সাংগঠনিক একতা বাড়ানো ও দলকে মজবুত করার প্রয়োজনীয়তার দিকে নজর। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দলীয় পতাকা নেই। তবে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের সকলেই তৃণমূলের নেতা-নেত্রী, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি। এমন আবহে রবিবার তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে এক বেসরকারি অতিথিশালায় আয়োজিত হয় ভাই ফোঁটা উৎসব। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী দিলাপরোজ় খাতুনের উদ্যোগেই হয়েছিল এ দিনের আয়োজন।
ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে তৃণমূল অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। ব্লকে দলের অবস্থা মোটেই ভাল নেই বলে দলীয় সূত্রের খবর। এ জন্য দলের ব্লক নেতৃত্বের গোষ্ঠী কোন্দলকেও দায়ী করা হয়। পরবর্তী বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এই ব্লকে দলের মধ্যে সাংগঠনিক একতা বাড়ানো ও দলকে মজবুত করার প্রয়োজনীয়তার দিকে নজর রেখেই দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে এই ধরনের এই উৎসবের আয়োজন হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মাইতি, জেলা সহ-সভাপতি শরৎ মেট্যা, জেলা পরিষদের নারী-শিশু উন্নয়ন কর্মাধ্যক্ষ মামনি জানা, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল সভাপতি রাজেশ হাজরা-সহ অনেকে।
দলীয় সূত্রের খবর, গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় অধিকাংশ ব্লকে তৃণমূল জয় পেলেও শহিদ মাতঙ্গিনী, নন্দীগ্রাম-১, ২, কাঁথি- ১ ও খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়লাভ করে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। এর মধ্যে তমলুক বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধী দলনেত্রী হয়েছিলেন তৃণমূলের সদস্য দিলাপরোজ় খাতুন। চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনে তমলুক কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থীর জয় হয়। এরই পাশাপাশি ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে তৃণমূল অনেকটা পিছিয়ে যায়। দলের ব্লক নেতৃত্বদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলও বাড়ে। এই ব্লকে তৃণমূলের সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটাতে হস্তক্ষেপ করেন খোদ জেলাপরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক। সম্প্রতি উত্তম ব্লকের স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন এবং সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করার জন্য ব্লক নেতৃত্বকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেন। তার পরই এমন ‘ভাই ফোঁটা’ উৎসবের আয়োজন। ব্লকের নেতা-কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্কের যাতে উন্নতি হয় এবং অভ্যন্তরীণ বিবাদ মেটে, সেই কারণেই এই ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানের আশ্রয় শাসক দল নিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রবিবার এই ‘ভাই ফোঁটা উৎসবে’ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের মহিলা সদস্যরা দলের নেতা-কর্মীদের ভাই ফোঁটা দেন। খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও ছিল। অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক লড়াইয়ের বার্তা দেন। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দিতেই ভাই ফোঁটা উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে সম্প্রীতি রক্ষা ও রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করা।’’
এ দিন তমলুক শহরের কলেজ পাড়ায় কালীপুজো উপলক্ষে একটি ক্লাবের তরফে গণ ভাই ফোঁটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পুজোর মণ্ডপের প্রাঙ্গণে তমলুক শহরের সংলগ্ন দামোদরপুর গ্রামের অনাথ আশ্রমের ২৫ জন আবাসিক, তমলুক শহরে ভবঘুর আবাসের ৪০ জন আবাসিক, ৭২ জন সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ অনেককে ফোঁটা দেওয়া হয়। ওই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর কানাইলাল দাস, গৌতম পাল ও চন্দন দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy