প্রতীকী ছবি।
এ যেন চন্দ্রবিন্দুর সেই গান। যেখানে শৌচালয়ে যেতে না-দেওয়ায়, খুদে পড়ুয়াটি দিদিমণিকে প্রশ্ন করেছিল, ‘বাথরুমটা কী তোর বাবার?’
প্রায় সেই রকমই ঘটনা এ বার বাস্তবে। অভিযোগ, শৌচালয়ে যেতে চাইলে, বাধা দেওয়া হয় তৃতীয় শ্রেণির এক খুদে ছাত্রীকে। কাঁদো কাঁদো মুখে পাশের বন্ধুকে সে বলেছিল, ‘ম্যামের যদি এত জোরে টয়লেট পেত, তা হলে কী হত?’ অভিযোগ, এই ‘অপরাধে’ ওই ছাত্রীকে মারধর করেন শিক্ষিকা। টেনে-হিঁচড়ে শৌচালয়ে নিয়ে যান। হাতে-পায়ে চোট লাগে মেয়েটির। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই দিদিমণির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মেয়েটির অভিভাবক। পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তত দিন ওই শিক্ষিকাকে ছুটিতে থাকার কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দশতলায় পড়ে দেহ, যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য সল্টলেকে
এয়ারপোর্ট থানার ২ নম্বর গেটের কাছে ‘ক্যালকাটা এয়ারপোর্ট ইংলিশ হাই স্কুলের’ প্রাথমিক বিভাগের ঘটনা। প্রহৃত ছাত্রীর অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, সোমবার সকালে স্কুলে ক্লাস চলাকালীন মেয়েটি শৌচালয়ে যেতে চায়। শিক্ষিকাকে সে কথা জানালে তিনি অনুমতি দেননি বলে অভিযোগ। কিন্তু পেটে ব্যথা শুরু হয় মেয়েটির। তখনই সে পাশের মেয়েটির কাছে ক্ষোভে কথাগুলি বলে।
বৃহস্পতিবার দুর্গানগরের বাদরা এলাকার বাড়িতে ওই ছাত্রী বলে, ‘‘এর পরেই দিদিমণি আমাকে মারে। ধাক্কা দেয়। আমি বেঞ্চের নীচে পড়ে যাই। আমাকে মাটি থেকে তুলে টানতে টানতে টয়লেটে নিয়ে যায়। বলে, যা ইচ্ছে কর।’’
তার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরে মেয়ে গুম হয়েছিল। তারপর সব খুলে বলে। দেখি, হাতে-পায়ে কালসিটে পড়ে গিয়েছে।’’ এর পর মেয়েটিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তনুশ্রীদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘কিন্তু তার পর থেকে স্কুলের নাম শুনলেই ও কেমন যেন করছে। আতঙ্ক কাটছে না।’’
মঙ্গলবার স্কুলে অভিযোগ জানায় মেয়েটির পরিবার। তাঁদের কথায়, স্কুলের অনেকেই ঘটনাটির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। ছাত্রীটির শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর দেন। তনুশ্রীদেবী এ দিন বলেন, ‘‘কিন্তু অনুতাপ তো দূরের কথা, ওই শিক্ষিকা মেয়ের একটা খোঁজও নেননি।’’
অভিযুক্ত শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রুমা পাল ঘটনাটিকে অনভিপ্রেত বলে জানিয়ে বলেছেন, পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে বিষয়টি আলোচনা হবে। তত দিন অবশ্য ছুটিতে রয়েছেন ওই অভিযুক্ত শিক্ষিকা।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি ছাত্রীর পরিবার। তনুশ্রীদেবী বলেন, ‘‘স্কুলের বিরুদ্ধে তো আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। শুনলাম, ওই দিদিমণিরও একটি মেয়ে আছে। সে জন্য ওঁর ক্ষতি হোক চাইনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ এ বার যেটা ঠিক বুঝবেন, ব্যবস্থা নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy