নলকূপ বসানোর কাজ চলছে মেচেদা বাজারে। — নিজস্ব চিত্র।
রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও জাতীয় সড়কের মাধ্যমে যোগাযোগের সুবিধার জন্য দ্রুত হারে জনবসতি বাড়ছে এই অঞ্চলে। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র লাগোয়া এই জনপদকে পুরসভা হিসেবে গড়ে তোলার প্রশাসনিক প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী বাসিন্দা ও দোকান মিলিয়ে কয়েক হাজার জনবসতির মেচেদা বাজারে এখনও পানীয় জলের জন্য কোনও প্রকল্প নেই। জলের জন্য ভরসা বলতে কিছু নলকূপ ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসানো সাব-মারসিবল পাম্পের উপরই। এমনকি জলের চাহিদা মেটাতে অধিকাংশ ব্যবসায়ী চড়া দামে জল কেনেন বলেও অভিযোগ।
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক শহর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে মেচেদা রেলস্টেশন ঘিরে বাসস্ট্যান্ড ও বাজার গড়ে উঠেছিল অনেকদিন আগেই। পরবর্তী সময়ে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও হলদিয়া–মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরির ফলে মেচেদা বাজার এলাকায় দোকান ও জনবসতি বাড়তে থাকে। বর্তমানে মেচেদা পুরনো ও নতুন বাজার, মিনি মার্কেট, জাতীয় সড়ক এলাকা মিলিয়ে প্রায় এক হাজারের বেশি দোকান ও কয়েক হাজার বসতবাড়ি রয়েছে। অভিযোগ, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের শান্তিপুর পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে থাকা মেচেদা বাজার ও বসতি এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। ফলে ভরসা করতে হয় সরকারি নলকূপ বা সাব-মারসিবল পাম্পের তোলা জলের উপরেই। মেচেদা ফ্লাইওভারের নিচে খাবারের দোকানদার রবি হাজরার কথায়, ‘‘দোকানের জন্য প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ টিন (প্রতি টিনে ১৫ লিটার জল ধরে) জল প্রয়োজন হয়। কিন্তু পানীয় জল সরবরাহ তো দূরের কথা এখানে কাছাকাছি এলাকায় নলকূপই নেই। প্রতি টিন জল পিছু ১০ টাকা করে দিতে হয়।’’
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেচেদা বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত রেল দফতরে অনুষ্ঠানে এসে ঘোষণা করেছিলেন রেলের উদ্যোগে জল সরবরাহ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। কিন্তু ঘোষণাই সার। মেচেদা বাজার এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার বিষয়ে স্থানীয় শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তথা প্রাক্তন প্রধান পঞ্চানন দাস বলেন, ‘’রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জল সরবরাহ প্রকল্প গড়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে আসার পর রেল দফতর থেকে এ বিষয়ে আর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।’’ তবে তাঁর সংযোজন, ‘‘কোলাঘাট ব্লকে বড় জলপ্রকল্প গড়া চলছে। ওই জলপ্রকল্পের সাথে মেচেদা এলাকাকে যুক্ত করা হয় সে জন্য আমরা হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারীর কাছে প্রস্তাব দিয়েছি। দেখা যাক কী হয়!’’
কী হয় দেখার অপেক্ষায় মেচেদার বাসিন্দারাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy