Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

রেশনে কেরোসিন মিলছে না দু’সপ্তাহ, সমস্যায় গরিবেরা

টানা দু’সপ্তাহ কেরোসিন অমিল। কবে থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ফের কেরোসিন মিলবে, সে বিষয়েও নিরুত্তর জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। কোরোসিন না মেলায় সমস্যায় গরিব মানুষেরা। এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়মক পার্থপ্রতিম রায়ের সংক্ষিপ্ত জবাব, “আদালতের একটি নির্দেশের কারণে কেরোসিন দেওয়া যায়নি। শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলেই আমরা আশা করছি।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০১:২৮
Share: Save:

টানা দু’সপ্তাহ কেরোসিন অমিল। কবে থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ফের কেরোসিন মিলবে, সে বিষয়েও নিরুত্তর জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। কোরোসিন না মেলায় সমস্যায় গরিব মানুষেরা। এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়মক পার্থপ্রতিম রায়ের সংক্ষিপ্ত জবাব, “আদালতের একটি নির্দেশের কারণে কেরোসিন দেওয়া যায়নি। শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলেই আমরা আশা করছি।” শাসক দলের আশঙ্কা, পুরভোটের আগে বিরোধীরা এই বিষয়টিকে প্রচারের হাতিয়ার করতে পারে।

বৃহস্পতিবার ঘাটালে পুর ভোটের প্রচারে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা নেতারা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে কেরোসিনের বিষয়টি তাঁকে জানান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোন করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। খাদ্যমন্ত্রী ফোন করেন দফতরের আধিকারিকদের। সেখান থেকে ফোন যায় জেলাশাসক, জেলা খাদ্য নিয়ামকের কাছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিবার্চনের আগেই যাতে গণবনণ্টন ব্যবস্থায় কেরোসিন বণ্টন স্বাভাবিক করা যায় তার জন্য শুক্রবারই পদক্ষেপ করতে চলেছে খাদ্য দফতর। প্রশাসনিক এক কর্তার কথায়, “চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে সামনের সপ্তাহেই উপভোক্তাদের কেরোসিন দেওয়া যায়।”

জেলায় কেরোসিন অমিল হওয়ার কারণ কী? খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর ও ঝাড়গ্রাম মহকুমায় গণবণ্টনের কেরোসিন খোলাবাজারে দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি করার অভিযোগ ওঠে। যার পরিমাণ কয়েক হাজার লিটার। তা রুখতে খড়্গপুর ও ঝাড়গ্রাম মহকুমার প্রায় সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীকে অন্যত্র বদলির পাশাপাশি জেলার বরাদ্দও ছেঁটে ফেলা হয়। জেলার বরাদ্দ ছাঁটার সঙ্গে সঙ্গে যাঁরা জেলায় কেরোসিন সরবরাহ করেন সেই এজেন্টদেরও বরাদ্দ কমানো বাড়ানো হয়।

খাদ্য দফতর জানিয়েছে, এরই বিরুদ্ধে আদালতে যান এক কেরোসিন এজেন্ট। এজেন্টদের বরাদ্দ ছাঁটার ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি মানা হয়নি বলে আদালতে আবেদন জানান। তারপরই আদালত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় যে, এ বিষয়ে পুনরায় শুনানি করে ঘটনার নিষ্পত্তি করতে। ওই নির্দেশ পাওয়ার পরেই রাজ্য থেকে জেলাকে কেরোসিন বণ্টন বন্ধ রাখতে বলা হয়। ফলে ১৫ মার্চ শেষ কেরোসিন পেয়েছিলেন উপভোক্তারা। পরের সপ্তাহে কেরোসিন মেলেনি। যেহেতু এই মাসে ৫টি সপ্তাহ (পাঁচটি রবিবার হলে ৫ সপ্তাহ ধরা হয়। কারণ, শনিবার ও রবিবার কেরোসিন দেওয়া হয় রেশনে), তাই শেষ সপ্তাহে এমনিতেই কেরোসিন দেওয়ার কথা নয়।

তবে চলতি মাসেও প্রথম সপ্তাহে কেরোসিন পাবেন না উপভোক্তারা। কারণ, এ বারও রাজ্যের নির্দেশে বরাদ্দ করা যায়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার শুনানির পর সমস্যা মেটোনোর চেষ্টা করা হবে। তা হলে পরের সপ্তাহ অর্থাত্‌ চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কেরোসিন দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু যে সপ্তাহগুলি কেরোসিন থেকে বঞ্চিত হলেন উপভোক্তারা, তার কী হবে? খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মাসের বরাদ্দ না তুললে তা পরের মাসে তোলা যায় না। ফলে এক সপ্তাহের বরাদ্দ থেকে উপভোক্তারা বঞ্চিতই থেকে যাবেন! গরিব উপভোক্তারা বঞ্চিত হবে জেনেও কেন আগে থেকে পদক্ষেপ করল না প্রশাসন? এ ব্যাপারে অবশ্য সদুত্তর মেলেনি। অভিযোগ, খাদ্য দফতরের উদাসীনতার কারণেই উপভোক্তারা বঞ্চিত হলেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE