ঝলমলে: উদ্বোধনের আগে দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক। রবিবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
মন্দিরের সিংহদুয়ার পার করেই দেখা যাবে, সর্বধর্মের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শ্রীরামকৃষ্ণ স্বয়ং!
এ বার দক্ষিণেশ্বরে ১৬৪তম বর্ষের কালীপুজোয় স্কাইওয়াকের পাশাপাশি এটাই দর্শনার্থীদের বড় পাওনা হবে বলে মনে করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, স্কাইওয়াক থেকে নেমে সিংহদুয়ার পেরিয়ে ডানহাতে তাকালেই দেখা যাবে শ্রীরামকৃষ্ণকে। মন্দিরের অছি পরিষদের তহবিলে তৈরি নির্মীয়মাণ অতিথিশালার সামনের দেওয়ালে তৈরি করা হয়েছে ৪৫ ফুট উঁচু ও ৩৫ ফুট চওড়া শ্রীরামকৃষ্ণের মুরাল। কল্পতরুর দিন শ্রীরামকৃষ্ণ যেমন ভাবে সমাধিস্থ হয়েছিলেন, ঠিক তার অনুকরণেই সেরামিকের এই মুরাল তৈরি করা হয়েছে। দক্ষিণেশ্বরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কাইওয়াকের পাশাপাশি ওই মুরালটিও উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি সম্মতি দিয়েছেন।’’
তবে শুধু মুরালই নয়, এ বারের কালীপুজোয় দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বরে থাকছে চন্দননগরের বিশেষ আলোকসজ্জা। রাত সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে চার প্রহরের পুজো শেষ হবে ভোর ৪টেয়। মন্দির সূত্রের খবর, মুকুট, চিক, সাতনর মালা, সোনার মুন্ডমালা, কানবালা, কানপাশা, ফুল ঝুমকো, নোলক দেওয়া নথ, নুপূর, পাঁজেব, সোনার বাউটি, তাবিজ, বাজু-সহ অসংখ্য গয়নায় সাজানো হবে ভবতারিণীকে। কুশলবাবু জানান, কথামৃতে যেমন ভাবে ভাবতারিণীকে সাজানোর কথা উল্লেখ রয়েছে, ঠিক তেমনটাই করা হচ্ছে। পুজোয় ভবতারিণীকে পাঁচ রকম আনাজ ভাজা, পাঁচ রকমের মাছের পদ, ঘি-ভাত, পাঁচ রকমের মিষ্টি, পায়েস ভোগ দেওয়া হবে। কুশলবাবু জানান, গর্ভগৃহের ভিতরে যখন পুজো শুরু হবে, তখন থেকে মন্দির চত্বরে জড়ো হওয়া ভক্তেরা শুনতে পাবেন মন্ত্র। তবে সংস্কৃত ভাষার সেই মন্ত্র বাংলায় ভাষান্তর করে বাইরে পাঠ করবেন ভাষ্যকার। সন্ধ্যায় নাটমন্দিরে থাকছে সরোদ বাদ্য।
কালীপুজোকে ঘিরে প্রতি বছরের মতো এ বারও কাল, মঙ্গলবার ভোর থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজ্য পুলিশ ও বন্দর কর্তৃপক্ষ কড়া নজরদারি চালাবেন দক্ষিণেশ্বরে গঙ্গার প্রতিটি ঘাটে। বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে মন্দিরের ঠিক সামনের চাঁদনি ঘাটে। কারণ, পুজোয় বসার আগে ওই ঘাট থেকেই ঘটে জল ভরতে যাওয়া হয়। আর সেই দৃশ্য দেখতে উপস্থিত থাকেন কয়েক হাজার দর্শনার্থী। রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্মীরা নৌকো দিয়ে অর্ধচন্দ্রাকারে ঘিরে রাখবেন ওই ঘাটের সামনের অংশ। থাকবে সার্চলাইট ও ডুবুরি। এ ছাড়াও, গোটা মন্দির চত্বরে ওয়াচটাওয়ার, সাদা পোশাকের পুলিশ, সশস্ত্র পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স, বম্ব স্কোয়াড মজুত থাকছে। পুরো মন্দির চত্বর এবং বাইরের অংশেও সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চলবে। কুশলবাবু বলেন, ‘‘সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তো থাকবেই। কিন্তু মানুষের সহযোগিতা সবচেয়ে বড় বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy