Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ঠেকে শিখে সংস্কারের কাজ শুরু হল দুই সেতুর

গৌরীবাড়ির দিক থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার রাস্তায় খালের উপরে অরবিন্দ সেতু তৈরি হয় ১৯৭৫ সালে। তার পর থেকে এই সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির সংখ্যা বেড়েই গিয়েছে।

মেরামতি: সারাই হচ্ছে অরবিন্দ সেতুর ভাঙা অংশ। —নিজস্ব চিত্র।

মেরামতি: সারাই হচ্ছে অরবিন্দ সেতুর ভাঙা অংশ। —নিজস্ব চিত্র।

সোমনাথ চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
Share: Save:

টনক নড়েছিল পোস্তায় বিবেকানন্দ উড়ালপুলের একটি অংশ ভেঙে পড়ার পরে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় আরও পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সেতুর স্বাস্থ্য কেমন, তা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা রাইট্‌সকে দায়িত্ব দিয়েছিল সেতুগুলির রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কেএমডিএ। তার পরেও যে সব সেতুর হাল ফেরেনি, তার প্রমাণ সম্প্রতি পাওয়া গিয়েছে বাঘা যতীন উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনায়। একই রকম অবস্থা উত্তর কলকাতার গৌরীবাড়ির কাছে অরবিন্দ সেতু এবং গড়িয়াহাটের কাছে বিজন সেতুর। শেষমেশ দেরিতে হলেও অরবিন্দ সেতু মেরামতির কাজ শুরু করল কেএমডিএ। হাত দেওয়া হয়েছে বিজন সেতুর কাজেও। এই দুই সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাইট্‌সকেই দায়িত্ব দিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ।

গৌরীবাড়ির দিক থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার রাস্তায় খালের উপরে অরবিন্দ সেতু তৈরি হয় ১৯৭৫ সালে। তার পর থেকে এই সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির সংখ্যা বেড়েই গিয়েছে। মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে সেতুর কিছু অংশ মেরামতি হলেও পুরো সেতুর কাজ হয়নি।

বাঘা যতীন উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ার পরে হইচই শুরু হওয়ায় কেএমডিএ নিজেরাই মেরামতির কাজে হাত দেয়। একই ভাবে বিজুন সেতুর একটি অংশ বসে গিয়েছিল। জোড়াতালি দিয়ে সেই জায়গাও মেরামত করা হয়েছে।

যে পাঁচটি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব রাইট্‌সকে দেওয়া হয়েছিল সেগুলি হল বাঘা যতীন, অম্বেডকর, চিংড়িহাটা, শিয়ালদহ এবং বঙ্কিম সেতু। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট চলতি বছরের মার্চ মাসে কেএমডিএ-র কাছে জমা পড়ে। কিন্তু সংস্থা কর্তৃপক্ষ সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, এত দিন তা জানা যায়নি।

কেএমডিএ-র এক কর্তা জানিয়েছেন, সম্প্রতি দফতরের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছেন সৌমিত্র মোহন। তার পরেই তিনি সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সেতু মেরামতির উপরে জোর দিতে বলেন। তারই অঙ্গ হিসেবে বিজন সেতু এবং অরবিন্দ সেতুর সংস্কারে হাত দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলির কাজও রাইট্‌সের কথা মতো শুরু হবে।

অরবিন্দ সেতুর নীচে গিয়ে দেখা যায়, নীচের দেওয়ালে ফেটে যাওয়া অংশ থেকে লোহা বেরিয়ে গিয়েছে। অনেক জায়গায় ভেঙে গিয়েছে কংক্রিট। খালের উপরে লোহার ভারা বেঁধে মিস্ত্রিরা ছেনি-হাতুড়ি দিয়ে কংক্রিটের অংশ ভাঙছেন।

এক শ্রমিক জানালেন, বেশ কিছু দিন হল কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে যেখানে লোহা বেরিয়ে গিয়েছে, সেখানে সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা আশুতোষ দাস বলেন, ‘‘সেতুর লোহায় মরচে পড়ে গিয়েছে। নিয়মিত মেরামতি না হলে এমনই হবে।’’ সেতুর নীচে মুদিখানার দোকান সুদীপ্ত পোলের। তাঁর কথায়, ‘‘নজরদারির চূড়ান্ত অভাব। বহু জায়গায় সেতুর প্লাস্টার খুলে লোহা বেরিয়ে গিয়েছে। নিয়মিত দেখভাল হলে এটা হত না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE