শুভ মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র
লেখাপড়ায় মতি নেই ছেলের। এ দিকে পকেটে মোবাইল ফোন কেনার রসিদ! বকাঝকা করেছিলেন মা। তার পরেই উধাও হয়ে গিয়েছে বছর তেরোর শুভ মণ্ডল।
বেলডাঙা শ্রীশচন্দ্র বিদ্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শুভ যে প্রায়শই স্কুল কামাই করত, তা বলছে হাজিরা খাতা। সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম জানান, জানুয়ারিতে সে মাত্র তিন দিন স্কুলে এসেছিল। যদিও প্রায় নিয়মিতই সে স্কুলের পোশাক পরে বাড়ি থেকে বেরোত।
বৃহস্পতিবারও বেলা ১০টা নাগাদ স্কুল ইউনিফর্ম নীল প্যান্ট-সাদা জামা পরে বিশুরপুকুর গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল শুভ। মোবাইলে ফোন করা হলেও দু’বার বাজার পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার নিখোঁজ বেলডাঙা থানায় ডায়েরি করা হয়েছে। শনিবার রাত পর্যন্ত তার খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন:
কানে আঙুল দিয়েও এড়ানো যাচ্ছে না এয়ার হর্নের দাপট
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুভরা দুই ভাইবোন। বাবা কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। পড়াশুনোয় মনোযোগী না হওয়ায় প্রায়ই বাড়িতে বকা খেত শুভ। এর মধ্যে ভাল মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য সে বায়না ধরে বসে। বাড়ির লোকজন জানান, মাধ্যমিক পাশের পরে মোবাইলের কথা ভাবা যাবে। তার আগে নয়। এ নিয়ে প্রায়ই মা মমতা মণ্ডলের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার সকালে পড়তে বসা নিয়ে যখন ছেলের সঙ্গে মায়ের তর্কাতর্কি হচ্ছে, সেই সময়েই শুভর জামার পকেটে মোবাইল কেনার রসিদ পান মমতা। জানতে চান, শুভ কোথা থেকে টাকা পেল? সে কি তা বন্ধুদের থেকে ধার করেছে? নাকি, কোনও অসদুপায়ে হাতিয়েছে? ধার করেছে ফোনের দোকানে?
শুভ কোনও কথার উত্তর দেয়নি। বইখাতা তুলে রেখে, স্নান করে খেয়ে স্কুলের পোশাক পরে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। তার পরেই বেপাত্তা। সব আত্মীয়ের বাড়ি খোঁজাখুঁজি হয়ে গিয়েছে। খবর পাঠানো হয়েছে শুভর বাবাকে। তার খুড়তুতো দাদা পীযূষ মণ্ডল বলে, ‘‘এ দিন বিকেলেই ওর ফোন নম্বরে আমরা দু’বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। দু’বার বাজার পরে ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা সেই নম্বর পুলিশকে জানিয়েছি।’’
আব্দুল হালিম বলেন, ‘‘ছেলেটি কিছুটা চঞ্চল প্রকৃতির ছিল। নিয়মিত স্কুলে আসত না। উপস্থিতির খাতায় দেখলাম, বৃহস্পতিবারও আসেনি।’’ শুভর বন্ধু সৈকত বিশ্বাস তাঁদের জানিয়েছে, সে নাকি মাঝে-মাঝেই বাড়ি থেকে পালানোর কথা বলত। সত্যিই পালাবে, তা তারা ভাবেনি। পুলিশ জানায়, ছেলেটিকে খুঁজে বের করার জন্য সব রকম সূত্র ঘাঁটা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy