Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Industry

কারখানার গেট আটকে বিক্ষোভ জমিদাতাদের, দাবি চাকরির

এ দিন কারখানায় নির্মাণ শ্রমিকদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে নালিশ কর্তৃপক্ষের। পরে বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যাসাগর শিল্পতালুক।

বিদ্যাসাগর শিল্পতালুক। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৩১
Share: Save:

শিল্পতালুকের জন্য জমি অধিগ্রহণের সময় জমিদাতা পরিবারকে কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। বাম জমানায় সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হলেও সরকার বদলের পরে তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছিল। এ বার প্রস্তাবিত রং কারাখানার গেট আটকে তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতেই জমিদাতা পরিবারে স্থায়ী কাজের দাবিতে বিক্ষোভ হল খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে।

গত ২১ অক্টোবরও এই কারখানার জমিদাতাদের সামনে বিক্ষোভ হয়েছিল। তবে সে দিন গেট আটকানো হয়নি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ২০০৮ সালে জমি অধিগ্রহণ শুরুর সময়ে প্রতি জমিদাতা পরিবার পিছু চাকরির কথা জানানো হয়েছিল। সেই জমিতেই রং তৈরির কারখানা হয়েছে। কিন্তু সেখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া চললেও জমিদাতা পরিবারের সদস্যদের এখনও স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়নি। এ দিন জমিদাতা পরিবারকে স্থায়ী চাকরি দেওয়া ছাড়াও গ্রামবাসীর কাজ ও এলাকায় সুষ্ঠু জলনিকাশির দাবিও জানানো হয়। জমায়েতের পুরোভাগে তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা ছিলেন, তবে দলের পতাকা বা ব্যানার ছিল না। জমিদাতা পরিবারের সদস্য হিসাবেই ওই তৃণমূল নেতারা উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি।

এ দিন কারখানায় নির্মাণ শ্রমিকদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে নালিশ কর্তৃপক্ষের। পরে বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঘন্টা দু’য়েক বিক্ষোভের পরে পুলিশও পৌঁছয়। এরপর শ্রমিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়। বিক্ষোভ মেটে। কারখানার পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার লিগ্যাল হেড সুলগ্ন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামবাসীর বিক্ষোভে নির্মাণকাজ ব্যাহত হল। অথচ বিক্ষোভকারীদের যে তিনটি দাবি, তার মধ্যে জমিদাতা পরিবারে অনেককেই আমরা ‘হাউজ কিপিং’য়ে ঠিকা শ্রমিকের কাজে নিয়োগ করেছি। নিয়োগেও গ্রামবাসীকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’’ তিনি মনে করিয়েছেন, ‘‘কারখানা প্রকল্পের যে বিবরণ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল, সেই অনুযায়ী স্থায়ী পদে ডিপ্লোমা বা বিটেক কর্মপ্রার্থীদের নিয়োগ করব বলেছিলাম। সেই যোগ্যতা থাকলে আমরা নিশ্চয়ই জমিদাতা পরিবার বা গ্রামবাসীকে অগ্রাধিকার দেব। জলনিকাশির জন্যও আমরা অনেক কাজ করেছি।”

গ্রামবাসীর বক্তব্য, বাম জমানায় এই শিল্পতালুকে সবচেয়ে বড় সংস্থা টাটা হিতাচি যখন এসেছিল, তখন জমিদাতাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়। সেটাই জমি অধিগ্রহণের শর্তে ছিল। এ ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থায়ী পদে নিয়োগের দাবি উঠেছে। জমিদাতা লক্ষ্মণ হাঁসদা বলেন, “আমাদের বরাডিহা, ঘোলাগেড়িয়া মৌজার অধিগৃহীত জমিতেই রং কারখানা হচ্ছে। জমি অধিগ্রহণের শর্ত মেনে এই সংস্থাকে জমিদাতা পরিবারের সদস্যদের স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। কিন্তু সংস্থা সেই শর্ত মানছে না। তাই তৃণমূলের কয়েকজন নেতার ডাকেই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলাম।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘তৃণমূলের কয়েকজন আমাদের সাধারণ চাষি পরিবারকে না নিয়েই কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চলে গেলেন। তার পরে বললেন গেট ছেড়ে দিতে।”

যদিও আন্দোলনে শামিল যুব তৃণমূলের জেলা সম্পাদক বুবুন ঘোষ বলেন, “এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। আমরা তৃণমূলের নেতৃত্ব হলেও গ্রামবাসী, জমিদাতা পরিবার হিসাবেই বিক্ষোভে গিয়েছিলাম। তবে আমরা গ্রামবাসীর পাশে থেকেই জমিদাতা সব পরিবারের কাজের দাবিতে আন্দোলন করছি। কর্তৃপক্ষ ১৫দিন সময় চেয়েছেন।” তবে এ দিন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি গোপাল খাটুয়া বলেন, “মেদিনীপুরের উপনির্বাচনের পরে এই রং কারখানায় জমিদাতাদের কাজের বিষয়টি আমরা দেখব। কিন্তু কারখানার গেট আটকে বিক্ষোভ আমরা সমর্থন করি না।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC industry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy