এমনই বেহাল ঝাউবোনার শেখপাড়ার কাঠের সেতু। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন নওদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাহাবুদ্দিন মোল্লা। স্থানীয় বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।
• শ্যামনগরের বালি ও টুঙ্গির মাঝে সুতি নদী। দীর্ঘদিন ধরে নদীর উপর একটি পাকা সেতু তৈরির কথা শুনছি। চার বার শিলান্যাসও হয়েছে। কিন্তু আজও তা হল না। এর জন্য কি ভেবেছেন?
গোলাম সারওয়ার, শ্যামনগর
প্রথমে ভাবা হয়েছিল খরচ হবে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে সেতু করা হবে। কিন্তু তা করতে গিয়ে দেখা যায় খরচ পড়বে কমবেশি তিন কোটি টাকা। তবুও জেলা পরিষদ এগিয়ে ছিল। কিন্তু কেন তা শুরু করা গেল না তা বিস্তারিত খোঁজ নেব।
• ২০১৪ সালে নওদার পাটিকাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১০ বেডের হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দু’জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু দু’বছর পেরিয়ে গেলেও পরিষেবা মিলছে না।
নির্মল বিশ্বাস, চাঁদপুর
২০১৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালের আপ গ্রেডেশনও করেন। কিন্তু বড় ভবন ছাড়া সেখানে তেমন কিছু নেই। এখানে নওদা ছাড়াও নদিয়া থেকেও মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন। প্রসূতি মায়েদের জন্য সম্পূর্ণ পরিষেবা থাকলে মানুষ উপকৃত হয়। আমরা এই নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।
• ত্রিমোহিনী ও দুধসর গ্রাম দু’টির মাঝে সুতি নদীর উপর বাঁশের সাঁকো। কিন্তু সেটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। পড়ুয়ারা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। স্থায়ী সমাধানের জন্য কি ভাবছে পঞ্চায়েত সমিতি?
জাহিরুল মোল্লা, নওদা
আমরা এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষামহল ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কী ভাবে সেতু নির্মাণ করা যায়। কিন্তু আর্থিক সমস্যা থাকায় তা করা যায়নি। সরকারি সাহায্য পেলে পাকা সেতু হবে।
• ত্রিমোহিনী ক্লাব থেকে সবার্ঙ্গপুর সেতু পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা সম্পূর্ণ বেহাল। সমস্যা থেকে বেরোতে গ্রামবাসী ভোট বয়কট, প্রতিবাদ, আন্দোলনও করেছে। কিন্তু কিছুই হয়নি। পঞ্চায়েত কি কিছুই করতে পারে না?
মুকুল শেখ, আমতলা
আমরা প্রায় ৮ লক্ষ টাকার কাজ করেছি। স্থায়ী সমাধানের জন্য পঞ্চায়েত সমিতি প্রশাসন ও জেলা পরিষদ জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও কিছুই হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় এই রাস্তা নির্মাণের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। সেটি হলে সমস্যা মিটবে।
• আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল বর্ষার সময় জলবন্দি হয়ে পড়ে। এমন হয় যে হাসপাতালে রোগী ভর্তির করার মতো উপায় থাকে না। বাধ্য হয়ে বহরমপুরে ছুটতে হয়। নিকাশির সমস্যা নিয়ে কিছু ভেবেছেন?
শেরফুল মণ্ডল, নওদা
প্রকৃতিগত কারণে হাসপাতাল চত্বরটি নিচু। ফলে সহজেই জল জমে। গত পঞ্চায়েত সমিতি ওই জল নিকাশ করতে গিয়ে ৭৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নিকাশি নালা বানিয়েছিল। কিন্তু ত্রুটি থাকায় জল ঠিক মতো বের হচ্ছে না। সমস্যার যাতে দ্রুত সমাধান হয় তার চেষ্টা করছি।
• ঝাউবোনার শেখপাড়ায় পিরতলা খালের উপর কাঠের সেতু দিয়ে ঘোড়ামারা, মহিষমারা, চাঁদপুর গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু সেটি এমনই বেহাল যে, পেরোতে গিয়ে ভয়ে কেঁদে ফেলে ছেলেমেয়েরা।
আতাউর রহমান, কেদারচাঁদপুর
মানস ভুঁইঞা সেচমন্ত্রী থাকাকালীন জেলা পরিষদ উদ্যোগী হয়েছিল। গত বিধানসভার আগে মাটি পরীক্ষাও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। পঞ্চায়েতের পক্ষে মেরামতিও হয়েছে। অর্থ থাকলে আমরা উদ্যোগ নেব।
• নওদার সদর হল আমতলা। কিন্তু পথঘাট একেবারেই বেহাল। ব্লক অফিসের সামনে ইঁট ফেলা রাস্তার ধারে গার্ডওয়াল ভেঙে গেয়েছে। সেটির মেরামতি হবে কি?
মধুসুদন ঘোষ, নওদা
২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা পেয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। এই ধরনের সমস্যা মেটাতে এই টাকা অতি সামন্যই। আমতলার রাস্তা নিয়ে সমস্যার কথা জানি। সেই নিয়ে নানা পরিকল্পনাও আছে। গার্ড ওয়াল মেরামতির কাজ শীঘ্রই হবে।
• মধুপুরের তকিয়া গ্রামের রাস্তার বেশির ভাগই জলঙ্গী নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ। আমতলা হাইস্কুল যেতে পড়ুয়াদের সমস্যায় পড়তে হয়। তা ছাড়া মধুপুর-তোকিয়া রাস্তাটি ঢালাই করা দরকার।
আনোয়ার আলি, মধুপুর
সেচ দফতরকে লিখিত ভাবে ভাঙন রোধের জন্য বলেছি। তাঁরা গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই এলাকায় একটা ছোট সেতু ছিল। সেটি জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। সেটি ফের তৈরি হচ্ছে। গ্রামের ঢালাই রাস্তা নির্মাণে সচেষ্ট হব।
• বছর দশেক আগে ত্রিমোহিনী ঘাটপাড়ায় জলের ট্যাঙ্ক তৈরি হয়। তাতে কিছু এলাকায় জল মিললেও এখনও অনেক জায়গায় জল যায়নি। বাড়ি বাড়ি জল আজও পৌঁছয়নি। জল কবে মিলবে?
হাসিবুর রহমান, নওদা
আমরা পিএইচই দফতরকে সমস্যার কথা জানিয়েছি। ফের জানাব।
• আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা খুব সামান্যই। কিছু হলে বহরমপুরে ছুটতে হয়। সেখানে শিশু ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এলে বহরমপুর যেতে হয় না।
জেম খান, আমতলা
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরকে বলেছি। নানা আন্দোলন, ঘেরাও হয়েছে। কিন্তু ফল সে ভাবে মেলেনি।
• নওদার চাঁদপুরে ছয়টি আইসিডিএস সেন্টার হয় গাছতলায় বা কারও বাড়ির বারান্দায় চলে। স্থায়ী ভবন প্রয়োজন। শিশুদের খাওয়ার মানও খুব ভাল নয়।
ইমদাদুল ইসলাম, চাঁদপুর
এটি সমস্যাটি সমাধান হওয়া দরকার। আইসিডিএস সেন্টারের জন্য স্থায়ী ভবনের কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। খাওয়ার মান নিয়ে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy