Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
JU Student Death

বাবা কাপড় ফেরি করেন, ধৃত ছাত্র আসিফকে ঘিরে তৈরি হওয়া স্বপ্ন তছনছ টালির চালের ছোট্ট ঘরে

ধৃত আসিফের বাবা আফজল কাপড় ফেরি করেন। ছেলের গ্রেফতারি নিয়ে প্রৌঢ় বলতে থাকেন, ‘‘আমাদের তিন ছেলে এবং এক মেয়ে। আসিফ আমাদের বড় ছেলে। ওকে নিয়েই তো পরিবারের যত স্বপ্ন ছিল!’’

যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত আসিফের বাবা-মা।

যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত আসিফের বাবা-মা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৩ ১২:৩৫
Share: Save:

তাঁদের ছেলে পরোপকারী। ছেলেকে ঘিরেই যাবতীয় স্বপ্ন। কিন্তু সেই ছেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ে মৃত্যু হওয়া প্রথম বর্ষের পড়ুয়াকে সাহায্য করতে গিয়ে ফেঁসে গিয়েছেন। এমনই দাবি করলেন যাদবপুরকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ আসিফ আনসারির মা ইসরত পারভিন। ছেলের গ্রেফতারির খবর পেয়েছিলেন মঙ্গলবার রাতে। তার পর থেকে ঘন ঘন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ছেন তিনি। স্ত্রীকে সামলাতে গিয়ে চোখের জল মুছলেন আসিফের বাবা আফজল আনসারি। তার পর বলেন, ‘‘কী করব, কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না।’’

যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বুধবার ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে যাদবপুরকাণ্ডে মোট গ্রেফতারির সংখ্যা হয়েছে নয়। পুলিশ সূত্রে খবর, রাতভর অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা। বুধবারই ধৃতদেরকে আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে পাওয়ার চেষ্টা করবে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মহম্মদ আসিফ আনসারি। যাদবপুরের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া তিনি। বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের উত্তর আসানসোলে রেলপাড় কেটি রোডে। আসিফের বাবা আফজল কাপড় ফেরি করেন। মা ইসরত গৃহবধূ। টালির চাল দেওয়া ঘরে বসে আফজল বলতে থাকেন, ‘‘বাড়িতে খুব অনটন। আমাদের তিন ছেলে এবং এক মেয়ে। আসিফ আমাদের বড় ছেলে। ওকে নিয়েই পরিবারের যত স্বপ্ন।’’ কিন্তু ছেলের গ্রেফতারি আনসারি দম্পতির কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো।

আসিফের বাবা-মা জানান, ঘটনার দু’দিন পর আসানসোলের বাড়িতে এসেছিল তাঁদের ছেলে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফোন করে তাঁকে একাধিক বার ডাকা হয়। তাই বাড়ি এসে দু’দিন পরেই কলকাতা চলে যান। মায়ের কথায়, ‘‘ছেলে জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে ও কোনও ভাবে যুক্ত নয়।’’ তবে মৃত ছাত্রকে নিয়ে বাড়িতে তিনি গল্প করেছিলেন। আসিফের মায়ের কথায়, ‘‘ওই ছেলেটি যখন ভয় পেত, আমার ছেলে ওকে সাহায্য করত। বন্ধুর মতো ওর পাশে দাঁড়িয়েছিল। ওকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ আসিফের বাবা জানান, মঙ্গলবার রাত ১০-১১টার মধ্যে ছেলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। তখন আসিফ জানায়, সে পড়াশোনা করছে। এর পর রাত দেড়টা নাগাদ তাঁরা খবর পান, আসিফ-সহ কয়েক জনকে পুলিশ নিয়ে গিয়েছে।

প্রৌঢ় আফজল স্বগতোক্তির সুরে বলতে থাকেন, ‘‘তিনটি ছেলেকে কষ্ট করে পড়াশোনা করাচ্ছি। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে। আমরা ভেবে উঠতে পারছি না, কোথা থেকে কী করব।’’ পরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনা করে এক আইনজীবীকে নিয়ে কলকাতা রওনা হয়েছেন তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy