Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
JU Student Death

হস্টেলের গেট বন্ধ রাখতে বলেছিলেন সুপার-ছাত্রেরা, ভিতরে যায়নি পুলিশ, দাবি যাদবপুরের নিরাপত্তারক্ষীর

নিরাপত্তারক্ষী কি গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে, যেখানে পড়েছিল সদ্য ভর্তি হওয়া পড়ুয়া? তিনি বলেন, ‘‘ভিতরে যাওয়ার কোনও সুযোগই ছিল না। বার বার বলা হচ্ছিল, গেট ছেড়ে যেন না যাই।’’

JU university

যাদবপুরের হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৩ ১৩:৫৩
Share: Save:

যাদবপুরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া তিন তলা থেকে পড়ে যাওয়ার পর সেই রাতে হস্টেলে কী ঘটেছিল, সংবাদমাধ্যমে তার বিস্তারিত বর্ণনা দিলেন হস্টেলের এক নিরাপত্তারক্ষী। তাঁর দাবি, হলুদ ট্যাক্সি করে ওই পড়ুয়াকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর, ছাত্রদের অনেকে এবং হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ন দত্ত বলেছিলেন, গেট বন্ধ রাখতে। বাইরে থেকে কেউ যেন ঢুকতে না পারে।

ওই নিরাপত্তারক্ষী বলেন, ‘‘হস্টেলের দু’টি গেট রয়েছে। একটি ছোট গেট। অন্যটি বড় গেট। ছোট গেট দিয়েই সবাই ঢোকে-বেরোয়। বড় গেট তালা বন্ধই থাকে। সে দিন রাতে আমি তখন খাচ্ছিলাম। হঠাৎ একদল ছাত্র এসে বলে, বড় গেটের তালা খুলে দিতে। এক জন ছাত্র পড়ে গিয়েছে।’’

তাঁর কথায়, ‘‘কোনও রকমে খাবার রেখে গেটের তালা খুলে দিই। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে আসে একটি অটো এবং একটি ট্যাক্সি। তার পরেই হলুদ ট্যাক্সিতে করে ওকে (তিন তলা থেকে পড়ে যাওয়া ছাত্র) নিয়ে বেরিয়ে যায়।’’ তার পর কী হল? নিরাপত্তারক্ষীর বক্তব্য, ‘‘তার পর সেখানে পৌঁছয় অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু তত ক্ষণে হলুদ ট্যাক্সি বেরিয়ে গিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সও তার পর বেরিয়ে যায়।’’ তাঁর দাবি, এর পরেই দলে দলে ছাত্ররা এসে তাঁকে এবং তাঁদের বলে যায়, গেট খুলবেন না। বাইরে থেকে যেন কেউ ঢুকতে না পারে। গেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন হস্টেল সুপার। যাঁকে কখনও এই নিরাপত্তারক্ষী ‘দত্তদা’, কখনও ‘দ্বৈপায়নদা’ বলে সম্বোধন করেন।

পুলিশ কি সেই রাতে এসেছিল? নিরাপত্তারক্ষীর দাবি, ‘‘হলুদ ট্যাক্সি বেরিয়ে যাওয়ার পর কলকাতা পুলিশের দু’জন এসেছিলেন। তাঁরা গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে কিছুটা গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। তার পর বেরিয়ে যান।’’ এই নিরাপত্তারক্ষীর বয়ান অনুযায়ী, হস্টেলের গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলেও, অকুস্থলে যাননি তাঁরা। তাঁর আরও দাবি, গেট বন্ধ করে দেওয়ার পরেও হস্টেলের বাইরে এসেছিলেন পুলিশের কয়েক জন। কিন্তু কেউ গেট খোলার কথা বলেননি।

এই নিরাপত্তারক্ষী কি গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে, যেখানে পড়েছিল সদ্য ভর্তি হওয়া পড়ুয়া? তিনি বলেন, ‘‘ভিতরে যাওয়ার কোনও সুযোগই ছিল না। বার বার বলা হচ্ছিল, গেট ছেড়ে যেন না যাই।’’ তাঁর এ-ও বক্তব্য, এক এক বার ছাত্রদের এক একটি গ্রুপ এসে বলে যাচ্ছিল, গেট যেন বন্ধ থাকে। সেই সময়ে হস্টেলের মধ্যে কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল।

এই নিরাপত্তারক্ষীর বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরে যাদবপুরের হস্টেলের পরিবেশ, পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এক, কী কারণে বার বার গেট বন্ধ রাখার জন্য চাপ দিচ্ছিল ছাত্রেরা? কেনই বা হস্টেল সুপারও ঘটনার পরে ছাত্রদের মতোই গেট বন্ধ রাখার বিষয়ে তৎপরতা দেখালেন? পুলিশ ঢুকেও কেন ঘটনাস্থল পর্যন্ত গেল না?

বুধবার দুপুর পর্যন্ত যাদবপুরকাণ্ডে মোট ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের সকলে হয় বর্তমান, নয় প্রাক্তন ছাত্র। রাজনৈতিক চাপানউতরও জারি রয়েছে। সেইসঙ্গে প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে, বছরের পর বছর ধরে কী চলছে যাদবপুরের মতো পাঁচতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে? এত দিন কেন টনক নড়েনি?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy