Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Hospital

কেন্দ্রীয় রেফার-ব্যবস্থা জেলার তিন হাসপাতালে

ইতিমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে মেডিক্যাল ও মহকুমা হাসপাতালে কোন কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতাল থেকে রোগী আসেন, তার বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।

হাসপাতালের অন্দর।

হাসপাতালের অন্দর। —প্রতীকী ছবি।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৬
Share: Save:

পরীক্ষামূলক ভাবে কেন্দ্রীয় ‘রেফারেল’ পদ্ধতি (রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া) চালু করেছে স্বাস্থ্য ভবন। কলকাতার ৫টি মেডিক্যাল কলেজ ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার কয়েকটি হাসপাতালকে ওই ব্যবস্থায় যুক্ত করা হয়েছে। এ বার ওই ব্যবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল তো বটেই কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালকেও যুক্ত করার ভাবনা রয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের।

ইতিমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে মেডিক্যাল ও মহকুমা হাসপাতালে কোন কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতাল থেকে রোগী আসেন, তার বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) জয়রাম হেমব্রম বলেন, “কেন্দ্রীয় রেফারেল পদ্ধতির জন্য স্বাস্থ্য ভবন যা জানতে চেয়েছিল, পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল ছাড়াও কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালের তথ্য দেওয়া হয়েছে।”

আরজি কর-কাণ্ডের পরে জুনিয়র চিকিৎসকদের অন্যতম দাবি ছিল, রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভাবে ‘রেফার’ ব্যবস্থা চালু করা। সেই দাবি মেনে রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে রেফার-ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে সম্মত হয় রাজ্য সরকার। কলকাতার ৫টি মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুর ও ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালকে যুক্ত করা হয়। পরীক্ষামূলক ভাবে ওই পদ্ধতি সফল হয়েছে বলে স্বাস্থ্য ভবনের দাবি। ওই পদ্ধতি মেনে রোগী ভর্তিও শুরু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য-কর্তারা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, মেডিক্যাল কলেজগুলির মধ্যে ‘রেফার ব্যবস্থা’ ছিলই। ‘হেলথ্‌ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ (এইচএমআইএস) পোর্টালের মাধ্যমে এক মেডিক্যাল কলেজ থেকে আর এক মেডিক্যাল কলেজে রোগী স্থানান্তর করার আগে কর্তারা বিশদে জানতে পারতেন। পূর্ব বর্ধমানেও মেডিক্যালের উপর চাপ কমাতে স্থানীয় ভাবে কাটোয়া ও কালনার সঙ্গে রেফারেল পদ্ধতি চালু রয়েছে।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি, কেন্দ্রীয় ভাবে এই ব্যবস্থা চালু হলে রোগীদের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানি অনেকটাই কম হবে। ভর্তির চিন্তাও কমবে। কেন্দ্রীয় ভাবে পদ্ধতিটি চলায় জানা যাবে, কোন হাসপাতালে বর্তমানে কতগুলি শয্যা ফাঁকা রয়েছে। বিভ্রান্তি কিংবা সমন্বয়হীনতা কমবে। রোগীকে নিয়ে পরিজনদের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়ে বেড়াতেও হবে না। রোগীদের সুবিধার্ধে প্রতিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে কতগুলি শয্যা ফাঁকা রয়েছে, তা জানাতে ডিজিটাল মনিটর রাখা থাকবে। স্বাস্থ্য ভবন তা কেনার অনুমোদনও দিয়েছে।

বর্ধমান মেডিক্যালের দাবি, শুধু জেলা নয়, অন্য জেলা, ভিন্‌ রাজ্যের রোগীরাও ‘রেফার’ হয়ে বর্ধমানে আসেন। পশ্চিম বর্ধমানের হাসপাতালগুলি কোনও পদ্ধতি মেনে ‘রেফার’ করে না বলে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, অভিযোগ তাঁদের। তবে, স্নায়ু-শল্য রোগী ও খুবই আশঙ্কাজনক শল্য বিভাগের রোগী ছাড়া বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে কলকাতায় রেফার সাধারণত করা হয় না। হাসপাতাল সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশিকা মেনেই কাজ করা হবে।” জেলা স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীদের বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়। বর্ধমানের দু’টি মহকুমায় কোনও হাসপাতাল (এসডিএইচ) নেই। ফলে মেডিক্যালের উপরে চাপ সব সময়েই থাকে।

তবে এই পদ্ধতি কার্যকর করতে আরও বেশি কর্মী প্রয়োজন বলে দাবি জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের। তাঁরা জানান, জেলার তিনটে হাসপাতালই গুরুত্বপূর্ণ। কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালকে ভিন্‌ জেলার রোগী সামলাতে হয়। জরুরি বিভাগও খালি থাকে না। ফলে কেন্দ্রীয় পোর্টালে গিয়ে সমস্ত তথ্য আপলোড করতে যথেষ্ট সময় লাগবে। সেই সময়ে অন্য রোগীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। বাড়তি কর্মী না হলে কাজ সুষ্ঠু ভাবে হবে না। কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার চন্দ্রশেখর মাইতি বলেন, “হাসপাতালের তথ্য ও প্রযুক্তি কর্মীরা প্রথম দিকে সামলাবেন। পরে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কালনা হাসপাতাল থেকে জরুরি বিভাগের রোগীদের রেফার করা হয় না তেমন। অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।”

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital District
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE