Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

সিন্ডিকেট-তরজা চলছেই

সিন্ডিকেটের গণ্ডগোলে উত্তাল নিউ টাউনে এত দিন চলেছে দুই গোষ্ঠীর পারস্পরিক দোষারোপ। এ বার বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা সোমবার দুই গোষ্ঠীর কয়েক জনকে ডেকে মিলেমিশে শান্তি বজায় রেখে কাজ করতে বললেন। তবে দুই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই বলে দেন, তাঁদের নেতৃত্বই শেষ কথা বলবেন। শুধু পুলিশই নয়। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও রবিবার বলেছিলেন, “কোনও ঘটনা দলের দৃষ্টির বাইরে নেই।

কাকলি ঘোষদস্তিদার ও সব্যসাচী দত্ত

কাকলি ঘোষদস্তিদার ও সব্যসাচী দত্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৪ ০২:৫২
Share: Save:

সিন্ডিকেটের গণ্ডগোলে উত্তাল নিউ টাউনে এত দিন চলেছে দুই গোষ্ঠীর পারস্পরিক দোষারোপ। এ বার বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা সোমবার দুই গোষ্ঠীর কয়েক জনকে ডেকে মিলেমিশে শান্তি বজায় রেখে কাজ করতে বললেন। তবে দুই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই বলে দেন, তাঁদের নেতৃত্বই শেষ কথা বলবেন।

শুধু পুলিশই নয়। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও রবিবার বলেছিলেন, “কোনও ঘটনা দলের দৃষ্টির বাইরে নেই। মিলেমিশে থাকতে না পারলে দল ভাল ভাবে নেবে না।”

স্থানীয় বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বলেন, “২০০৯-এ কাকলি ঘোষদস্তিদার সাংসদ হন। ২০১১ সালে আমি বিধায়ক হই। ২০১৪ পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি। এখন কেন সমস্যা হচ্ছে, তা এলাকায় ঘুরলেই বোঝা যাবে।” এমন কী হল যে মিলেমিশে থাকতে সমস্যা হচ্ছে? সব্যসাচীবাবু বলেন, “আমার কোনও সিন্ডিকেট নেই। যাঁদের আছে তাঁদের নিশ্চয়ই কিছু সমস্যা হচ্ছে।”

দিল্লি থেকে ফোনে সাংসদ কাকলিদেবী বলেন, “সিন্ডিকেট কী জানি না, মানেই বুঝি না। সিন্ডিকেট চালানোর যোগ্যতাও আমার নেই। কোথায় কে কী বলল তা নিয়ে আমার দায় নেই।” তবে পুলিশ বা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যাই বলুন, এলাকায় যে যুবকেরা সিন্ডিকেট চালান তাঁরা সাফ জানাচ্ছেন, এ নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বই শেষ কথা বলবেন। স্থানীয় নেতৃত্ব বললে তবেই মিলেমিশে থাকবেন। কারণ এটা রুজি-রুটির প্রশ্ন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত তিন দিন রোজগার বন্ধ নিউ টাউনের ঘুনি মৌজার সিন্ডিকেটগুলোর। শুধু রামকৃষ্ণপল্লি নয় গৌরাঙ্গনগর, সুলুঙ্গরি, যাত্রাগাছির অধিকাংশ সিন্ডিকেটেরও ঝাঁপ বন্ধ। রামকৃষ্ণপল্লি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত বাপ্পা মজুমদার বললেন, “শুধু ঘুনি মৌজাতেই হাজারের মতো সিন্ডিকেট। প্রায় হাজার চারেক যুবক এতে যুক্ত। বেশি দিন বন্ধ থাকলে চলবে কী ভাবে?” অন্য এক যুবকের কথায়, “সিন্ডিকেট একটা সিস্টেমে চলে। ছোট হোক বা বড়, সিন্ডিকেটগুলোর মধ্যে একটা বোঝাপড়া আছে। সম্প্রতি সেই বোঝাপড়ায় অভাব থেকেই গণ্ডগোল।” স্থানীয় এক যুবক জানান, ছোট সিন্ডিকেট বড় সিন্ডিকেটের উপরে নির্ভরশীল। অনেক সময়ে ছোট সিন্ডিকেটের নগদে ইট, বালি কেনার সামর্থ্য থাকে না। তখন তারা বড় সিন্ডিকেটের থেকে ইট, বালি ধার নেয়। পরে প্রোমোটারের থেকে নগদ পেলে বড় সিন্ডিকেটকে তার ভাগ দিতে হয়।

স্থানীয় যুবকেরা জানাচ্ছেন একটা ‘চেন সিস্টেম’-এ চলে সিন্ডিকেট-ব্যবসা। এই ‘চেন’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে পর্যন্ত ঠিক ছিল। তার পরে অল্প অল্প গণ্ডগোল শুরু হয়। লোকসভা ভোটের পর থেকে তা মাঝে মধ্যেই বড় আকার নিতে শুরু করে। ‘চেন’ ভেঙে যায়। তার কারণ হিসেবে স্থানীয় নেতৃত্বকেই দায়ী করছেন এই যুবকদের একাংশ।

সোমবারও ঘুনি মৌজায় ছিল চাপা উত্তেজনা। টহল দেয় র্যাফ। স্থানীয় সূত্রে খবর, গৌরাঙ্গনগরে জনা পঞ্চাশ যুবক একত্র হতেই র্যাফ তাড়া করে। স্থানীয়েরা জানান, ২০-২৫ জন যুবক জড় হলেই র্যাফ তাড়া করছে। তাঁদের প্রশ্ন, পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে?

অন্য বিষয়গুলি:

syndicate kakoli ghosh dastidar sabyasachi dutta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE