পাভলভ মানসিক হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
অনেক সময়ে চোখে ঝাপসা দেখলেও নিজেদের সেই সমস্যার কথা বলতে পারেন না ওঁরা। কেউ আবার চোখে ঠিক মতো দেখতে না পাওয়ায় আরও অবসাদে চলে যান। পাভলভ
মানসিক হাসপাতালের সেই সমস্ত আবাসিকের ছানির অস্ত্রোপচারের জন্য পরিবারের অনুমতি পাওয়াও সমস্যার।
তাঁদের জন্যই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন দুই চিকিৎসক। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সম্বুদ্ধ ঘোষ ও মানসিক রোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সৃজিত ঘোষ যৌথ ভাবে সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরাই অস্ত্রোপচারের অনুমতিপত্রে পরিজন বা অভিভাবক হিসাবে সই করবেন। ওই দুই চিকিৎসকের কথায়, ‘‘মানবিক কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে, এই পদক্ষেপে স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতাও পেয়েছি।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, এ ভাবে গত এক বছরে পাভলভে চিকিৎসাধীন প্রায় ৮০ জন মনোরোগীর ছানি কাটানো হয়েছে। এখনও সেই কর্মসূচি চালু রয়েছে।
সৃজিত জানাচ্ছেন, পাভলভের আবাসিকদের চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি লক্ষ করতেন, অনেকেই খবরের কাগজ পড়তে পারছেন না। টিভি দেখতেও কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক জন চোখের সমস্যার কথা বলতে পারলেও বেশির ভাগই তা বলতেন না। কাগজ পড়তে ও টিভি দেখতে না পেরে আরও অবসাদে চলে যাচ্ছিলেন তাঁরা।’’ তিনি আরও জানান, ওই আবাসিকদের নিয়মিত পরীক্ষা করতে আসেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগের চিকিৎসকেরা। সম্বুদ্ধ জানাচ্ছেন, বিষয়টি তাঁদের নজরেও আসে। কিন্তু ছানির অস্ত্রোপচারের অনুমতি দেবে কে, তা নিয়েই সমস্যা তৈরি হয়। তিনি বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচার না হলে সমস্যা যে আরও জটিল হবে, তা বুঝতে পেরে আমরাই পরিজন হিসাবে সম্মতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পাভলভের সুপার এবং অ্যানাস্থেশিয়ার চিকিৎসকেরাও আমাদের সঙ্গে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করেছেন।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অস্ত্রোপচারের পরে দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক মানসিক রোগীরই অবসাদ দূর হয়েছে। অনেকে এর পরে ধীরে ধীরে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে পরিজনদের সঙ্গে বাড়িও ফিরে গিয়েছেন। সম্বুদ্ধ জানাচ্ছেন, আবাসিকদের অনেকের এখনও ছানির সমস্যা রয়েছে। তাঁদেরও একই ভাবে অস্ত্রোপচার করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy