তোলাবাজির দায়ে এ বার অভিযুক্ত খোদ পুলিশই। তা-ও আবার পুলিশেরই বড়কর্তা সেজে! অবিশ্বাস্য মনে হলেও তেমনই ঘটেছে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকায়। ওই দু’জনকে ধরতে এসে পুলিশ জানতে পারল, তাঁরা আদতে কনস্টেবল। এক জন নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন ডিএসপি হিসেবে, অন্য জন মহিলা থানার ওসি। গ্রেফতার হওয়ার পরে মঙ্গলবার তাঁরা অবশ্য জামিন পান।
সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে ব্যারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে, টিটাগড় থানা এলাকার রুইয়ায়। খোদ পুলিশ পরিচয়ে তোলাবাজির এই কীর্তিতে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ঢিলেঢালা ছবিটাই ফের স্পষ্ট হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ধৃত দুই কনস্টেবলের নাম বিশ্বজিৎ চন্দ ও অপর্ণা ঘোষ। বিশ্বজিৎ বারাসত জেলা আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের নিরাপত্তারক্ষী। অপর্ণা ব্যারাকপুর পুলিশ লাইনে কর্মরত। বছর দেড়েক আগে লাটবাগানের এক পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল। তার পরে দীর্ঘ দিন সাসপেন্ডও ছিলেন অপর্ণা। সম্প্রতি কাজে যোগ দেন। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ জানিয়েছেন, সোমবারের ঘটনার পরে ফের অপর্ণাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
পুলিশ জেনেছে, ওই রাতে ব্যারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করছিলেন বিশ্বজিৎ এবং অপর্ণা। দু’জনেই ছিলেন সাদা পোশাকে। বাইক আরোহীদের অভিযোগ, সব কাগজ থাকা সত্ত্বেও ওই দুই কনস্টেবল নানা অছিলায় তাঁদের থেকে টাকা নিচ্ছিলেন। আরও অভিযোগ, বিশ্বজিৎ তাঁর কাছে থাকা রিভলভার দেখিয়ে বাইক আরোহীদের ভয়ও দেখাচ্ছিলেন। আগরপাড়ার বাসিন্দা, পার্থসারথি ভঞ্জ চৌধুরী নামে এক বাইক আরোহীকে আটকেও টাকা চান বিশ্বজিৎ ও অপর্ণা। তখন পার্থবাবু তাঁদের পরিচয় নিয়ে চ্যালেঞ্জ করায় তাঁর সঙ্গে বিশ্বজিৎ ও অপর্ণার বচসা শুরু হয়। চেঁচামেচি শুনে জড়ো হয়ে যান স্থানীয় লোকজন। ডিএসপি এবং ওসি পরিচয় দেওয়া ওই দুই পুলিশকর্মী এলাকার লোকেদের কাছে অপরিচিত হওয়ায় টিটাগড় থানায় খবর দেন তাঁরা। টিটাগড় থানার পুলিশ এসে দু’জনকেই চিনতে পারে। তার পরেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, বিশ্বজিৎকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে।
অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy