চাকরি গিয়েছে বহু জনেরই। কিন্তু তার মধ্যে যাঁদের পরিচয়ে দলীয় ছোঁয়াচ আছে বা যাঁরা নেতা-বিধায়কের আত্মীয়, তাঁদের রাজনীতির নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারাদের তালিকায় আছেন শান্তিপুরের নৃসিংহপুর হাই স্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষিকা ব্রততী দেবনাথ। ঘটনাচক্রে, তিনি তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার ভাইঝি। তৃণমূল-সংযোগের কথা তুলে বিরোধীরা তাঁর যোগ্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত প্রথম বিভাগে পাশ করে এসেছেন, পরে বিএড-ও করেছেন জানিয়ে শনিবার ব্রততী বলেন, "আমি নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি। সব সময় রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছি। কাকা বিধায়ক ঠিকই, কিন্তু তাঁর পরিচয় কোথাও দিইনি। চাকরি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কখনও কথাও হয়নি।” তাঁর প্রশ্ন, “কেবল পারিবারিক পরিচয়ের কারণেই এ সব কথা শুনতে হবে?”
এই প্রসঙ্গে শুক্রবার যিনি মুখ খুলেছিলেন, সিপিএমের সেই তেহট্ট দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাস এ দিনও দাবি করেন, “তৃণমূলের নেতারা তো সব নিজেদের লোকেদের চাকরি দিয়েছেন!” তৃণমূল নেতার কোনও আত্মীয় কি নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেতে পারেন না? সুবোধ বলেন, “তা পারেন, সেটাও হতে পারে।” কালীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভানেত্রীর চাকরি যাওয়া নিয়েও একই রকম কটাক্ষ করেছে সিপিএম। এ দিন অবশ্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
শান্তিপুরের একটি স্কুল থেকে চাকরি গিয়েছে এক বিজেপি নেতার স্ত্রীরও। দর্শনে স্নাতকোত্তর ওই শিক্ষিকা আগে প্রাথমিক স্কুলে ছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, “আমি দু’বার নেট পাশ করেছি। সেট-ও পেয়েছি। রাজনীতির সঙ্গে আমার যোগ নেই। কেন আমায় অগ্নিপরীক্ষার মুখে দাঁড় করানো হচ্ছে?" বিজেপির পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, "নিজেদের অযোগ্য লোকেদের বাঁচাতে তৃণমূল যোগ্যদেরও বলি দিয়েছে।" তৃণমূলের দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “কারা যোগ্য বা অযোগ্য তা স্থির করছে তদন্তকারী সংস্থা। কোনও নিরপরাধ যেন সাজা না পায়।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)