Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
দুই নিগমের ভোট

নিছক লড়া নয়, চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা

চ্যালেঞ্জ দু’জনের কাছেই। এক জনের কাউন্সিলর হিসেবে জায়গা ধরে রাখার লড়াই, অন্য জনের অস্তিত্ব বজায় রাখার পরীক্ষা। তাঁরা হলেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সল্টলেকের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন তৃণমূলের কৃষ্ণা চক্রবর্তী এবং অন্য দিকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বামপ্রার্থী সুভাষ জায়া রমলা চক্রবর্তী।

অবশেষে প্রচারে বারাসত লোকসভার তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। সোমবার তিনি সল্টলেকে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণা চক্রবর্তী (ডান দিকে), নীলাঞ্জনা মান্না ও জয়দেব নস্করের সমর্থনে প্রচার করেন। ছবি: শৌভিক দে।

অবশেষে প্রচারে বারাসত লোকসভার তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। সোমবার তিনি সল্টলেকে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণা চক্রবর্তী (ডান দিকে), নীলাঞ্জনা মান্না ও জয়দেব নস্করের সমর্থনে প্রচার করেন। ছবি: শৌভিক দে।

কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৫৩
Share: Save:

চ্যালেঞ্জ দু’জনের কাছেই। এক জনের কাউন্সিলর হিসেবে জায়গা ধরে রাখার লড়াই, অন্য জনের অস্তিত্ব বজায় রাখার পরীক্ষা।

তাঁরা হলেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সল্টলেকের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন তৃণমূলের কৃষ্ণা চক্রবর্তী এবং অন্য দিকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বামপ্রার্থী সুভাষ জায়া রমলা চক্রবর্তী।

দু’টি ওয়ার্ড মিলিয়ে নতুন হয়েছে ২৯ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে বাম কিংবা বিজেপি-র পাশাপাশি কৃষ্ণা চক্রবর্তীরই প্রাক্তন চিফ ইলেকশন এজেন্ট সুদীপ দে এ বার কংগ্রেসের প্রার্থী।

প্রচারের শুরু থেকে বিরোধীরা সারদা থেকে শুরু করে মেলা ও পুর-পরিষেবার প্রশ্নে বেশ কিছু অভিযোগও তুলেছেন প্রাক্তন চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, সল্টলেকে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সব মিলিয়ে ৫ বছর পরে ফের কাউন্সিলর নির্বাচনের মুখে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে কৃষ্ণার।

তবে তা চ্যালেঞ্জ হিসেবে মানতে নারাজ প্রাক্তন চেয়ারপার্সন। তাঁর সাফ জবাব, ‘‘আমাদের একটাই দল। তার কাণ্ডারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। নির্বাচন এলেই বিরোধীদের অপপ্রচার শুরু হয়। এই ভিত্তিহীন প্রচারের জবাব দেবে মানুষ।’’

পুর-পরিষেবার প্রশ্নে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘স্মার্ট সিটি হিসেবে সল্টলেকের নাম তালিকার ২ নম্বরে। এর পিছনে আছে গত ৫ বছরের উন্নয়নই। এটা বিরোধীদের জবাব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।’’

জয় নিয়ে তাই তিনি আশাবাদী। তাঁর সাফ কথা, ‘‘৫ বছর ধরে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছি। এ বারের ভোট চ্যালেঞ্জ কি না, তার জবাব মানুষই দেবে।’’

অন্য দিকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাম প্রার্থী প্রয়াত প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চকক্রবর্তীর পত্নী রমলা চক্রবর্তী। এক কালে যে সুভাষবাবু কার্যত মুকুট-হীন শাসক ছিলেন সল্টলেকে, তাঁরই ঐতিহ্য বহন করছেন এই প্রার্থী।

সুভাষকে ছাড়া ভোটের ময়দান অবশ্যই রমলার কাছে চ্যালেঞ্জ বলে মত বাসিন্দাদের। কেননা বামেরা এখন দলগত শক্তিতে অনেকটাই ক্ষয়িষ্ণু। এক কালে যাঁরা সঙ্গী ছিলেন, তাঁরা অনেকেই এখন প্রতিপক্ষ। ওই ওয়ার্ডে প্রয়াত ক্রীড়ামন্ত্রীর স্ত্রীর প্রতিপক্ষ আবার প্রয়াত ফুটবল খেলোয়াড় শৈলেন মান্নার কন্যা তৃণমূল প্রার্থী নীলাঞ্জনা মান্না। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও দু’পক্ষের ব্যক্তিগত সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। আবার নীলাঞ্জনার এই ভোট বৈতরণী পার করানোর দায়িত্ব যার কাঁধে, তিনি বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু। তাঁরও উত্থান ‘সুভাষ দা’র হাত ধরেই। তৃণমূল অবশ্য বলছে, সুভাষ আবেগ অতীত। কিন্তু তৃণমূলের পালে হাওয়া যতই থাকুক বাসিন্দাদের এখনও বক্তব্য, ‘সুভাষদার আবেগ অবশ্যই রয়েছে। ফলাফলেও তার প্রভাব থাকবে।’

তবু চ্যালেঞ্জ যে বড়, তা মানছেন বামপ্রার্থী নিজেও। ভোটারদের ভোট সুরক্ষিত রাখতে হবে। সেটাই তাঁর চ্যালেঞ্জ। তাঁর অভিযোগ, শাসক দল যে কায়দায় ভোট করতে চাইছে, তাতে ভোটারদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অথচ প্রশাসন, পুলিশ নির্বিকার।

যদিও এই অভিযোগের জবাবে বিগত পুরনির্বাচনে বামেদের সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরেছে তৃণমূল। আবার বামেরাও তুলেছে ২০১৩-এ তৃণমূলের সন্ত্রাসের কথা। সেই প্রসঙ্গে বিজেপি-র কটাক্ষ, ‘‘অস্ত্রও এক, সৈনিকও এক। মোড়কের পরিবর্তন হয়েছে মাত্র।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE