একে অপরের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করলেন স্বামী ও স্ত্রী। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
সালিশি সভায় তুলে এনে মহিলাকে বেধড়ক মারধর করে ডিভোর্সের কাগজে সই করিয়ে তাঁর জায়গাজমিও লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামী-সহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হয় বধূকে। সেই টাকা দিতে না পারায় তাঁকে গ্রামছাড়া করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার চুনাখালি গ্রামে। এ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা। অন্য দিকে, অভিযুক্ত স্বামী এবং গ্রাম কমিটির দাবি, ওই মহিলা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এই কারণে তাঁকে সালিশি সভায় এনে বিচ্ছেদ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
শ্যামলী শাসমল নামে ওই বধূর অভিযোগ, “বছর ১০ আগে ক্ষুদিরাম শাসমলের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। পর পর তিনটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর ঝামেলার শুরু। স্বামী আমাকে ওড়িশায় কাজ করতে পাঠিয়েছিল। এখন ও-ই আমার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ করছে।’’ শ্যামলীর দাবি, ওড়িশা থেকে বাড়ি ফিরতেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন স্বামী। এর পর সালিশি সভায় ডেকে জোর করে তাঁর নামে থাকা সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়া হয়। তার পর একটি নোটারি পেপারে সই করিয়ে নিয়ে বলা হয়, খোরপোশের দাবি ছাড়া তাঁদের ডিভোর্স হয়েছে।
বধূর এ-ও অভিযোগ, সালিশি সভাতেও তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘মারধরের পর আমাকে বলা হয়, স্বামীকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তার মধ্যে গ্রাম কমিটিকে সালিশি করার জন্য ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার দাবি করা হয়। সেই টাকা দিতে না পারায় আমাকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ এই সব অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন মহিলা। সেখানে তিনি এ-ও জানান যে, ৩ দিন আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে নিয়েছেন স্বামী।
অভিযুক্ত ক্ষুদিরামের দাবি, “স্ত্রী অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছে। ডিভোর্স দেওয়ার জন্য আমি গ্রাম কমিটির কাছে যাই। গত ১০ বছরে আমি যা রোজগার করেছি, তার সমস্তটাই স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছি। ওর নামে জায়গাও কিনে দিয়েছিলাম। গ্রাম কমিটির সালিশিতে সেই জমিজমাও ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানাই। তা ছাড়া, আমার সমস্ত টাকা ফেরত চাই। সবার সম্মতিতে আমার কিনে দেওয়া সম্পত্তি স্ত্রীর কাছ থেকে ফেরত নিয়েছি। এবং ডিভোর্স পেপারে সই করেছি। তার পরে আমি আর একটা বিয়ে করেছি।” কিন্তু সালিশি সভায় কেন ডিভোর্স চাইতে গেলেন? তার কোনও উত্তর দেননি ক্ষুদিরাম। তাঁর অভিযোগ, ‘প্রাক্তন’ স্ত্রীর প্রেমিক তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। তাই সালিশিতে তাঁর স্ত্রীকে মারধর করা হয়েছে। ক্ষুদিরামের সংযুক্তি, ‘‘গ্রাম কমিটি শ্যামলীকে ২ মাস সময় দিয়েছিল। আবার আমার সঙ্গে ঘর করার কথা বলে। কিন্তু আমার সঙ্গে ও ঘর করতে রাজি হয়নি। তাই উকিলের কাছ থেকে ডিভোর্স পেপারে সই করে আবার বিয়ে করেছি।”
অন্য দিকে, গ্রাম কমিটির এক সদস্য শম্ভু সিংহ মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রাম কমিটির সালিশিতে শ্যামলীকে স্বামীর কেনা সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছিল। তাই একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করে গ্রাম কমিটিকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছেন ওই মহিলা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy