মিড ডে মিলে পেট ভরছে না। ফরাক্কার মুস্কিনগর প্রাথমিক স্কুলে বহু পড়ুয়ারই অভিযোগ এমনটাই। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন ফরাক্কার বিডিও ও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে। বিডিও সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “স্কুলে গিয়ে আমি পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলব। আর কোনও স্কুলে এমন সমস্যা রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তাদের প্রত্যেকের জন্য বাড়তি চাল বরাদ্দ করা হবে। স্কুলের একজন ছাত্রকেও অর্ধভুক্ত রাখা যাবে না।” অশিক্ষা এবং দারিদ্রে মুর্শিদাবাদে উপরের সারিতে রয়েছে মুস্কিনগর এলাকা। মূলত বিড়ি শ্রমিকদেরই বাস এখানে। হতদরিদ্র পরিবার থেকে আসা ছেলেমেয়েরা অনেকেই বাড়িতে ঠিকমতো খেতে পায় না। মিড-ডে মিল বড় ভরসা তাদের।
মুস্কিনগর প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩৮১। শিক্ষক রয়েছেন ৭ জন। মিড ডে মিলের দায়িত্বে রয়েছে পাঁচ জনের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। শিশু শ্রেণি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি মিলিয়ে ছাত্র সংখ্যা ২০৩। বাকি ১৭৮ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে। প্রধান শিক্ষক ওবাইদুর রহমান জানান, ছেলেমেয়েরা একটু বেশি বয়সেই স্কুলে ভর্তি হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র প্রতি ১০০ গ্রাম চালের ভাত বরাদ্দ। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রদের তাতে হয় না। এতদিন স্কুলে খিচুড়ি খাওয়ানো হত। তাই পেট ভরানো নিয়ে সমস্যা তেমন প্রকট ছিল না। সপ্তাহে ছয়টি কর্ম দিবসের মধ্যে পাঁচ দিনই খিচুড়ি রান্না হত। চাল, ডাল, আনাজপাতি মিলিয়ে একটু বেশি করে জল দিয়ে ফুটিয়ে দিলেই পেট ভরত সকলের। কিন্তু ১৪ জুলাই থেকে ফরাক্কা এলাকায় নতুন খাদ্য তালিকা নির্ধারিত হয়েছে। সেই অনুযায়ী সপ্তাহে পাঁচ দিনই ভাত খেতে দেওয়ার কথা ছাত্রছাত্রীদের। সঙ্গে দু’রকমের তরকারি, দু’দিন ডিম। ভাতে জল মেশালে তা পরিমাণে বাড়ে না। তাই ক্রমশ সঙ্কট বাড়ছে।
স্কুলের এক শিক্ষক রঞ্জিত দাস বলেন, “প্রথমে শিশু শ্রেণি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা খেয়ে নেয়। তারপর বসে তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণির ছেলেমেয়েরা। তখন তারা মুখ ফুটে দু’বার ভাত চাইলে আমাদের কিছুই করার থাকে না।” এমন অসহায় অবস্থার কথা জানিয়েছেন মিড ডে মিলের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্ত্রী মেঘনারা বিবি। তিনি বলেন, “গড় ছাত্র হাজিরার হিসাবে ১০০ গ্রাম করে চাল বরাদ্দ করা হয়। আমরা চাইলেও বেশি রান্না করতে পারি না।”
ফরাক্কার মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের মোক্তারি বিবি বলেন, “অভুক্ত পড়ুয়াদের এই সমস্যা নিয়ে বিডিও’র সঙ্গে কথা বলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy