছে।
সংগঠনের সম্পাদক মিলন সরকার বলেন, “কলকাতা হাইকোর্ট থেকে আমাদের এখানে আরও নটি কোর্টের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু জায়গার অভাবে সেগুলো চালু করা যাচ্ছে না। অনেক কোর্টে ঠিকমতো দাঁড়ানো যায় না। ছাদ দিয়ে জল পড়ে। একশো বছরের পুরানো কোর্টে সাপ ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। এই সবের হাত থেকে মুক্তি পেতে আমরা এখানে নতুন ভবন তৈরির দাবি জানিয়েছিলাম। এ বার সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে।”
তিনি বলেন, “সব কোর্ট এক ছাদের তলায় থাকবে। সেই কথা ভেবে একশো বছরের পুরনো প্রথম মুন্সেফ কোর্টের ভবন ভেঙে নতুন ভবন করা হবে। আপাতত, আমাদের বারের নতুন ভবনে ওই কোর্টের কাজ চালানো হলে আমাদের আপত্তি নেই। কোর্টের নীচে গাড়ি রাখার জায়গাও করা হবে।”
আদালতের প্রবীণ আইনজীবী শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোর্টের সংখ্যা কম হওয়ায় অনেক মামলা ঝুলে রয়েছে। বিচারপ্রার্থীরা সমস্যায় রয়েছেন। তাঁরা দিনের পর দিন ঘুরে যাচ্ছেন। পকসো কোর্ট আলাদা দরকার। জায়গায় অভাবে নথিপত্র ঠিক ভাবে পদ্ধতি মেনে সংরক্ষণ করা হয় না। এটা খুব জরুরি। একটি কোর্ট ভাড়া নিয়ে চলছে। সেটার অবস্থা ভাল নয়। তার জায়গার পরিবর্তন খুব জরুরি। নতুন ভবন হলে সেই সমস্যা দূর হবে বলে আশা করছি।”
পূর্ত দফতরের বাস্তুকার রঞ্জন হালদার বলেন, “আদালত চত্বরে একটি পুরনো কোর্টের ভবন ভেঙে নতুন ভবন তৈরি করা হবে। এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। আগামি দিনে সরকারি সব নির্দেশ মেনে কাজ শুরু করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy