‘স্যান্ড-আর্ট’ তৈরিতে ব্যস্ত পরশুরাম মণ্ডল। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
পেশায় তিনি শিক্ষক। নেশায় তিনি শিল্পী।
তাঁর সৃজনশীলতা আর নান্দনিক চেতনার ছোঁয়ায় জড় পদার্থও প্রাণ পায়। চকের টুকরো, ফেলে দেওয়া কাঠ বা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বালি দিয়ে তৈরি মূর্তিতে ফুটে ওঠে তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। কখনও আবার পরিবার নিয়ে বেড়াতে গেলেও সমুদ্রের বালুকাবেলায় জীবন্ত হয়ে ওঠে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য বাঁচানোর আর্তি।
তিনি পরশুরাম মণ্ডল। মধ্য হাওড়ার নস্করপাড়ার বাসিন্দা। উলুবেড়িয়ার একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়া-আসায় প্রায় ছ’ঘণ্টা লাগলেও বাকি সময়টায় তিনি মেতে থাকেন সৃষ্টির আনন্দে। তিনি বলেন, ‘‘এটাই আমার নেশা। শিল্পকর্মের মধ্যে দিয়েই মানুষকে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে আর্জি জানাই। আমরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছি। কালীপুজোয় শব্দ তাণ্ডবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেও মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এই সব বিষয়ই আমি চকের টুকরো, কাঠ বা বালি দিয়ে তৈরি মূর্তি দিয়ে বোঝাতে চাই।’’
পরশুরামবাবু জানান, স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে পুরী বেড়াতে গিয়ে বালি দিয়ে পাঁচ দিনে পাঁচটি মূর্তি তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন কোনার্কের আর্ট কলেজের ছাত্রদের। তাঁর তৈরি ‘স্যান্ড-আর্ট’ দেখে ডাক এসেছিল কোনার্ক ফেস্টিভ্যাল থেকে। সেখানে গিয়েও ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছিলেন ওড়িশা সরকারের।
কাঠের চেন-তালা, গণেশের মূর্তি, ফেলে দেওয়া চকের টুকরো দিয়ে তৈরি কোলে সন্তান নিয়ে বধূ-সহ নানা কাজের জন্য পরশুরামবাবু রাজ্য হস্ত ও কুটীর শিল্প প্রতিযোগিতায় ২০০৬ ও ২০০৮ সালে পুরস্কৃত হয়েছেন। জেলা স্তরে পুরস্কার পেয়েছেন ছ’বার।
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সকলের মধ্যেই শিল্পবোধ থাকে। তাকে ফুটিয়ে তুলতে হয়। স্কুলে পড়াতে গিয়ে এই শিল্পবোধ ও সৃজনশীলতা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি।’’
১৪ বছর আগে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন পরশুরামবাবু। কয়েক মাস পরেই অবসর গ্রহণ করবেন। বিভিন্ন হস্তশিল্পের চর্চাতেই অবসরজীবন কাটাতে চান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy