রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া সবই হয়েছে পঞ্চায়েতে। এ বার থেকে সেখানেই থাকবেন বলে জানালেন অভিযোগকারী ও তাঁর পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনার বাড়ি না পেয়ে অভিনব প্রতিবাদ এক দম্পতির। সপরিবার গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে হাঁড়ি-কড়া নিয়ে এসে রান্না করে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজন বাড়ির সকলে। এমনকি, আবাস যোজনার বাড়ি না পাওয়া পর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিসেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানালেন দম্পতি। ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ব্লকের শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মণিকাঞ্চন দত্ত আবাস যোজনায় বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আবাস যোজনার তালিকায় দেখেন তাঁর পাকা বাড়ি আছে! তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন যে, স্থানীয় তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি পঞ্চানন দত্তের নামে পাকা বাড়ি হচ্ছে। অথচ নাম রয়েছে তাঁর। মণিকাঞ্চনের অভিযোগ, ২০১৭-২০১৮ সালের আবাস যোজনার যে তালিকা তৈরি হয় সেখানে প্রভাব খাটিয়ে মণিকাঞ্চনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করেন। তার পর নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য ঢুকিয়ে দেন। তাই আবাস যোজনার টাকাও তৃণমূল নেতা পেয়েছেন। এই অভিযোগে পঞ্চায়েত প্রধান শিপ্রা বেজের দ্বারস্থ হলে তিনি কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ।
পরে পঞ্চায়েতের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি আবাস যোজনায় পাওয়া টাকা ফিরিয়ে দেবেন মণিকাঞ্চনকে। ওই টাকায় বাড়ি করবেন তিনি। সেই মতো মণিকাঞ্চন পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ, প্রথমে কয়েক হাজার টাকা দিলেও পুরো টাকা দিতে অস্বীকার করেছেন ওই তৃণমূল নেতা।
অন্য দিকে, পরিবারকে নিয়ে বসবাসের অসুবিধা হচ্ছে তাঁদের। এ নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গেলে তিনি আর বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাননি বলে অভিযোগ। অগত্যা মঙ্গলবার হাঁড়ি-কড়া, গ্যাস-অভেন ইত্যাদি নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে হাজির হন মণিকাঞ্চন। সেখানে সব্জি কাটেন। স্ত্রী রান্না করেন। তার পর সপরিবার পঞ্চায়েত অফিসের মেঝেতে বসে মধ্যাহ্নভোজন করেন।
মণিকাঞ্চনের কথায়, ‘‘আমার নামে আবাস যোজনার বাড়ির টাকা তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি পঞ্চানন দত্ত এগজিকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে নিয়েছেন। তিনি এখন বাড়িতে এসি লাগিয়েছেন আমার টাকায়! আমি আছি ভাঙা ঘরে। ও ভাবে বসবাস করা যায় না। তাই তাই এখানেই এখন থাকব আমি।’’
এ নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, ‘‘আমি পঞ্চানন দত্তকে ডেকে পাঠিয়েছি। উনি এলে বিষয়টির সুরাহা হবে। এর আগে অঞ্চল অফিসে বসে আলোচনা করে স্থির হয় যে, আবাস যোজনার বাড়ির টাকা পঞ্চানন দত্ত কিস্তি মারফত মণিকাঞ্চন দত্তকে ফিরিয়ে দেবেন। ৫৭ হাজার টাকা পর্যন্ত ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা দিয়ে মণিকাঞ্চন বাড়ির কিছুটা অংশ নির্মাণ করেছেন।’’
কিন্তু এক জনের আবাস যোজনার বাড়ির টাকা প্রভাব খাটিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে কেন কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? প্রধানকে এই প্রশ্ন করতে তাঁর উত্তর, ‘‘এই বিষয়টি সবাই জানেন। আমি চেষ্টা করছি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।’’ অন্য দিকে, অভিযুক্ত পঞ্চাননের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy