বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের পরে এ বার ভিআইপি রোড। পুলিশের তোলা আদায়ের হাত থেকে বাঁচতে ফের একটি লরি প্রাণপণ ছুট দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাল বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ভোরে ভিআইপি রোডের উপর, দমদম পার্কে পাথর বোঝাই উল্টোডাঙামুখী ওই লরিটি সামনে অন্য একটি পাথর বোঝাই লরির পিছনে ধাক্কা মারে। যে লরিটি ধাক্কা মেরেছে, তার খালাসি আকবর আলি মণ্ডল জখম হন, লরির সামনের অংশ ভেঙে তছনছ। পায়ে আঘাত নিয়ে ওই খালাসি আর জি করে ভর্তি।
ফেব্রুয়ারি মাসে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশকে তোলা না দিয়ে পালাতে গিয়ে একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পরিবারের চার শিশুকে পিষে দেয়। পুলিশের দু’টি গাড়ি পুড়িয়ে পুলিশকে আক্রমণ ও দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করে ক্ষিপ্ত জনতা। সে বার নিমতা থানার পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল।
এ দিন অভিযোগ উঠেছে লেকটাউন ট্রাফিক গার্ডের বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বক্তব্য, মাঝেমাঝে ওই জায়গায় লরি থামিয়ে তোলা আদায় করে পুলিশ। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, শনিবার অল্পের উপর দিয়ে গেলেও পুলিশ যে ভাবে তোলা আদায় করে ও তা থেকে বাঁচতে লরি নিয়ে যে ভাবে চালকেরা প্রায়ই বেপরোয়া দৌড়ন, তাতে এখানেও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশেষত সকালে যেখানে ভিআইপি রোডে প্রচুর স্কুলগাড়ি যাতায়াত করে।
যে লরিটি ধাক্কা মেরেছে, তার মালিক মহম্মদ নাসিরুদ্দিন এ দিন বলেন, ‘‘পুলিশকে নিয়মিত মাসোহারা দিতে হয়। তার পরেও রোজ উল্টোডাঙা থেকে বারাসত পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রাফিক গার্ডকে পয়সা দিতে দিতে যেতে হয়। না দিলে জরিমানা করে পুলিশ।’’ তবে শনিবার রাত পর্যন্ত পুলিশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেননি নাসিরুদ্দিন।
শনিবার ঘটনাটি ঘটে ভোর পৌনে ছ’টা নাগাদ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশের দুই সিভিক ভলান্টিয়ার পাথর বোঝাই লরিটিকে দাঁড় করান। পিছনে থাকা আর একটি লরি তখন জোড়া মন্দির-কেষ্টপুর সংযোগকারী উড়ালপুল থেকে দ্রুত নামছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, সামনের লরির আশপাশে সিভিক পুলিশ দেখে পিছনের লরিটি তড়িঘড়ি পালাতে যায় এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথম লরিটিকেই ধাক্কা মারে।
যদিও বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘ট্রাফিকের ডিউটি শুরু হয় সকাল সাতটায়। ফলে অত সকালে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারের থাকার কথাই নয়।’’ ডিসি জয়বাবুর বক্তব্য, সিগন্যাল লাল থাকায় প্রথম লরিটি দাঁড়িয়ে যায়। পিছনে থাকা লরিটির ব্রেক বিকল হওয়ায় সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনের লরিকে ধাক্কা মারে।
তবে স্থানীয়দের বক্তব্য, তখন ওই জায়গায় ট্রাফিক সিগন্যাল পুরোদস্তুর কার্যকর হয়নি। ব্লিঙ্কার দেওয়া ছিল, অর্থাৎ হলুদ আলো দপদপ করছিল। তখন যে কোনও গাড়ির গতি কমিয়ে, ডাইনে-বাঁয়ে দেখে তবেই সিগন্যাল পেরোনোর কথা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে ভিআইপি রোডে যানজট হয়। লরি দু’টিকে সরাতে প্রায় দু’ঘণ্টা কেটে যায়। ফলে বিমানবন্দরের দিক থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার পথে বহু মানুষ যানজটে আটকে পড়েন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy