সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগেই। বিধানসভায় তাতে সিলমোহর পড়ল।
কাগজপত্র ছাড়াই কেবল আবেদনের ভিত্তিতে এক বছরের জন্য ব্যবসার প্রভিশনাল পুর-লাইসেন্স দেওয়ার ওই বিলটি বুধবার পাশ হয়েছে বিধানসভায়।
এমনিতেই অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে বিভিন্ন বাজার। পুরসভার সমীক্ষা রিপোর্টও বলছে বাজারগুলিতে অগ্নিসুরক্ষার হাল ভাল নয়। প্রভিশনাল লাইসেন্স দেওয়া শুরু হলে শহরে দোকানের সংখ্যা বেড়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মনে করছেন বাজার দফতরের কর্তারাও। তাতে প্রভিশনাল লাইসেন্সের অপব্যবহারের আশঙ্কাও থাকছে।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় যদিও বলেন, ‘‘কোনও অপব্যবহার হবে না। অনেক ব্যবসায়ীকে লাইসেন্সের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়। তাঁদের কথা ভেবেই সহজ পদ্ধতি করা হল।’’ তিনি জানান, এই লাইসেন্স কেবল এক বছরের জন্য। তার পরে কাগজপত্র জমা দিলে স্থায়ী লাইসেন্স মিলবে।
পুরভোটের আগে কলকাতাবাসীকে ‘ভেট’ দিতে একাধিক জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণা করে সরকার। তখনই বলা হয়েছিল ভোটের পরেই বিধানসভার অধিবেশনে সরকার ওই বিল পাশ করাতে চায়। এ দিন বিধানসভায় সংশোধনী এনে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দেন, ব্যবসা শুরু করতে চাইলে এক বছরের জন্য পুরসভা ওই প্রভিশনাল লাইসেন্স দেবে। ওই সময়ের মধ্যে নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, দমকলের ছাড়পত্র, বিদ্যুৎ সংযোগ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীকে। নথি-সহ স্থায়ী লাইসেন্সের জন্য আবেদন করলে তিন বছরের জন্য তা পুরসভা অনুমোদন করবে। তিন বছর পরে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করাতে হবে।
অনেকেরই বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের আগে দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের মন পেতে এই সিদ্ধান্ত। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা চূড়ান্ত দুর্নীতি আর ফেরেব্বাজির নমুনা। দেখা যাবে এক বছর পরে চিটফান্ডের মতো টাকা মেরে কিছু দোকান উঠে যাচ্ছে।’’ বিজেপির কাউন্সিলর অসীম বসু বলেন, ‘‘সামনে ভোট। সে দিকে লক্ষ রেখেই চূড়ান্ত অনৈতিক কাজ করতে চলেছে পুরবোর্ড।’’ যদিও মেয়র বলেন, ‘‘সরকার তো আছে মানুষের কাজ করার জন্য। মানুষের উপকারে কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হলে তাতে কে কী বলছেন, ভাবার দরকার নেই।’’ শোভনবাবু জানান, শুধু ব্যবসা নয়, বিল্ডিং প্ল্যান-সহ আরও কিছু বিষয়ে নিয়মনীতি সরল করা হচ্ছে। রাজ্য জুড়ে তার সুবিধা মিলবে।
এত কাল কী নিয়ম ছিল? পুরসভার এক আমলা জানান, কলকাতায় লক্ষাধিক ব্যবসা রয়েছে। এত দিন দোকান বা ব্যবসা খুলতে হলে জায়গার মালিকের সঙ্গে চুক্তি, দমকল দফতরের নো-অবজেকশন, জমির প্ল্যান— সবই জমা দিতে হত লাইসেন্স প্রদানকারী দফতরে। মেয়র এ দিন জানান, নতুন নিয়মে আবেদন করলেই দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হবে। দমকলের ছাড়পত্র, জায়গার চুক্তিপত্র সবই এক বছরের মধ্যে দিলেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy