কারও গোসা, কেউ বা ক্ষুব্ধ কেউ মারমুখী। বোর্ড গঠন নিয়ে মুর্শিদাবাদ জুড়ে তৃণমূলের অন্দরে আকচাআকচির বিরাম নেই। আর তা থেকেই কোথাও ছড়িয়ে পড়ছে গন্ডদোল কোথাও বা কথা কাটাকাটি গড়াচ্ছে হাতাহাতিতে।
কান্দি মহকুমার ৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গঠন নিয়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বৃহস্পতিবার খড়গ্রাম ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গঠন শেষ হল। এ দিনই শেষ হল কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচনের কাজও।
ওই দিন খড়গ্রাম ব্লকের এড়োয়ালি পঞ্চায়েতে ১৭টি আসনে ভোট হয়েছিল। তার ১৬টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বাম ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থী কালীচরণ বাগদি শুধু বিরোধী সদস্য। প্রধান গঠনের সময় তৃণমূলের ১৬ জন সদস্য হাজির থাকলেও ওই সভায় ছিলেন না কালীচরণ। যদিও তার অনুপস্থিতি নিয়ে কোন মন্তব্য করেনি। ওই দিন ১৬ জন তৃণমূল সদস্য পঞ্চায়েত দফতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে দু’শো মিটার দূরে আতসবাজি ফাটতে থাকে। উড়তে থাকে সবুজ আবীর।
ওই পঞ্চায়েতের প্রধান গঠন নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব যে চপে ছিল তাঁদের উল্লাস দেখেই তা মালুম হয়েছে। কারণ ওই পঞ্চায়েতটি ভোট থেকে স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছিল। কারণ সেখানে ভোটের দিন এলাকায় বোমাবাজি পর্যন্ত হয়েছিল। তাই প্রধান গঠনের সময়েও বড়ধরণের অশান্তির আশঙ্কা করেছিল পুলিশ।
দলীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত খাম বন্দি হয়ে প্রধান ও উপ-প্রধানের নাম যাওয়ার পরেই প্রধান গঠন হয়। ওই অঞ্চলের প্রধান রেবিনা বিবি ও উপ-প্রধান পাপিয়া মণ্ডল হওয়ার পর পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে কোন ক্ষোভবিক্ষোভ দেখা যায়নি।
কান্দি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, “কোনও বিরোধ ছাড়াই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান গঠন হয়েছে। কান্দি ছাড়া বাকি চারটি পঞ্চায়েত সমিতিতেও শান্তি পূর্ণ ভাবেই সভাপতি গঠন হবে।”
তবে ছবিটা কিঞ্চিৎ অন্যরকম ছিল শমসেরগঞ্জের তিনপাকুড়িয়ায় এলাকায়। উত্তেজনা ছিল দিনভর। সেখানে গত বুধবার থেকেই গোষ্ঠী সংঘর্ষ ও বোমাবাজির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল ১২ জনকে।ধৃতদের পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল এ দিন জঙ্গিপুর মহকুমা আদালত। বাকি ৮ জনকে পাঠানো হল ১৪ দিনের জেল হেফাজতে। পুলিশ জানায়, প্রচুর বোমা মজুত রয়েছে ওই এলাকায়। সেগুলি উদ্ধারের জন্যই ধৃত চার জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। এ দিন ধৃত তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে।
শমসেরগঞ্জের ঘটনায় ক্ষুব্ধ পুলিশ ও দলীয় নেতারাও। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্বিঘ্নে বোর্ড গঠনের পর পুলিশকে আক্রমণের চেষ্টা হয়েছে পরিকল্পিত ভাবেই।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহাও বলেন, “যা ঘটেছে তা অবাঞ্ছনীয়। পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিয়ে ঠিক করেছে।”
তথ্য: কৌশিক সাহা ও বিমান হাজরা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy