Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
partha chatterjee

ভ্যালেনটাইন্‌স ডে করলে দল ছাড়ুন, পার্থর বার্তা ছাত্র-যুবকে, পরে মধুরেণ সমাপয়েৎ

১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-যুব সম্মেলনে ছাত্রদের পাওয়া যাবে না শুনে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:২৬
Share: Save:

যাঁরা ভ্যালেনটাইন ডে পালন করতে চান, তাঁরা দল থেকে বেরিয়ে যান! সটান বলে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা শাসক তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রবিবার সরশুনা কলেজের মাঠে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বুথ কর্মী সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে ওই ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে কুপিত হলেও পরে অবশ্য পার্থ নিজেও হেসে ফেলেন। বলেন, ‘‘এমন কত ডে-ই তো আছে।’’ মন্ত্রীর সঙ্গে তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের ওই কথোপকথনের একটি ভিডিও আনন্দবাজার ডিজিটালের হাতে এসেছে। তাতেই ঘটনাটি দেখা যাচ্ছে।

বুথকর্মীদের সম্মেলন তখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। বেশ খোশমেজাজেই তৃণমূল মহাসচিব দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছিলেন, তাঁরা যেন কোনও অবস্থাতেই বিধানসভা নির্বাচনে পার্থর বিধানসভা কেন্দ্রের কোনও বুথ ছেড়ে না যান। পার্থ কর্মীদের উদ্দেশে বলছিলেন, ‘‘আমি ছাত্র-যুবদের বলব, সব সম্মেলন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ছাত্র-যুবর সম্মেলনটা এখনও বাকি রয়ে গিয়েছে।’’ মঞ্চ থেকেই এলাকার যুব তৃণমূলের নেতা অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই সম্মেলনের দায়িত্ব দেন পার্থ। ছাত্র-যুব সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করে তাঁকে জানাতে বলেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক।

মঞ্চ ও মঞ্চের সামনে থাকা কর্মীদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ ১২-১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্মেলন করার দাবি তোলেন। পার্থও তাঁদের মতে সায় দিয়ে বলেন, ‘‘তাহলে ১২ তারিখেই হবে সম্মেলন।’’ কিন্তু তিনি লক্ষ্য করেন ১২ কিংবা ১৩ তারিখে সম্মেলন করা নিয়ে ছাত্র-যুবদের একাংশ টালবাহানা করছেন। তাতে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ হন পার্থ। এবং বলে ফেলেন, ‘‘এত শনিবার-রবিবার দেখার কী আছে? ছাত্ররা কি চাকরি করে নাকি, যে এত দিনক্ষণ আর পাঁজি দেখতে হচ্ছে?’’ এর পরেই মঞ্চের সামনে থেকে আওয়াজ ওঠে— ১২ তারিখ তো শুক্রবার! যা শুনে পার্থ মঞ্চ থেকে প্রশ্ন করেন, ‘‘তা হলে ১৩ তারিখ শনিবারেই হোক সম্মেলন। নাকি ওইদিনও কিছু রয়েছে?’’ ঠিক তখনই মঞ্চে থাকা এক তৃণমূল নেতা পার্থকে বলেন, ‘‘দাদা, ১৩ আর ১৪ তারিখ ছাত্রদের পাওয়া যাবে না। কারণ, ১৪ তারিখে ভ্যালেনটাইন্‌স ডে।’’

শুনেই কুপিত হন পার্থ। স্পষ্টতই ক্ষোভের সুরে প্রবীণ বিধায়ক বলেন, ‘‘যারা ভ্যালেনটাইন্‌স ডে করবেন, তাঁরা আগে দল থেকে চলে যান তো!’’ বিধায়কের এমন মন্তব্যে জমায়েত অবশ্য ভড়কে যায়নি। উল্টে হাসির রোল ওঠে সম্মেলনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের চারবারের বিধায়ক তখন ছাত্র-যুবদের উদ্দেশে কিছুটা উত্তেজিত হয়েই বলেন, ‘‘চাকরিও করবেন আবার ভ্যালেনটাইন্‌স ডে-ও করবেন? রাজনীতিও করবেন? আবার ভ্যালেনটাইন্‌স ডে-ও করবেন?’’ তাতেও হাসতে থাকেন কর্মী-সমর্থকরা। যা দেখে একসময় মঞ্চের পোডিয়ামে দাঁড়ানো পার্থ নিজেও হেসে ওঠেন। এবং হাসিমুখেই বলেন, ‘‘ভ্যালেনটাইন্‌স ডে হোক। এমন অনেক ডে-ই আছে। সেটা ১৪ তারিখে। ১৩ তারিখে নয়।’’ শেষে অবশ্য ঠিক হয় ১৩ ফেব্রুয়ারি, শনিবার বেহালা পশ্চিমের ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডেই হবে তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের নিয়ে কর্মী সম্মেলন।

প্রসঙ্গত, তৃণমূল এমনিতে প্রেম নিয়ে যথেষ্টই উদার। স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য মঞ্চেই বলেছিলেন, তিনি প্রেম করায় খারাপ কিছু দেখেন না। বস্তুত, শিবসেনা যখন ভ্যালেনটাইন্‌স ডে-র দিন মুম্বইয়ে ভাঙচুর করেছিল, তখন তার কড়া নিন্দা করেছিলেন মমতা-সহ তৃণমূলের শীর্ষনেতারা। সেই নেতাদের একজন পার্থ ভ্যালেনটাইন্‌স ডে পালনের কথায় কুপিত হওয়ায় দলের একাংশ খানিক বিস্মিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার পর তাঁরা বোঝেন, স্নেহশীল পার্থ আসলে কপট উষ্মা দেখাচ্ছিলেন। তিনিও প্রেম বা প্রেমদিবস-বিরোধী নন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy