রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ধর্মশালায় রমরমিয়ে ব্যবসায়িক কাজকর্ম চলছিল। এমন অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রবিবার গভীর রাতে ৬৫ এ, পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের চারতলার একটি ধর্মশালায় আগুন লাগে। কাপড়ের গুদাম হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছিল ঘরটি। আগুন ও ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান দুই মাঝবয়সি ব্যক্তি। খবর পেয়ে সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মেয়র। গিয়ে তিনি জানতে পারেন, কলকাতা পুরসভার খাতায় এই ভবনটি এখনও বাণিজ্যিক ভবন হিসাবে নথিভুক্তই হয়নি। সেটি একটি ধর্মশালা হিসাবে দেখানো হয়েছে। ধর্মশালাকে কী ভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র।
আরও পড়ুন:
ফিরহাদ আরও জানতে পারেন, ওই চারতলা বাড়িটির কোথাও কোনও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের ওই ভবনের একতলায় মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরের সূত্রেই বাড়িটিকে ধর্মশালা হিসাবে দেখানো হয়েছে। বাকি উপরের তলগুলিতে রয়েছে একাধিক দোকান। বিষয়টি জানার পরেই বিল্ডিং বিভাগের ডিজিকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন মেয়র। সূত্রে খবর, ওই বাড়িটির যেখানে যেখানে বেআইনি নির্মাণ রয়েছে, তা ভাঙতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি, বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ওই ভবনে যেখানে যেখানে শাটার লাগানো হয়েছে বা অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, সেগুলিও ভাঙতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পুরসভা, দমকল এবং পুলিশের তরফে তদন্ত করা হচ্ছে। একটি ধর্মশালায় এতগুলি শাটার লাগিয়ে কী ভাবে বাণিজ্যিক কাজকর্ম চলছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। কোথাও অবৈধ নির্মাণ হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
২০২৪ সালের মার্চ মাসে মেয়রের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দরে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় চাপে পড়েছিল কলকাতা পুরসভা। তার পর থেকেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে একাধিক পদক্ষেপ করেছে কলকাতা পুরসভা। এ বার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ধর্মীয় বা বাসস্থান হিসেবে দেখিয়ে কোথায় কোথায় তা বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে চান পুরসভার শীর্ষ আধিকারিকেরা।