তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। —ফাইল চিত্র।
রবিবারই ক্রিজ় ছেড়ে আরও এক কদম এগিয়েছিলেন। দলের ‘অস্বস্তি’ হতে পারে, আবার এমন মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। সল্টলেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনে ফুটবল সমর্থকদের জমায়েতে পুলিশি দমনের বিরুদ্ধে আরও জোরালো প্রতিবাদের দাবি জানালেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। রবিবার রাতে সমাজমাধ্যমে তিনি ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের সমর্থকদের একত্রে আবার প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যে ভাবে পুলিশ রবিবারের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের উপর লাঠিচার্জ করেছে, ফুটবল সমর্থকদের যে ভাবে আটক করা হয়েছে, তার বিরোধিতা করেছেন সুখেন্দু। সেই সঙ্গে দুই প্রধানকে একত্রিত হয়ে গর্জে ওঠার ডাক দিয়েছেন।
রবিবার ছিল কলকাতার বহু প্রতীক্ষিত ডার্বি ম্যাচ। ডুরান্ড কাপে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সব টিকিটও বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে ডার্বি বাতিল করে দেওয়া হয়। ডার্বি চলাকালীন আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদের ডাক দেওয়া হয়েছিল। মাঠেই প্রতিবাদ জানাতেন সমর্থকেরা। ডার্বি বাতিলের পর যুবভারতীর সামনে সেই প্রতিবাদ জানাবেন বলে জমায়েত হয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের হাজারো সমর্থক। পরে জমায়েতে যোগ দেন মহমেডান ক্লাবের কিছু সমর্থক। এর আগে অবশ্য সাংবাদিক সম্মেলন করে যুবভারতী সংলগ্ন এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করে বিধাননগর পুলিশ। তবে তাতে দমেননি বিক্ষোভকারীরা। অভিযোগ, ফুটবল সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ জমায়েতের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। বেশ কয়েক জনকে আটক করে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের এই দমননীতির বিরুদ্ধেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সুখেন্দু। তিনি রবিবার রাতে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘আমি সমস্ত ফুটবল এবং ক্রীড়া সমর্থকের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যুবভারতীর সামনে শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক জমায়েতে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সমর্থকদের পুলিশের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে। জয় মোহনবাগান, জয় ইস্টবেঙ্গল।’’
উল্লেখ্য, সুখেন্দু গ্রেফতারির কথা লিখলেও রবিবার পুলিশ কয়েক জন সমর্থককে আটক করেছিল। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। যদিও পুলিশের দমননীতির বিরুদ্ধেই দুই প্রধানকে এক হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।
আরজি করের ঘটনায় শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন সুখেন্দু। এমনকি, এই ঘটনার প্রতিবাদে যখন গত ১৪ অগস্ট মেয়েদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেই আন্দোলনেও শামিল হয়েছিলেন সুখেন্দু। যুক্তি হিসাবে জানিয়েছিলেন, তিনিও মেয়ের বাবা, নাতনির দাদু। তাই বিবেকের তাড়নায় এই আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। এর পর রবিবার সুখেন্দু দাবি জানান, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সিবিআইয়ের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তবেই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর মিলবে। কেন এই ঘটনাকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, তার উত্তর এই দু’জন দিতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এই পোস্টেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, আরজি করের ঘটনার তিন দিন পর ডগ স্কোয়াড নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সে দিন বিকেলেই তাঁকে তলব করে লালবাজার। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়, ঘটনার দিনই ডগ স্কোয়াড নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আরজি করে। অভিযোগ, সমাজমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করছেন সুখেন্দু। তবে রবিবার তিনি হাজিরা দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy