Advertisement
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

আনাজে স্বস্তি, বাড়ন্ত তেল মশলা  

ব্যবসায়ীদের কথায়, যা দোকানে ছিল তার মজুত শেষ। সব কারখানা বন্ধ। নতুন করে কলকাতা থেকে মালপত্র আসছে না। 

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৭
Share: Save:

লকডাউনের সময়ও আনাজের বাজারকে অনেকটাই স্বস্তি দিল স্থানীয় এলাকায় ভাল উৎপাদন। সুতি, সাগরদিঘি, জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জের অন্তত ৬০টি গ্রামে আনাজের ব্যাপক চাষই কার্যত ধরে রেখেছে বাজারকে। সাধারণ বাজারে জোগান অনিয়মিত থাকলেও আলুর দামও ১৮ থেকে ২০ টাকার বেশি ছাড়াতে পারেনি। কৃষি দফতরের মতে, স্কুলগুলি থেকে দু’সপ্তাহে প্রচুর পরিমাণে আলুর জোগান গেছে মানুষের হাতে। সর্বত্র সাহায্য হিসেবে চালের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে আলুও। কিন্তু সাধারণ গৃহস্থ সমস্যায় পড়েছেন রান্নার সামগ্রী নিয়ে। সর্ষের তেল, সাদা তেল, ঘি, বিভিন্ন প্যাকেটজাত মশলা মিলছে না এই এলাকার বেশির ভাগ দোকানেই। সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, ফিনাইল, ডেটল, ব্লিচিং ছাড়াও নুন, কেক, ম্যাগি, চাউমিনের মতো খাবারও বাজারের বেশির ভাগ দোকানেই অমিল। উধাও বিস্কুট, পাঁউরুটিও। মিস্টির দোকান খোলা থাকলেও রসগোল্লা ছাড়া কিছুই নেই। আকাল মুড়িরও।

ব্যবসায়ীদের কথায়, যা দোকানে ছিল তার মজুত শেষ। সব কারখানা বন্ধ। নতুন করে কলকাতা থেকে মালপত্র আসছে না।

রঘুনাথগঞ্জের এক শিক্ষক উৎপল মণ্ডল বলছেন, “বহু খোঁজ করেও বাবার জন্য একটা হ্যান্ড ওয়াশ পাইনি বাজারে। ডেটল বা ওই জাতীয় প্রতিষেধক কোনও সাবানও মেলেনি কোথাও।” সাগরদিঘির গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা বলছেন, “স্যানিটারি ন্যাপকিন নেই। বাধ্য হয়ে গ্রাম্য পদ্ধতি ব্যবহার করতে হচ্ছে। যা খুবই বিপজ্জনক।”

ফরাক্কার চা ব্যবসায়ী সাহাবুদ্দিন বলছেন, “চা বন্ধ। প্রতিদিন ১০০ ডিম সিদ্ধ করে বিক্রি করি। ১১০ টাকায় ৩০টি ডিম মিলত। এখন ১৫০ টাকাতেও মিলছে না। তাই সেদ্ধ ডিম বিক্রিও বন্ধ করে দিতে হয়েছে।”

রীতিমত বিরক্ত সরকারি কর্মী রেনুকা বিশ্বাস। বলছেন, “রোজ অফিস যেতে হচ্ছে। জামা কাপড়ও রোজই কাচতে হচ্ছে। একটু ডেটলও দিচ্ছিলাম ধোওয়ার সময়। কিন্তু কোনও নামি ডিটারজেন্ট পাউডার ও ডেটল কোনওটাই নেই দোকানে। কবে আসবে জিজ্ঞেস করলে বলছে লকডাউনের পরে।”

জঙ্গিপুর শহরের সবচেয়ে বড় পাইকারি ব্যবসাদার ইকবাল ফৈজি বলছেন, “মালপত্রের জোগান আসছে না। কলকাতার রাস্তা একদম বন্ধ। লরিতে কিছু সামগ্রী বহনে ছাড় থাকলে কী হবে, বড়বাজারের মূল দোকান, ট্রেন যদি বন্ধ থাকে তা হলে জোগান হবে কী করে? সর্ষের তেল কোনও রকমে বীরভূম থেকে আসছে। কতদিন আসবে তাও জানি না। তবে বেশি দাম নেওয়ার কথা এখনও কানে আসেনি।”

ধুলিয়ানে উধাও সমস্ত রকম নামী বিস্কুট। স্থানীয় রুটির ভাটা বন্ধ হওয়ায় পাউঁরুটি অমিল। বাঙালির প্রিয় মুড়ির সঙ্গী চানাচুরও উধাও ধুলিয়ান থেকে। সর্ষের তেলের দাম ৫ লিটারে ৫০ টাকা বেশি। চিনির দাম ৪০ থেকে বেড়ে ৪৫-এ দাঁড়িয়েছে। তাও সব দোকানে মিলছে না।

ধুলিয়ানের বড় পাইকারি ব্যবসায়ী স্বদেশ সাহা বলছেন, “বাজারে বহু মাল নেই। ডালের দাম কিলো প্রতি ১০ টাকা বেড়েছে, চালের দাম বেড়েছে কুইন্ট্যালে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।” জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “লকডাউনে সব প্রায় বন্ধ। স্বাভাবিক জোগান নেই। তার ফলেই কিছু কিছু মালপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু বেশি দাম নেওয়ার কোনও অভিযোগ আসেনি। পুলিশ কিছু দোকানে হানাও দিয়েছে। সর্বত্রই নজরদারি রয়েছে।”

বহরমপুরে মঙ্গলবারও একাধিক বাজারে ভিড় দেখা যায়। স্বর্ণময়ী বাজারের স্থান পরিবর্তন করে স্থানীয় ওয়াইএমএ-র মাঠে বসানো হয়েছে। কান্দি বাসস্ট্যান্ডের স্থান পরিবর্তন করে রাস্তা সংলগ্ন মাঠে বসানো হয়েছে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy