গার্ডেনরিচের বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় সাসপেন্ড হওয়া ইঞ্জিনিয়ারদের সাসপেনশন উঠে গেল। ফাইল ছবি।
গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় সাসপেন্ড হওয়া তিন ইঞ্জিনিয়ারকে প্রায় ন’মাস পর পুনর্বহাল করল কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি এক নির্দেশিকা জারি করে এই সাসপেনশন তুলে নেওয়া হয়েছে। বছরের শেষ দিনে কলকাতা পুরসভার কমিশনার ধবল জৈনের জারি করা নির্দেশিকায় বরোর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবাদিত্য পাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ঘোষ এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শুভম ভট্টাচার্যকে কাজে ফেরানোর কথা জানানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ১৭ মার্চ মাঝরাতে গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে পড়ে। সেই ঘটনায় মারা যান ১৩ জন মানুষ। তদন্তে উঠে আসে, বাড়িটি সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে নির্মাণ করা হচ্ছিল। অভিযোগ ওঠে যে নির্মাণের তদারকিতে বড় ধরনের গাফিলতি ছিল। এই ঘটনাটি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দরে ঘটায় বেজায় চাপে পড়েছিল পুরসভা। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রথমে পুরসভা তিন ইঞ্জিনিয়ারকে শো-কজ নোটিস ধরানো হয়। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে দেখা যায় যে বাড়ি ভেঙে পড়ার সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা সরাসরি যুক্ত নয়। যদিও তাঁদের ওপর নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্ব ছিল, কিন্তু তদন্তকারীদের কাছে অপরাধের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উঠে আসেনি বলেই কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। পুর প্রশাসনের মতে, তদন্তে অভিযোগের যথাযথ সমর্থন না মেলায় তাঁদের সাসপেনশন তুলে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের পুনর্বহালের ফলে কলকাতা পুরসভা কর্মীদের মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে। পুর প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “তদন্ত চলাকালীন যাতে অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ারেরা কোনও প্রভাব খাটাতে না পারেন, তাই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছিল। তদন্তের জন্য যা যা প্রমাণ হাতে আসার দরকার ছিল, তা জোগাড় হয়েছে। এখন তদন্ত প্রভাবিত করার কোনও সুযোগ নেই। তাই ইঞ্জিনিয়ারদের কাজে ফেরানো হচ্ছে।”
গার্ডেনরিচে বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনার পরেও কলকাতার বেআইনি নির্মাণের সমস্যা বার উঠে এসেছে জনসমক্ষে। এমনকি ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে মেয়রের কাছে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। তবে পুরসভায় ইঞ্জিনিয়াররা পুনর্বহাল হওয়ায় পুরসভার আধিকারিক তথা কর্মীদের জন্য এটি দ্বৈত বার্তা বহন করেছে বলেই মত পুর প্রশাসনের একাংশের। প্রথমত, শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা এবং দ্বিতীয়ত, কোনও নিরপরাধ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত না করার নীতির প্রতি আস্থা। প্রসঙ্গত, পুজোর আগে ইঞ্জিনিয়ার সংগঠনের তরফে মেয়রের কাছে অনুরোধ জানানো হলেও, শাস্তি প্রত্যাহার করা হয়নি। কিন্তু নতুন বছরের শুরুতেই ইঞ্জিনিয়ারেরা কাজে ফেরায় স্বস্তিতে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy