Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Woman

ফের সাউথ সিটি, ১৭ তলা থেকে মরণঝাঁপ মহিলার

পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট সোনালিদেবী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে তাঁর বাবা অশোক আইকত জানিয়েছেন। এর আগেও তিন বার তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

ফের সাউথ সিটিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। ইনসেটে সোনালি আইকত। নিজস্ব চিত্র।

ফের সাউথ সিটিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। ইনসেটে সোনালি আইকত। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ১৮:১২
Share: Save:

পাশের ঘর পরিষ্কার করতে যাওয়ার সময়েও দেখেছিলেন ঘরের সোফায় বসে রয়েছেন তিনি। কিন্তু, ঘর পরিষ্কার করে ফিরে আর তাঁকে দেখতে পাননি শেফালিদেবী। সোফার সামনে রাখা ছিল তাঁর জুতো জোড়া। ফ্ল্যাটের কোথাও তাঁকে না দেখতে পেয়ে প্রায় আঁতকে উঠেছিলেন তিনি। তখনই সন্দেহটা হয়। তাই দ্রুত ছুটে যান বারান্দার দিকে। কিন্তু, তত ক্ষণে সব শেষ। ১৭ তলার উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন সোনালি আইকত।

দক্ষিণ কলকাতার যে ফ্ল্যাট থেকে সোনালিদেবী ঝাঁপ দিয়েছিলেন সেখানেই পরিচারিকার কাজ করতেন শেফালি মণ্ডল। শনিবার দুপুরের ওই ঘটনার পর তিনি পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন বেলা ১২টা ২৫ নাগাদ সাউথ সিটির টাওয়ার থ্রি থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন সোনালি আইকত (৪৫) নামে ওই মহিলা। পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট সোনালিদেবী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে তাঁর বাবা অশোক আইকত জানিয়েছেন। এর আগেও তিন বার তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

ঘটনার পরই সেখানে পৌঁছয় যাদবপুর থানার পুলিশ। সোনালিদেবীকে এমআর বাঙু়র হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: দুবাই, নাশিক হয়ে শহরের কলেজে মাদক

ঘটনার মূল প্রত্যক্ষদর্শী শেফালি পুলিশকে জানিয়েছেন, বালিগঞ্জ প্লেসে আদি বাড়ি সোনালিদের। সাউথ সিটির ওই ফ্ল্যটটি ভাড়ায় নেওয়া ছিল। ঘর পরিষ্কারের পাশাপাশি পরিচারিকাকে মাসিক মাইনে দেওয়ার জন্যই সাধারণত মাসে এক বার সাউথ সিটির ফ্ল্যাটটিতে আসতেন সোনালি। এ দিনও তেমনই এসেছিলেন। মহিলার পরিবার সূত্রে খবর, এর আগে বেশ কিছু দিন আমেরিকায় ছিলেন তিনি। তাঁর এক বোনও এই মুহূর্তে ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকেন।

সোনালি আইকত।

তদন্তে নেমে যাদবপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার ঘর থেকে ‘আত্মহত্যার ধরন’ নিয়ে লেখা প্রচুর বই পাওয়া গিয়েছে। যা দেখে পুলিশের অনুমান, সে সব বই নিয়মিত পড়তেন সোনালি।

এর আগেও একাধিক বার সাউথ সিটি থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটেছে। ২০১২ সালের ৩১ অগস্ট সাউথ সিটির ৩৪ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন অমিতা মুখোপাধ্যায় (৮১) এবং তাঁর দুই অবিবাহিতা মেয়ে মুকুতা (৫৫) এবং খেয়া (৫১)। ঘটনার তিন দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন অমিতাদেবীর স্বামী। প্রসঙ্গত, এঁরা কেউই সাউথ সিটির বাসিন্দা ছিলেন না।

এই ঘটনার রেশ কাটার আগেই সে বছরের ৭ অক্টোবর ধনঞ্জয় পাঠক নামে এক প্রৌঢ় আত্মঘাতী হন। পেশায় ব্যবসায়ী ধনঞ্জয় সাউথ সিটির ৩০ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। এর পর ২০১৩ সালের ১৮ জুন ফের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। সে সময় ২১ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন রুষা মুখোপাধ্যায় নামে ১৭ বছরের এর কিশোরী।

অন্য বিষয়গুলি:

South City Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE