Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ক্ষুদ্র ক্ষমতায় সাহায্যের আশ্বাস শুভেন্দুর

নন্দীগ্রাম-জঙ্গলমহলের আন্দোলনের কথা বলে ফের সূক্ষ্ম ভাবে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা স্মরণ করিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ফুরফুরা দরবার শরিফ মোজাদ্দেদিয়া অনাথ ফাউন্ডেশন ও পশ্চিম মেদিনীপুর ইমাম এণ্ড মোয়াজ্জেম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর যৌথ উদ্যোগে রবিবার মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে এক সভার আয়োজন করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০১:১২
Share: Save:

নন্দীগ্রাম-জঙ্গলমহলের আন্দোলনের কথা বলে ফের সূক্ষ্ম ভাবে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা স্মরণ করিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ফুরফুরা দরবার শরিফ মোজাদ্দেদিয়া অনাথ ফাউন্ডেশন ও পশ্চিম মেদিনীপুর ইমাম এণ্ড মোয়াজ্জেম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর যৌথ উদ্যোগে রবিবার মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে এক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই ফুরফুরা শরিফের ত্বহা সিদ্দিকির পাশে থেকে শুভেন্দুবাবু বলেন, “আমি মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র। এক সময় পুরসভার কাউন্সিলর ছিলাম। তারপর বিধায়ক থেকে এখন সাংসদ। এই পদগুলোকে আমি বড় বলে মনে করি না। কেউ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের সেবা করেন। কেউ সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের সেবা করেন। আমি রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে চাই। নন্দীগ্রামে আন্দোলন করেছি। জঙ্গলমহলে আন্দোলন করেছি। ভাদুতলা থেকে শুরু করে বেলপাহাড়ি-বাঁশপাহাড়ি গিয়েছি। এক সময় সন্ধ্যার পর মানুষ বেরোতে পারতেন না। আমি এই সব এলাকাগুলোয় কাজ করেছি। এখন এখানে শান্তি ফিরেছে।” এরপরই তাঁর সংযোজন, “যে কোনও অনুষ্ঠান হলে ডাকবেন। যে কোনও সমস্যা হলে আমার হস্তক্ষেপ চাইবেন। আমি সাধ্য মতো চেষ্টা করব। সব কাজ হয়তো করতে পারব না। অত ক্ষমতা আমার নেই। আমি ক্ষুদ্র ক্ষমতার অধিকারী।”

ত্বহা সিদ্দিকির প্রশংসা করে শুভেন্দু অধিকারীর সংযোজন, “বেশ কয়েক বছর হল ওঁর সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। নানা জায়গায় যখন অনুষ্ঠান হয়, উনি আমাকে ডাকেন। ওঁর ডাককে আমি অনুরোধ বলে মনে করি না। নির্দেশ বলেই মনে করি। উনি সমাজের নেতা, মানুষের নেতা। ওঁর দোয়া আমার মাথায় সব সময় বর্ষিত হয়। এ বার আমি গতবারের থেকেও ব্যবধান বাড়িয়ে জিতেছি (তমলুকে)। এর কৃতিত্ব ওঁরও রয়েছে। ওঁর দোয়া আমার উপর সামান্য মেদিনীপুরের ভূমিপুত্রের ওপর বর্ষিত হয়েছে।”

পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্য-সহ ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের উন্নয়নের স্বার্থে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় শুভেন্দুকে ‘বাংলার কৃতী সাংসদ, জনপ্রিয় জননেতা’ হিসেবেই সম্বোধন করেন উদ্যোক্তারা। পরে বলতে উঠে তমলুকের সাংসদ বলেন, “আমি সব ধর্মে বিশ্বাস করি। আমি নির্দিষ্ট ধর্মের বেড়াজালের মধ্যে থাকি না। মন্দিরে যাই, মসজিদে যাই, চার্চেও যাই।” পরে বলতে উঠে ত্বহা সিদ্দিকি বলেন, “ইমাম-মোয়াজ্জেমদের দাবি আগেও ছিল। অনেক ওয়াকফ সম্পত্তি বেহাত হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ভাতা ঘোষণা করবেন। উনি ঠিক তাই করেছেন। এটা সরকারের টাকা নয়, এটা মুসলমানদের টাকা। ওয়াকফ বোর্ডের টাকা। অনেকে অবশ্য ভাতা ঠিক মতো পাচ্ছেন না। কেউ ছ’মাস পর পাচ্ছেন। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। কংগ্রেস-সিপিএম মুসলমানদের ঠকিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী শুধু মুসলমানদের কথা ভাবেন না। বাংলার মানুষের কথা ভাবেন। উনি ক্ষমতায় এসেছেন। এ জন্য মুসলমানদের কতটা অবদান আছে, তা উনি জানেন। মনে রাখবেন, সরকারের কাছে কিছু চাওয়াটা ভিক্ষা নয়, এটা অধিকার।”

রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর এই দিনই প্রথম মেদিনীপুরে আসেন তমলুকের সাংসদ। মেদিনীপুরে এসে তিনি যেমন সংবর্ধনা পেয়েছেন, তেমন কর্মী-সমর্থকেরাও জয়ধ্বনি তুলে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। অবশ্য, এ দিন মেদিনীপুরে তাঁর কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। দুপুরে শহরে ঢোকার পর কর্ণেলগোলার কাছে এক ক্লাবের সদস্যরা তাঁকে সংবর্ধিত করেন। রাস্তায় গাড়ি আটকে তাঁর হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেওয়া হয়। ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা শঙ্কর মাঝি। শহরে ঢোকার পর যান বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্কে। মাস কয়েক আগে তিনি এই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। পরে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা-কর্মী ব্যাঙ্কে এসে শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করেন। আসেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ, জেলা তৃণমূলের আর এক কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তী, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ।

অন্য বিষয়গুলি:

subhendu adhikary medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE