পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক উত্তম বারিক। নিজস্ব চিত্র।
তখন তিনি কংগ্রেসে। ২০১৩-য় জেলে গিয়েছিলেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সে বছরই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন উত্তম বারিক। তার পর কেটে গিয়েছে প্রায় এক দশক। মঙ্গলবার, সেই উত্তমই হলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি। তাঁকে এই পদে বসালেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলা তৃণমূলের অন্দরের খবর, সভাধিপতি পদে উত্তমের আগমণ আসলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সমীকরণের যোগফল। এক দিকে যেমন কাঁথির রাজনীতিতে একচেটিয়া ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত কারামন্ত্রী অখিল গিরির উপর রাশ টানা, অন্য দিকে, জেলা পরিষদের মাথায় থাকা নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের ক্ষমতা খর্ব। পাশাপাশি, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক কাঁথিকে বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া। মূলত, এই তিন সমীকরণের পাশাপাশি ভোটের মাঠে দাঁড়িয়ে যে ভাবে উত্তম তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন, তাতে খুশি দলনেত্রী। এ সবেরই পুরস্কার হিসেবে সভাধিপতির দায়িত্ব পেলেন উত্তম, এমনই মনে করছে জেলা তৃণমূলের অন্দরের লোকেরা।
কে এই উত্তম? কাঁথি ২ নম্বর ব্লকের সরদা অঞ্চলের বোটসাউড়ি গ্রামের শিক্ষক পরিবারে ১৯৭৩-এ জন্ম উত্তমের। বরাবরই ডানপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত উত্তম প্রথম থেকেই ছিলেন কংগ্রেসে। ২০১১-য় রাজ্যে যখন পরিবর্তন ঘটল তখনও তিনি ওই দলেই। তত দিনে এক জন দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ২০১৩-য় পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগে একাধিক অভিযোগে প্রায় ৫৯ দিন জেলবন্দি থাকতে হয়। উত্তম ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূলের মেদিনীপুরের নেতাদের চক্রান্তেই জেলে বন্দি থাকতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সেই সময় পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূল দেখত অধিকারী পরিবার। ইঙ্গিতটা অত্যন্ত স্পষ্ট।
এর পর ক্রমশ নিজের দক্ষ সাংগঠনিক ক্ষমতার জোরে ২০১৮-য় পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাঁথি-২ ব্লক থেকে জেলা পরিষদের আসনে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন উত্তম। গত বিধানসভা ভোটে দায়িত্ব বাড়ে উত্তমের। পাশাপাশি, কাঁথি থেকে অনেকটা দূরে পটাশপুর কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থীও করা হয়। সেখানে বিজেপিকে টক্কর দিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি। সম্প্রতি পুরসভা ভোটে নিজের প্রার্থীদের মনোনয়ন নিশ্চিত করে অখিল গিরির শিবিরকে ধাক্কা দিয়েছিলেন উত্তম। শুভেন্দুর খাসতালুকে দাঁড়িয়েও দলকে বিপুল ভোটে জয় এনে দেওয়ার বড় কৃতিত্ব এই উত্তমেরই বলে মত তৃণমূলের অন্দরে।
দায়িত্ব পাওয়ার পর উত্তম বলেন, “দলনেত্রীর নির্দেশ মেনেই কাজ করে চলেছি। আগামী দিনে নেত্রীর নির্দেশ মতোই গ্রামীণ রাস্তা ও বাংলার বাড়ি প্রকল্পকে বেশি করে প্রাধান্য দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy