Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Crime

যুবককে গুলি করে কুপিয়ে খুন নদিয়ার কালীগঞ্জে! ‘পুলিশ নিষ্ক্রিয়’, রাত পর্যন্ত দেহ আটকে বিক্ষোভ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে জাতীয় সড়কের ধারে ক্যারম খেলছিলেন হাফিজুল। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে।

পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। কালীগঞ্জের দেবগ্রামে।

পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। কালীগঞ্জের দেবগ্রামে। ছবি: সন্দীপ পাল।

সন্দীপ পাল
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ০৮:৫৩
Share: Save:

গুলি করে, তার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে এক যুবককে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। নিহত হাফিজুর শেখ (৩৫) কালীগঞ্জের পচা চাঁদপুরের রেললাইন পাড়ার বাসিন্দা। শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ির কাছেই তাঁকে খুন করা হয়। খুনের পর পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে অনেক রাত পর্যন্ত দেহ আটকে রাখেন নিহতের আত্মীয়-পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অনেক রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে জাতীয় সড়কের ধারে ক্যারম খেলছিলেন হাফিজুল। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। অভিযোগ হাফিজুল ছুটে পালাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ও মৃত্যু নিশ্চিত করতে কোপানো হয় বলেও অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, আততায়ীরা কেউ-কেউ পুলিশের মতো খাকি পোশাক পরে এসেছিল।

নিহতের এক দাদা সুকু শেখ সিপিএমের টিকিটে দেবগ্রাম পঞ্চায়েতে আসন জিতলেও বর্তমানে তৃণমূলের সমর্থক বলে নিজের পরিচয় দেন। তাঁর অভিযোগ, “পরিকল্পিত ভাবে আমার ভাইকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ সব জানত, কিছুই করেনি।” যদিও পুলিশ আগাম খবর থাকা বা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ভোট গণনার তিন দিন আগে এই খুনে ক্রমশ রাজনৈতিক দাবি-পাল্টা দাবির তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁরা এখন তৃণমূূূূূূূূূূূূল সমর্থক বলে সুকু শেখ দাবি করলেও হাফিজুরের স্ত্রী সখী বিবির দাবি, তাঁর স্বামী সিপিএমই করতেন। তার জেরে তৃণমূলের লোকেরাই তাঁকে খুন করেছে। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সংখ্যালঘু-প্রধান এই এলাকায় গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই সিপিএমের নতুন করে উত্থান হয়েছে। সেই প্রবণতা লোকসভা নির্বাচনেও জারি থেকে থাকলে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট ভেঙে যাওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

আবার হাফিজুরের এক ভাই জয়নুদ্দিন মোল্লার দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁরা সিপিএম করেছিলেন ঠিকই, তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি যোগ দেন। সেই কারণেই তৃণমূলের ।দুষ্কৃতীরা হাফিজুরকে খুন করেছে। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সঙ্গে ও পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস। পরে তিনি দাবি করেন, “জয়নুদ্দিন মোল্লা ওরফে বগার নেতৃত্বে ওই গ্রামের অনেকেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। সেই কারণেই এই খুন।”

তবে পুলিশের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই এই হামলা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে তাদের ধারণা। আততায়ীদের ধরার চেষ্টা হচ্ছে। কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদও দাবি করেন, “এটা রাজনৈতিক কোনও ঘটনা নয়। পুলিশ তদন্ত করছে। দোষীরা গ্রেফতার হলেই খুনের আসল কারণ বোঝা যাবে।’’

আর, কাঁদতে-কাঁদতে সখী বিবি বলেন, “আমার স্বামীকে ওরা খুন করে দিল। ছোট-ছোট বাচ্চাগুলোর কী
হবে এখন?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy