শীতের আমেজ। মঙ্গলবার, দক্ষিণ কলকাতায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
এ যেন অনেকটাই ১৩১ বছর আগের পুনরাবৃত্তি। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, ১৮৮৩ সালে নভেম্বর মাসের শেষ দিকে কলকাতার রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে নেমেছিল। শুরু হয়েছিল শীতের। মঙ্গলবার কলকাতার রাতের তাপমাত্রা ছিল ১৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম। ১৩১ বছর আগের রেকর্ড ভাঙতে পারেনি। তবে শীতের ইনিংস শুরু হয়ে গিয়েছে।
আবহাওয়া দফতর অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানিয়েছেন, এ দিন থেকেই শীত শুরু হয়ে গিয়েছে। তাপমাত্রা আরও নামবে বলেই তার পূর্বাভাস। হাওয়া অফিস বলছে এ বার নির্ঘণ্টের দু’সপ্তাহ আগেই মহানগরে হাজির শীত। শীতের ইনিংস শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গেও! সাম্প্রতিককালে যা শীতের নতুন রেকর্ড বলেই আবহবিজ্ঞানীদের দাবি। এই রেকর্ডের পিছনে কাশ্মীরি ঝঞ্ঝাকেই দায়ী করেছেন তাঁরা। নভেম্বরে শীতের এমন নজিরের কথা বলতে গিয়ে আলিপুর হাওয়া অফিসের অনেকেই ১৮৮৩ সালের কথা টেনে এনেছেন। আবহাওয়া দফতরের নথি বলছে, ১৩১ বছর আগে সে বার নভেম্বরেই তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। সে বার কেন এমন হয়েছিল, তা অবশ্য জানা যায় না।
তবে গত কয়েক বছর ধরে বর্ষার নির্ঘণ্টে একটা বদল দেখা যাচ্ছিল। এ বার শীতের জলদি আগমনের ফলে তার নির্ঘণ্ট বদলাবে কি না সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিল। অনেকেই বলেছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন পৃথিবীর আবহাওয়ায় বদল আনছে। এ বার শীতের জলদি আগমনে সেটাই ফুটে উঠছে বলে তাঁরা মনে করেন। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, গত ১০ বছরের মধ্যে নভেম্বর মাসে সবচেয়ে কম ছিল ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর। কিন্তু সে বারও শীত এমন তাড়াতাড়ি আসেনি। আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ বার কাশ্মীরে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আছড়ে পড়ছে। সেখানে বরফ পড়ছে। রাতের তাপমাত্রা শূন্যের নীচে থাকছে। সেখান থেকেই ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়া এ রাজ্যে শীত বয়ে এনেছে।
গোকুলবাবুর কথার রেশ ধরেই আবহবিদদের অনেকে বলছেন, পারদ এমন ভাবে নামতে থাকলে নভেম্বরেই শীত নতুন রেকর্ড গড়তে পারে। গত কয়েক দিন ধরেই সকালে তাপমাত্রা অনেকটা নেমে যাচ্ছিল। রাতের দিকে সোয়েটারও গায়ে চাপাচ্ছিলেন কেউ কেউ। এ দিন গোকুলবাবুর ঘোষণার আগেই অবশ্য লেপ-কম্বল নামিয়ে শীতের লড়াইয়ের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন শহরবাসী।
কলকাতায় শীতের ভেল্কি অবশ্য নতুন নয়। গত কয়েক বছরে পারদের ওঠা-নামায় বার বার চমকে গিয়েছেন মানুষজন। বছর দু’য়েক আগেই জানুয়ারি মাসে শীতের দৌড়ে লন্ডনকে টেক্কা দিয়েছিল মহানগরী। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, ২০১১-১২ সালেও উত্তর ভারতে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝার আঘাতেই শীতের দাপট বেড়েছিল। এ বারও তেমন ইঙ্গিত রয়েছে। তাই এ বারও কলকাতা লন্ডনকে টেক্কা দিতে পারে কি না, সে দিকেই চেয়ে রয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy