প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীদের গুলি চালানোর বিরাম নেই।
বৃহস্পতিবার বাগুইআটির জগৎপুরে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুর রেশ কাটার আগেই শুক্রবার প্রকাশ্যে গুলিবিদ্ধ হলেন এক জন। এ বারের ঘটনাটি ঘটেছে তারাতলা থানা এলাকার নেচার পার্কের কাছে তারাতলা রোডে একটি নরম পানীয়ের কারখানার সামনে। পুলিশ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম আশিক বিশ্বাস। বাড়ি রবীন্দ্রনগর এলাকার বিশ্বাসপাড়াতে। তাঁর পেটে গুলি লেগেছে। বর্তমানে আশিক একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। আশিকের সঙ্গে একই মোটরবাইকে থাকা তাঁর এক সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সে-ই জখম আশিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
লালবাজারের একটি অংশ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি দুপুর পৌনে একটা নাগাদ ঘটলেও স্থানীয় থানার কাছে সেই খবর এসেছে বিকেল চারটের পরে। ওই হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে তারাতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কেন পুলিশ নিজের নেটওয়ার্কে ওই গুলি চলার মতো খবর জানতে পারল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশেরই একাংশ। বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে নিয়েই দুষ্কৃতীরা নিজেদের সামাজ্য চালাচ্ছে। তাই প্রকাশ্য দিনের আলোতে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটলেও থানা তা জানতে পারে তিন ঘণ্টা পরে।
বৃহস্পতিবার সকালে বাগুইআটির জগৎপুরে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় রায়ের। ওই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হলেও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তার মধ্যেই ফের মহানগরে গুলি চালানোর ঘটনায় স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা। দশ দিন আগেও এন্টালি থানা এলাকার কনভেন্ট রোডে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে জখম হন এক যুবক। পরে জানা যায়, বাংলাদেশি এক দুষ্কৃতী ওই গুলি চালানোর সঙ্গে যুক্ত। তাকে গ্রেফতার করা হয় উত্তরপ্রদেশ থেকে।
কী ঘটেছে এ দিন দুপুরে?
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে বন্ধু আবদুল শামিমকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে রবীন্দ্রনগর থেকে ব্রেসব্রিজের দিকে যাচ্ছিল আশিক। সে-ই মোটরবাইকটি চালাচ্ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, আশিকের মোটরবাইকটি তারাতলা রোডের একটি নরম পানীয়ের কারখানা পার করার পরে পিছন থেকে অন্য একটি মোটরবাইক ওভারটেক করে তাঁদের পাশে চলে আসে। অন্য মোটরবাইকের পিছনে বসে থাকা আরোহী আশিককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি লাগে তাঁর পেটের বাঁ দিকে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান আশিক। পরে শামিম একটি ট্যাক্সি করে জখম আশিককে নিয়ে যান একবালপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। সেখান চিকিৎসকেরা তাঁর পেট থেকে গুলি উদ্ধার করেছে বলে পুলিশের দাবি। তদন্তকারীদের দাবি, উদ্ধার হওয়া গুলি ছররা গুলি।
পুলিশের দাবি, আশিকের সঙ্গে থাকা শামিম জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের মুখ ছিল হেলেমেট দিয়ে ঢাকা। গুলি চালানোর পর তারা বেস ব্রিজের দিকে চলে যায়। ওই এলাকা তখন নির্জন ছিল বলে ওই যুবক পুলিশের কাছে দাবি করেছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জখম যুবক আশিকের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশের কাছে। কিছু দিন আগেও এলাকা দখল নিয়ে অন্য একটি দুষ্কৃতী দলের সঙ্গে তাদের বিরোধ বেধেছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy