দু’সপ্তাহ পরেই ছিল তিন বছরের বিবাহবার্ষিকী। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা আর হল না। তার আগেই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা চোখের সামনে কেড়ে নিল স্ত্রীকে। হাসপাতালে ভর্তি স্বামীও।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে ভিআইপি রোড ও নিউ টাউন রোডের মোড়ে। মৃতার নাম মৌমিতা ঘোষ পাল (২৯)। তাঁর স্বামী হিরণ্ময় পাল আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
পথ-নিরাপত্তার পরিকাঠামো উন্নত করেছে পুলিশ। লাগাতার চালকদের সচেতন করার কাজও চলছে। ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধেও পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও ভিআইপি রোডের ওই এলাকায় বিরাম নেই দুর্ঘটনার। কিছুতেই হুঁশ ফিরছে না চালকদের একাংশের। ফের তার খেসারত দিলেন পাল দম্পতি।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিমানবন্দরের আড়াই নম্বর গেটের কাছে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন হিরণ্ময় ও মৌমিতা। আদতে তাঁদের বাড়ি বর্ধমানে। কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশনে (এনএসএসও) জুনিয়র স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসার
পদে কাজ করতেন মৌমিতা। তাঁর অফিস ছিল সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। হিরণ্ময় কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর কর্মী।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মাত্র ছ’মাস আগে মোটরবাইক কিনেছিলেন হিরণ্ময়। তাতে করে প্রতিদিন মৌমিতাকে অফিসে পৌঁছে দিতেন। এ দিনও যাচ্ছিলেন। দু’জনেরই হেলমেট পরা ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ভিআইপি রোডে নিউ টাউনমুখী রাস্তায় পোদ্দার বিহারের সামনে হিরণ্ময়ের বাইকের পিছনে ধাক্কা মারে বারাসত-বটানিক্যাল গার্ডেন রুটের একটি বাস। ধাক্কার চোটে বাইক থেকে বাসের প্রায় ধার ঘেঁষে পড়ে যান মৌমিতা। গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় বাসের পিছনের চাকা তাঁর মাথার উপর দিয়ে দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। বাইক নিয়ে ছিটকে পড়ে গুরুতর জখম হন হিরণ্ময়ও।
বাসটি পুলিশ আটক করলেও চালক পলাতক। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বাসচালক মোটরবাইককে পাশ কাটিয়ে এগোনোর চেষ্টা করতে গিয়ে সেটিতে ধাক্কা মারেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সদ্য কেনা মোটরবাইক চালানোর ক্ষেত্রে ততটা পারদর্শী ছিলেন না হিরণ্ময়। সে কারণেই ঘটে দুর্ঘটনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy