বইমেলার কিছু মণিমানিক্য।—নিজস্ব চিত্র।
গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস..., বাংলা সাহিত্য তার সেরা সময় পেরিয়ে এসে ফের হামাগুড়ি দিচ্ছে নাকি নতুন করে জেগে উঠেছে, তা নিয়ে তর্কের টেবিলে তুফান না তুললেও, বাংলা ভাষায় যে প্রকাশক, সম্পাদক,লেখক, কবি, ঔপন্যাসিকরা আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন, তা বোধহয় সব থেকে ভাল টের পাওয়া যায় বইমেলাতেই।
এক জন চাষি যেমন লাভ-লোকসান-বাজারের হিসেব-নিকেশের বাইরে গিয়ে ঋতুচক্রের পরিবর্তনের সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে হাজির হন তাঁর শস্যক্ষেত্রে, বইমেলায় সাহিত্যকর্মীদের উপস্থিতি যেন অনেকটাই সেই রকমের।
নতুনের নির্মাণের পাশাপাশি পুরনোর পুনর্নির্মাণ, এই দুই-ই যেন স্বচ্ছন্দ তাঁদের বিরামহীন আবর্তন। আর তর্কাতীত ভাবে সেই মন্থনের সঙ্গে বেড়ে চলেছে বাংলা সাহিত্যের রত্নভাণ্ডার। নজরে এল কলকাতা বইমেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তেমনি কিছু মণিমানিক্য।
আরও পড়ুন: ফসল পোড়ানোর দূষণ রোধে সচেষ্ট পর্ষদ
এক পুনর্নির্মাণের ছবি সামনে আনল গুরুচন্ডালি প্রকাশনা। মেয়েরাই সংসারকে ধরে রাখবেন আর সংসার রসাতলে গেলে মেয়েরাই সমস্ত ভুলচুকের শাস্তি মাথা পেতে নেবেন, দেশে দুর্ভিক্ষ হলেও কোনও না কোনও ভাবে মেয়েরাই দায়ী, লক্ষীর পাঁচালির এই বয়ান পাল্টে হল নবীকরণ। দৈনন্দিন জীবনে সে ভাবে আর প্রাসঙ্গিক না থাকা এই পাঁচালিকে নবকলেবরে সামনে নিয়ে আসার পথে মূল কাঠামো অপরিবর্তিত রাখা হলেও বদলে দেওয়া হল গল্পের আঙ্গিক। আবাসন গীতে এখানে বলা হল,
" এসো মা লক্ষ্মী বসো মা লক্ষ্মী উড়ায়ে জয়ের পতাকাখানি
দুহাতে বিরতি শক্তি সাহস মিটু-র দুঃখ নাশিও জননী"
কলকাতা হোক বা শহরতলি, লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে বোধশব্দ পত্রিকা হাজির থাকে নিজস্ব স্টাইলেই। আর সেই স্টাইল আগাগোড়াই কবিতা ও তার নির্মাণের ওপর দাঁড়িয়েই তৈরি করেছে বোধশব্দ। এ বার বইমেলায় অবশ্য কবিতা নয়, তাদের চমক ছোটগল্প। রাণা রায়চৌধুরী, বরুণ চট্টোপাধ্যায়, তৃনাঙ্কুর বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈকত দে এবং মৈনাক পাল, এই পাঁচ ‘বেখাপ্পা’ লেখকের তিনটি করে গল্পের পাশাপাশি তাঁদের অতিরিক্ত চমক, কবি মৃদুল দাশগুপ্তের "পার্টি বলেছিল ও সাতটি গল্প"। গল্প লেখা নিয়ে কবি নিজেই বললেন, " হয়তো দুঃসাহসই। সেই সাহসের এই বই। আমি অন্যরকম লিখেছি।"
আরও পড়ুন: ইশারায় প্রতিশ্রুতি, শুরু হল দাম্পত্য
রাবণ প্রকাশনার বরাবরের বৈশিষ্ট্য, 'স্মতিকথা'। সেই বৈশিষ্ট্যই পরম যত্নে আঁকা হয়েছে অরুণ সেনের উভচর স্মৃতি 'কলকাতার বাঙাল' গ্রন্থে।
কোনও এক সময় পূর্ববঙ্গবাসী বা কোনও পূর্ববঙ্গবাসীর উত্তর পুরুষ হলেও কলকাতায় এসেছেন এবং থেকেছেন নানা কারণে, সেই কলকাতার বাঙালদের পথচলার স্মৃতি এই বই, কলকাতার গলি থেকে হাঁটতে শুরু করে যা পৌঁছে যায় গঙ্গা আর পদ্মার দুই চরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy