কেশিয়াড়ি মার্কেট কমপ্লেক্সের বন্ধ স্টল।
দশ বছরেও চালু হয়নি কেশিয়াড়ি মার্কেট কমপ্লেক্সের একাংশ স্টল। কমপ্লেক্সের চালু হওয়া অংশেও সম্পূর্ণ হয়নি পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ। কবে স্টলের কাজ শেষ হবে, তা নিয়েও চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।
কেশিয়াড়ি বাজারের উপর ব্লকের ন’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ নির্ভরশীল। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকেই কেশিয়াড়িতে মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার জন্য আবেদন জানানো হয়। ২০০২ সালে পঞ্চায়েত সমিতি মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো কেশিয়াড়ি মোড় থেকে ভসরা যাওয়ার রাস্তার ডান দিকে ওই মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ঠিক হয়, এলাকার জমিদার মুকুন্দ দেবের পুকুরের পাড়ে ২ একর ৫৪ ডেসিমেল জমির ওপর ওই কমপ্লেক্স হবে। মোরাম ফেলে ৪২টি স্টল গড়া হয়। ১৬টি স্টল মাছের ও বাকিগুলি সব্জি ব্যবসার জন্য লিজে দেওয়া হয়।
২০০৪ সালে পঞ্চায়েত সমিতি ফের ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আরও ৩৪টি স্টল গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। তার মধ্যে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৪টি স্টল গড়া হলেও তা বিলি করা হয়নি। অভিযোগ, বাম আমলেও ওই স্টলগুলি বন্টনে কোনও তৎপরতা দেখানো হয়নি। বিডিও’র উদ্যোগে ২০১২ সালে ৩৪টি মধ্যে ২৪টি স্টল ভাড়ার ব্যবস্থা করে বিলি করা হয়। এমনকী ব্যবসায়ী সমিতির হাতে থাকা ৪৬টি স্টলও পঞ্চায়েত সমিতির হাতে আসে। সেখান থেকে প্রতি মাসে পঞ্চায়েত সমিতি ৪৪ হাজার টাকা ভাড়া পায়। ব্লকের বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী বলেন, “আমি আসার পরে ২৪টি স্টল বন্টন করে দিয়েছি। ব্যবসায়ী সমিতির হাতে থাকা স্টল পঞ্চায়েত সমিতির হাতে ফিরিয়েছি। ওই বিষয়ে পদক্ষেপ করব।”
বাজারে থমকে নির্মাণ কাজ। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
অসমাপ্ত স্টলগুলি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। স্টলের সামনে জমছে বাজারের আবর্জনার স্তূপ। তৈরি হয়নি সীমানা প্রাচীরও। বাজারের মধ্যে কংক্রিটের প্ল্যাটফর্ম ও রাস্তাও তৈরি হয়নি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে নেমে ওই মার্কেট কমপ্লেক্স নিয়ে সুর চড়িয়েছিল তৃণমূল। সিপিএমও অর্ধসমাপ্ত স্টল গড়ে সিপিএমও ৩৪টি স্টল বিলির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিল। নির্বাচনে পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। অভিযোগ, তারপরেও অর্ধসমাপ্ত স্টল নির্মাণে উদাসীনতাই দেখা গিয়েছে। সিপিএম জোনাল সম্পাদক ভবানী গিরির দাবি, ওই মার্কেট কমপ্লেক্সের যা কিছু কাজ আমাদের সময়েই হয়েছে। কিন্তু ২০০৯ সালের পরে কেশিয়াড়িতে মাওবাদী উপদ্রুব বাড়ায় কাজে বাধা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “এখন তো তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতিও কোনও কাজই করছে না। টাকা আসছে, আর নয়ছয় হচ্ছে।” কেশিয়াড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অনন্ত দাস বলেন, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই করছি বলেই বিডিও-র উদ্যোগে ২৪টি দোকান খোলা হয়েছে। অসমাপ্ত ১০টি স্টল খোলার জন্য বহু আবেদন করেছি। আমাদের দাবি, অবিলম্বে স্টলগুলি চালু করতে হবে।” তাঁর দাবি, শৌচাগারে তালা থাকছে। নিরাপত্তারক্ষীরও দেখা মেলে না। ফলে দোকানদারদের ক্ষোভ বাড়ছে। আমরা বিষয়গুলিতে নজর দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।”
তবে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অশোক রাউথের আশ্বাস, “আমরা বাজারের পরিকাঠামোগত বিষয়ের উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। ওই মার্কেট কমপ্লেক্সে খুব শীঘ্রই যাতে ওই ১০টি অসমাপ্ত স্টল নির্মাণ করে লিজ দেওয়া যায়, তার পরিকল্পনা হচ্ছে।” বিডিও বলেন, “এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। ওই স্টলগুলি বিলি করে যাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে দোকানিরাই বাকি অংশ নির্মাণ করে নেন, সেই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে। আশা করছি, এভাবে এগোলে অসমাপ্ত ১০টি স্টল দ্রুত চালু করা যাবে। তার পরেই বাজারের মোরামের অংশে কংক্রিটের রাস্তা করারও পরিকল্পনা রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy