জলমগ্ন: জমা জলে প্রায় ডুবেছে রাস্তার ধারের কল। তার মধ্যেই চলছে জল ভরা। রবিবার, ঠনঠনিয়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
দু’ঘণ্টায় পাঁচটি বাজ! সবগুলিই বিপজ্জনক মাত্রার! তা-ও শুধুমাত্র বালিগঞ্জ এবং সংলগ্ন এলাকায়। তবে এতে কোনও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। সঙ্গে মুহুর্মুহু বজ্রপাত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাটমস্ফেরিক সায়েন্স বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর সাড়ে ৪টে থেকে সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে ছ’টি বাজ পড়ছে বালিগঞ্জ ও সংলগ্ন এলাকায়। তার মধ্যে সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১টা ২২ মিনিট, এই ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যেই বাজ পড়েছে পাঁচটি! চলতি মরসুমে এত অল্প সময়ের মধ্যে সবথেকে বেশি বাজ এ দিন সকালেই পড়েছে কি না, তা ভাবাচ্ছে গবেষকদের। সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক সুব্রতকুমার মিদ্যা বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে এ দিন অল্প সময়ের মধ্যে অনেকগুলি বাজ পড়েছে। তবে এই মরসুমে সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি কি না, তা নিয়ে একটা তুলনামূলক রিপোর্ট আমরা তৈরি করব।’’
তবে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের অ্যানেক্স-টু ভবনের উপরে বসানো ‘লাইটনিং ডিটেক্টর’ আশপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বজ্রপাতের তথ্য সংগ্রহ করে। তাই এ দিন সারা শহরে ক’টি বাজ পড়েছে, সে সম্পর্কে কোনও তথ্য মেলেনি। তবে বাজ পড়েছে শহরের অন্যত্রও। মানিকতলায় একটি বাড়িতে বাজ পড়ে সমস্ত বৈদ্যুতিন যন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। দমদম এলাকার এক বাসিন্দা জানান, সকাল ন’টা থেকে দশটার মধ্যে সেখানে একাধিক বাজ পড়ে। বজ্রপাতের তীব্র আওয়াজে এ দিন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রাস্তায় বেরোনো অনেকেই । তবে বেলা ১২টার পর থেকেই বাজ পড়া আস্তে আস্তে থেমে যায়।
কলকাতা পুরসভা জানাচ্ছে, এ দিন উত্তর কলকাতাতেই তুলনামূলক ভাবে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। মানিকতলা, বীরপাড়া, বেলগাছিয়া এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে ৫০ মিলিমিটার (মিমি)। সবথেকে কম বৃষ্টি হয়েছে বেহালা এলাকায়— ১২ মিমি। মধ্য কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে গড়ে ৩৫ মিমি এবং কালীঘাট ও সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের গড় পরিমাণ ২৫ মিমি। সকালে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গাঁধী রোড, ই এম বাইপাস-সহ নানা এলাকায়। পাতিপুকুর, উল্টোডাঙা ও কাঁকুড়গাছি— এই তিনটি আন্ডারপাসই জলমগ্ন হয়ে যায়। এক পদস্থ পুর আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘উত্তর কলকাতায় অল্প সময়ের মধ্যে ৫০ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। জল তো কিছু ক্ষণের জন্য জমবেই।’’ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ জানাচ্ছে, ছুটির দিনে রাস্তায় যান চলাচল কম থাকায় কোথাও যানজট হয়নি। এক ঘণ্টার মধ্যে জল নেমেও গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy