Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

টিকিট বদলাতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে

স্থানীয় দমদম থানা এবং সংশ্লিষ্ট উড়ান সংস্থার কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন কলকাতা বিমানবন্দর এলাকার বাসিন্দা গণেশ রায়। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা তিনি ফেরত পাননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০০:৪২
Share: Save:

উড়ান সংস্থার কল সেন্টারে ফোন করে মেয়ের টিকিটের দিন পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গে একটু পরে যোগাযোগ করা হবে বলে সেই ফোন কেটে দেওয়া হয়। একটু পরেই ‘কল সেন্টার থেকে ফোন করছি’ বলে কেউ তাঁকে ফোন করেন। তার পরে তাঁর ব্যাঙ্কের তথ্য জেনে নিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে এক লক্ষ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয় দমদম থানা এবং সংশ্লিষ্ট উড়ান সংস্থার কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন কলকাতা বিমানবন্দর এলাকার বাসিন্দা গণেশ রায়। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা তিনি ফেরত পাননি।

এ নিয়ে ওই উড়ান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু লোক তাদের নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করছে। যাত্রীদের তা নিয়ে সচেতন করার প্রক্রিয়া চলছে। ওই দুষ্কৃতীরা নিজেদের সেই উড়ান সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়ে যাত্রীদের ব্যক্তিগত তথ্য, এমনকি ব্যাঙ্কের তথ্যও জানার চেষ্টা করছে। গণেশবাবুদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলেও মঙ্গলবার উড়ান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের প্রতি তাদের বার্তা, খুব সাবধানে সরাসরি কল সেন্টারে ফোন করে বা ওয়েবসাইটে গিয়ে তবেই নিজের তথ্য

আদানপ্রদান করবেন।

গণেশবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমি তো ওয়েবসাইটে গিয়ে ওদের কল সেন্টারের যে নম্বর পেয়েছি, তাতেই ফোন করি। তার পরেও তো আমি প্রতারকদের খপ্পরে পড়লাম। আমরা ওই উড়ান সংস্থাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’’

ঠিক কী ঘটেছিল?

গণেশবাবুর মেয়ে রঞ্জিনীর পরীক্ষা দিতে যাওয়ার কথা ছিল চণ্ডীগড়ে। প্রথমে ঠিক ছিল, ১২ মে পরীক্ষা হবে। তাই মেয়ের জন্য কলকাতা-দিল্লি যাতায়াতের টিকিট কেটেছিলেন গণেশবাবু। ১০ মে যাওয়া এবং ১৩ মে ফেরা। কিন্তু নির্বাচনের কারণে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে করা হয় ২৬ মে। তাই ঠিক হয়, টিকিটের দিন বদলে রঞ্জিনী যাবেন ২৫ মে। ফিরবেন ২৭ মে।

গত ২১ মার্চ বাড়িতে বসে ওয়েবসাইট থেকে ফোন নম্বর জোগাড় করে টিকিটের দিন বদলের জন্য ওই উড়ান সংস্থার কল সেন্টারে ফোন করেন গণেশবাবু। এক জন ফোন ধরে তাঁর অনুরোধ শুনে বলে, ‘‘আপনি রেখে দিন। আমরা আপনাকে কল ব্যাক করছি।’’ গণেশবাবুর অভিযোগ, ফোন রেখে দেওয়ার এক মিনিটের মধ্যে একটি অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে সেই পুরুষকণ্ঠ নিজেকে ওই উড়ান সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়ে কথা বলতে শুরু করে গণেশবাবুর সঙ্গে। গণেশবাবুর আর্জি শুনে সে জানায়, টিকিটের দিন বদলের জন্য গণেশবাবুকে অতিরিক্ত প্রায় ১৭ হাজার টাকা দিতে হবে। গণেশবাবু রাজি হন। তখন গণেশবাবুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর চায় ওই পুরুষকণ্ঠ। গণেশবাবু কাঁকুড়গাছির এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে থাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট নম্বর দিলে একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) আসে তাঁর ফোনে। সেই ওটিপি জেনে নেয় ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি। এর পরে প্রায় দেড় মিনিট ফোনটি হোল্ড-এ রাখা হয়।

ফোন ধরে রাখার মধ্যেই গণেশবাবু দেখেন, তাঁর মোবাইলে পরপর পাঁচটি বার্তা এসেছে। দেখা যায়, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ বার ২০ হাজার টাকা করে তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি ফোন কেটে দেন। ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পারেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ওই এক লক্ষ টাকা চলে গিয়েছে।

পরে ওই উড়ান সংস্থার সেই টিকিট বাতিল করে অন্য সংস্থার টিকিট কেটেছেন গণেশবাবু।

অন্য বিষয়গুলি:

Bank Fraud Financial Crime Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE