Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Tram Cafe

অবহেলায়, অযত্নে ধুঁকছে ট্রামের কাফে ও সংগ্রহশালা

ট্রাম গুমটির যে উদ্যানে ‘স্মরণিকা’ গড়ে উঠেছে, সেটির কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। অতীতে প্রচুর সংখ্যক স্কুল ও কলেজের পড়ুয়া ওই সংগ্রহশালা এবং কাফেতে এলেও এখন সেই আগ্রহ তলানিতে ঠেকেছে।

Tram models are being neglected in the museum

সংগ্রহশালায় অযত্নে পড়ে রয়েছে ট্রামের মডেল। নিজস্ব চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৮
Share: Save:

ঘটা করে উদ্বোধনের পরে দু’বছর অবহেলায় পড়ে ছিল বালিগঞ্জের ‘ট্রাম ওয়ার্ল্ড’। মাসকয়েক আগে সরকারের উৎসাহে এবং বেসরকারি বিনিয়োগে ঝাঁ-চকচকে কাফে চালু হয়েছে বালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোয়। সম্প্রতি রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ওই কাফের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেছেন। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে হরেক রকম খাবার। রয়েছে গাছের ছায়ায় বসার ব্যবস্থা। সকাল ৮টায় খুলে যায় সেই কাফে। ভিড় থাকে রাত পর্যন্ত। যদিও ডিপোয় সাজিয়ে রাখা ট্রাম এখনও সে ভাবে তুলে ধরা যায়নি দর্শকদের কাছে। ‘ট্রাম ওয়ার্ল্ড’ কাফের এ হেন জনপ্রিয়তার বিপরীতেই অবশ্য রয়েছে ধর্মতলায় ট্রামের কামরায় গড়ে ওঠা ‘স্মরণিকা’ সংগ্রহশালা এবং সংলগ্ন বাতানুকূল কাফেটি। সরকারি অবহেলায় আকর্ষণ হারাচ্ছে সেগুলি।

দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে ওই কাফে। ২০ টাকার টিকিট কেটে ৪৫ মিনিট বসে থাকা যায়। ঘুরে দেখা যায় লাগোয়া সংগ্রহশালা। বছর দশেক আগে চালু হওয়া ওই সংগ্রহশালায় বিভিন্ন স্মারকের মাধ্যমে তুলে ধরাহয়েছে কলকাতার ট্রামের ইতিহাস। ট্রামের বিভিন্ন মডেল ছাড়াও পুরনো টিকিট, ট্রামকর্মীদের ব্যাজ, টিকিট পাঞ্চিং মেশিন-সহ বিভিন্ন সামগ্রী ঠাঁই পেয়েছে ওই সংগ্রহশালায়। কিন্তু, গত কয়েক মাসে ওই সংগ্রহশালার হাল খারাপ হয়েছে। সরকারি মেলায় পরিবহণ দফতরের স্টল সাজানোর জন্য নিয়ে যাওয়ার পর থেকে উধাও ট্রামের বিভিন্ন সুদৃশ্য মডেল। এখন গেলে আর দেখা যায় না ঘোড়ায় টানা ট্রাম বা প্রথম এসি ট্রামের মডেল। ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে ‘বলাকা’ এবং বাষ্পচালিত ট্রামের মডেল। সংগ্রহশালার দেওয়ালের প্যানেলে লাগানো আলো জ্বলে না। বিভিন্ন দ্রষ্টব্য চোখে পড়ে না।

ট্রাম গুমটির যে উদ্যানে ‘স্মরণিকা’ গড়ে উঠেছে, সেটির কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। ফলে, অতীতে প্রচুর সংখ্যক স্কুল ও কলেজের পড়ুয়া এবং সাধারণ দর্শক ওই সংগ্রহশালা এবং কাফেতে এলেও এখন সেই আগ্রহ তলানিতে ঠেকেছে। কাফের রক্ষণাবেক্ষণে সরকারি সাহায্য মেলে না বলেই অভিযোগ। বাতানুকূল যন্ত্র কোনও মতে চললেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটিরও হাল খারাপ। কাফের সুদৃশ্য আলোগুলি বিকল হয়ে যাওয়ায় এখন এলইডি বাল্ব দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এ নিয়ে সরকারি দফতরে দরবার করলেও লাভ হয় না বলে অভিযোগ।

অতীতে প্রায় প্রতিদিনই ওই কাফেতে আসতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া পর্ণা রায়। তিনি ব‌ললেন, ‘‘দু’বছর আগেও এই কাফের অবস্থা এতটা খারাপ ছিল না। দিনে দেড়শো থেকে দুশো মানুষ আসতেন বলে শুনেছি। এখন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হাল খারাপ।’’ মেঘমিত্র বসাক নামে আর এক পড়ুয়া বললেন, ‘‘অযত্নে সংগ্রহশালাটি নষ্ট হচ্ছে। এই সংগ্রহশালা ও কাফের সংস্কার করে উন্নত পরিষেবা দিলে অনেকেই আসবেন।’’

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবেই সংস্কারের কাজ ধাক্কা খাচ্ছে। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওখানে কিছু অসুবিধা রয়েছে। আরও কী কী সমস্যা আছে, তা খতিয়ে দেখে শোধরানোর চেষ্টা করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Tram Kolkata Cafe museum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE